Published : 24 Aug 2021, 05:32 PM
খবরটি প্রথম প্রকাশিত হয় ৯টু৫ম্যাক-এ। প্রতিবেদনে অ্যাপলের বরাত দিয়েই দাবি করা হয়, গত দুই বছর ধরে শিশু হয়রানিমূলক ছবির জন্য ব্যবহারকারীর আইক্লাউড মেইল স্ক্যান করছে প্রতিষ্ঠানটি। এদিকে, ব্যবহারকারীদেরকে গোটা বিষয়টি পরিষ্কার করে খুলে বলেনি মার্কিন এ প্রযুক্তি জায়ান্ট।
প্রযুক্তিবিষয়ক সাইট সিনেট বলছে, অ্যাপলের পুরোনো ওয়েবসাইটে এ ব্যাপারে উল্লেখ করা হয়েছিল। সেখানে লেখা ছিল, “ইলেকট্রনিক স্বাক্ষর” দেখার মাধ্যমে “শিশু হয়রানির খোঁজ পেতে এবং সে ব্যাপারে রিপোর্ট করতে অ্যাপল ছবি ম্যাচিং প্রযুক্তির সহায়তা নিয়ে থাকে।” তবে, সে সময় এ ব্যাপারে বিস্তারিত আর কোনো তথ্য উল্লেখ করেনি প্রতিষ্ঠানটি।
অ্যাপলের বরাত দিয়ে ৯টু৫ ম্যাক আরও জানিয়েছে, প্রতিষ্ঠানটি অন্যান্য ডেটাও “সীমিত” পরিসরে স্ক্যান করে। তবে, আইফোন ও আইপ্যাড ব্যাকআপ এর অন্তর্ভুক্ত নয়।
এ ব্যাপারে সিনেটের মন্তব্যের অনুরোধে সাড়া দেয়নি অ্যাপল।
অ্যাপল সবসময়ই গোপনতার পক্ষে কথা বলে এসেছে। ২০১৯ সালে লাস ভেগাসে অনুষ্ঠিত কনজিউমার ইলেকট্রনিক্স শো’তে এ নিয়ে প্রচারণাও চালিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। প্রচারণায় বড় এক বিলবোর্ডে আইফোনের ছবি দিয়ে প্রতিষ্ঠানটি লিখে রেখেছিল, “আপনার আইফোনে যা ঘটে, তা আপনার আইফোনেই থাকে।”
ফলে সাম্প্রতিক সময়ে অ্যাপল যখন নতুন স্ক্যানিং প্রযুক্তি আনার ঘোষণা দেয়, তখন নড়েচড়ে বসেছিলেন অনেকেই। অ্যাপলকে এক হাত নিতে দ্বিধা করেননি হোয়াটসঅ্যাপ প্রধান উইল ক্যাথকার্ট ও এপিক গেইমস প্রধান টিম সুইনি। “স্পাইওয়্যার” ও “সরকারি নজরদারি টুল” ইনস্টল করছে অ্যাপল এমন মন্তব্যও করেছিলেন তারা।
পরে অ্যাপলের সফটওয়্যার প্রকৌশল বিভাগের প্রধান ক্রেগ ফেডেরিঘি মুখে খোলেন ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের কাছে। জানান, মানুষ ভুল বুঝছে তাদের। “আপনি যদি অন্য কোনো ক্লাউড সেবার দিকে তাকান, তাহলে দেখবেন তারা ক্লাউডে থাকা প্রতিটি ছবি পৃথকভাবে দেখছে এবং বিশ্লেষণ করছে; আমরা এভাবে মানুষের ছবি না দেখেই এ ধরনের ছবি খুঁজে বের করতে চেয়েছি।”
অ্যাপল জানিয়েছিল, ছবি শনাক্তকরণ টুলটি পরিচিত শিশু যৌন হয়রানি উপাদান বা ‘চাইল্ড সেক্সুয়াল অ্যাবিউস ম্যাটিরিয়াল’ (সিএসএএম) শনাক্ত করতে পারবে। আইক্লাউড স্টোরেজে ছবি আপলোডের পর টুলটি সেখানে পরিচিত সিএসএএম উপাদান খুঁজবে।
‘ইউএস ন্যাশনাল সেন্টার ফর মিসিং অ্যান্ড এক্সপ্লয়েটেড চিলড্রেন’ (এনসিএমইসি) -এর এ ধরনের অবৈধ শিশু হয়রানিমূলক ছবির একটি ডেটাবেজ রয়েছে। ছবিগুলোকে ‘হ্যাশ’ বা ‘সংখ্যাসূচক কোড’ হিসেবে সংরক্ষণ করে তারা। এক কথায় বলা যায়, অবৈধ উপাদানগুলোর ডিজিটাল “আঙুলের ছাপ” রয়েছে এনসিএমইসি’র কাছে।
মানুষ সিএসএএম শেয়ার করছে কি না তা নিশ্চিত করতে ফেইসবুক, গুগল এবং মাইক্রোসফটের মতো ক্লাউড সেবাদাতারা বর্তমানে এ ধরনের ‘হ্যাশ’ বা ‘সংখ্যাসূচক কোড’ পরীক্ষা করে দেখে। অ্যাপলও ওই দলে যোগ দিতে চেয়েছিলো, কিন্তু কিছুটা ভিন্নভাবে। আইক্লাউডে আপলোড হওয়ার আগেই ব্যবহারকারীর আইফোন ও আইপ্যাডে কাজটি করতে চেয়েছিলো প্রতিষ্ঠানটি।
ফেডেরিঘি জানিয়েছিলেন, পর্নোগ্রাফি অনুসন্ধান বা কারো শিশু সন্তানের গোসলের ছবির মতো উপাদান খুঁজে দেখবে না আইফোন। তাদের সিস্টেমটি শুধু সুনির্দিষ্টভাবে পরিচিত শিশু যৌন হয়রানির ছবির “অবিকল আঙুলের ছাপ” মেলাতে সক্ষম।