Published : 07 Jul 2024, 07:23 PM
আচমকা মালিনায়তনে কেউ ঢুকে পড়লে সম্ভবত ভাবতেন ভুল জায়গায় চলে এলেন বুঝি! মিলনায়তনজুড়ে হাহাহিহি। যেন কোনো কমেডি শো! আদতে চলছিল ভেন্ট্রিলোকুইজম শো। আর এতে পদার্থবিজ্ঞান নিয়ে ভারী ভারী কথা বলছিল এক মহা বাঁদর!
আর এসব ঘটেছে রোববার বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে আয়োজিত এপেক্স অ্যাস্ট্রো-অলিম্পিয়াড-এর ময়মনসিংহ বিভাগের প্রাথমিক বাছাই পর্বের শেষে।
বাংলাদেশ অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের উদ্যোগে দেশব্যাপী ১৯তম আয়োজনের তৃতীয় পর্ব ছিল ঢাকার উত্তরে ‘শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শহর’ বলে পরিচিত ময়মনসিংহে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত বাছাইপর্বে বিভাগের বিভিন্ন স্কুল ও কলেজের শিক্ষার্থীরা অংশ নেন।
জাতীয় সংগীতের মাধ্যমে সকাল ১০টায় শুরু হওয়া বাছাই পরীক্ষায় অংশ নেন সিনিয়র ও জুনিয়র গ্রুপের ছাত্রছাত্রীরা।
পরীক্ষা শেষে বিভিন্ন ধরনের আয়োজন ছিল অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীদের জন্য। এরই অংশ হিসাবে ঢাকার ডিপিএস এসটিএস স্কুলের পদার্থবিজ্ঞান বিষয়ের শিক্ষক আরিফ আজগর ভেন্ট্রিলোকুইজম বা পাপেট শো দেখান।
এর পাশাপাশি বিভিন্ন জাদু দেখিয়ে প্রতিযোগীদের তাক লাগিয়ে দেন বাংলাদেশ রেলওয়ের অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও ময়মনসিংহের জনপ্রিয় জাদুকর হাবিবুর রহমান। পরে কাগজের মহাকাশযান তৈরির কর্মসূচিতে স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহন করেন উপস্থিত শিক্ষার্থীরা।
সবশেষে, সমাপনী ও পুরষ্কার বিতরনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রামীণ সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক কাজী শেখ ফরিদ। “বিজ্ঞান বিষয়ে দারুণ এ আয়োজন” করায় তিনি বাংলাদেশ অ্যাস্ট্রোনমি অ্যাসোসিয়েশনকে ধন্যবাদ জানান।
এরপরে নির্বাচিত প্রতিযোগীদের হাতে মেডেল ও সার্টিফিকেট তুলে দেন আয়োজকরা।
পরীক্ষায় অংশ নেওয়া ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে থেকে সিনিয়র গ্রুপে ২০ জনকে নির্বাচিত করা হয়। আয়োজকরা জানান, জুনিয়র গ্রুপে অনেক সম্ভাবনাময় ছাত্রছাত্রী থাকায় ময়মনসিংহ পর্বে ৪০ জনকে নির্বাচিত করেন তারা, যা এর আগে অন্য বাছাইপর্বে হয়নি।
সিনিয়র গ্রুপের বাছাই পর্বে নির্বাচিত হওয়া শিক্ষার্থী তাহসিন আহমেদ শুভ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “বিভিন্ন অলিম্পিয়াডে অংশ নিতে আমার ভালোলাগে। তবে, এখানে পুরষ্কার পাবো ভাবিনি। প্রস্তুতি নিতে গিয়ে নতুন অনেক কিছু শিখেছি। ভালো লাগছে।”
বিভিন্ন বিভাগ ও জেলার প্রাথমিক বাছাইপর্বে উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের নিয়ে ঢাকায় জাতীয় পর্ব অনুষ্ঠিত হবে ৩ অগাস্ট।
জাতীয় পর্বে সিনিয়র গ্রুপের ১৫ জন এবং জুনিয়র গ্রুপের ১৫ জনসহ ৩০ জনকে নিয়ে ২১ অগাস্ট থেকে ২৮ অগাস্ট পর্যন্ত আবাসিক ক্যাম্প ও চূড়ান্ত বাছাই পর্ব অনুষ্ঠিত হবে।
আবাসিক ক্যাম্প থেকে নির্বাচিত পাঁচজন শিক্ষার্থী, আসন্ন ২৮তম আন্তর্জাতিক অ্যাস্ট্রো-অলিম্পিয়াডে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করবে। এবারই প্রথমবার আন্তর্জাতিক অ্যাস্ট্রো-অলিম্পিয়াড বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে, যা এ বছরের নভেম্বর নাগাদ অনুষ্ঠিত হতে পারে বলে জানিয়েছেন আয়োজকরা।