Published : 08 Jul 2022, 05:28 PM
সুইস প্রসিকিউটরদের অভিযোগ ছিল, ২০১১ সালে প্লাতিনিকে বেআইনিভাবে ২০ লাখ ইউরো প্রদান করেছিলেন ব্লাটার। প্রাথমিকভাবে গত নভেম্বরে তাদেরকে অভিযুক্ত করে বিচার শুরুর আদেশ দেয় আদালত। পরে গত জুনে শুরু হয় বিচারকার্য।
দোষী সাব্যস্ত হলে তাদের জেল বা জরিমানা হতে পারতো। শুরু থেকে অবশ্য কোনোরকম দুর্নীতির অভিযোগ অস্বীকার করে আসছিলেন ১৯৯৮ সাল থেকে টানা ১৭ বছর ফিফা প্রধানের দায়িত্বে থাকা ব্লাটার ও ফুটবল মাঠের এক সময়ের মহাতারকা প্লাতিনি। সেটাই শেষ পর্যন্ত সত্যি হলো।
সুইজারল্যান্ডের দক্ষিণের শহর বেলিনজোনার ফেডারেল ক্রিমিনাল কোর্টের শুক্রবারের রায়ে ব্লাটার নির্দোষ প্রমাণিত হন। একই সঙ্গে কোনোরকম জালিয়াতির অভিযোগ থেকে খালাস পান ফ্রান্সের কিংবদন্তি ফুটবলার প্লাতিনি।
আদালতের বাইরে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে ব্লাটার বলেন, “সবসময়ই বলেছি, নিজের বিবেকের কাছে আমি পরিষ্কার।”
নিস্তার পাওয়ার পর উচ্ছ্বাসভরা কণ্ঠে প্লাতিনি বলেন, সকল দুর্নীতির অভিযোগ তাকে বিশ্ব ফুটবলে কিংবদন্তি থেকে ‘শয়তান’ বানিয়ে দিয়েছিল।
“সাত বছরের সব মিথ্যা ও কারসাজির পর অবশেষে ন্যায় বিচার মিলল। আমি আমার সব ভালোবাসার মানুষদের কাছে এই ভালোলাগা প্রকাশ করতে চাই।”
“এই বিচার প্রক্রিয়ায় সত্য উদঘাটন হয়েছে। আমি সবসময়ই বলে আসছি, আমার লড়াইটা ন্যায়ের জন্য। প্রথম ম্যাচটা আমি জিতলাম।”
ফিফায় দুর্নীতি নিয়ে তোলপাড়ের মধ্যে ২০১৫ সালের জুনে একরকম বাধ্য হয়ে সভাপতির পদ থেকে পদত্যাগের ঘোষণা দেন ব্লাটার। ওই বছরেরই সেপ্টেম্বরে তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করে ফিফার এথিক্স কমিটি। তদন্ত শেষে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় দুজনকেই ফুটবল সংক্রান্ত সব ধরনের কর্মকাণ্ড থেকে আট বছরের নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়। পরে তা কমিয়ে ছয় বছর করা হয়।
ব্লাটারের উত্তরসূরি হিসেবে ফ্রান্সের সাবেক অধিনায়ক ও কোচ প্লাতিনির ফিফা সভাপতি হওয়ার বিষয়টি তখন বেশ সম্ভাব্য মনে হচ্ছিল। তবে এরপরই তাকে ওই ২০ লাখ ইউরো দেওয়ার বিষয়টি প্রকাশ্য হলে তিনিও নিষিদ্ধ হন।
৬৭ বছর বয়সী প্লাতিনি ১৯৯৮ থেকে ২০০২ সাল পর্যন্ত ব্লাটারের পরামর্শক হিসেবে কাজ করেন। সেজন্য তার বাৎসরিক পারিশ্রমিক ছিল তিন লাখ সুইস ফ্রাঁ।
আর বাকি ১০ লাখ পরবর্তীতে প্লাতিনির প্রতি বছরের বেতন বাবদ নির্ধারিত হয়েছিল।
ওই একই সময়েই প্লাতিনি উয়েফার সভাপতি পদ হারান। তাকে ফিফা সভাপতি হওয়ার লড়াই থেকে সরিয়ে দেওয়ার জন্যই এসব কারসাজি করা হয়েছিল বলে মনে করেন তিনি।
উয়েফায় প্লাতিনির ওই সময়ের জেনারেল সেক্রেটারি জিয়ান্নি ইনফান্তিনো পরে ২০১৬ সালে নির্বাচনে জিতে ফিফার সভাপতির দায়িত্ব নেন। এখনও তিনিই আছেন ফুটবলের সর্বোচ্চ সংস্থার প্রধানের পদে।