Published : 26 Dec 2023, 07:21 PM
কর্তৃপক্ষের নির্দেশ পেয়ে নিজেদের অনলাইন স্টোর থেকে আর ‘অ্যাপল ওয়াচ সিরিজ ৯’ ও ‘আল্ট্রা ২’ তুলে নিয়েছে অ্যাপল। কোম্পানির খুচরা বিক্রির দোকানেও পাওয়া যাচ্ছে না এ দুটি মডেল।
কেন অ্যাপল ওয়াচ নিষিদ্ধ হলো?
মেডিকেল প্রযুক্তি বিষয়ক কোম্পানি ‘ম্যাসিমো’-এর আবেদনকে সমর্থন করে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ‘ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড কমিশন’ (আইটিসি) অ্যাপল ওয়াচে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে বলে প্রতিবেদনে লিখছে প্রযুক্তি বিষয়ক সাইট এনগ্যাজেট। কোম্পানিটি ২০২১ সালে আলোর সাহায্যে রক্তের অক্সিজেন পর্যবেক্ষণ সম্পর্কিত ফিচারে ৫টি পেটেন্ট লঙ্ঘনের অভিযোগ এনে অ্যাপলের বিরুদ্ধে মামলা করেছিল।
আইটিসি যুক্তরাষ্ট্রে অ্যাপল ওয়াচ বিক্রি বন্ধের নির্দেশ দিলে কোম্পানিটি তাদের ওয়েবসাইট থেকে মডেল দুটি ঘড়ি সরিয়ে ফেলেছে।
এ বছরের শুরুতে মামলার রায় অ্যাপলের বিরুদ্ধে যায়। গেল অক্টোবরে আইটিসি এ রায় বহাল রাখে। নিষিদ্ধ হওয়া দুটি মডেলেই রয়েছে ফিচারটি। তবে, এই ফিচার থাকা সত্ত্বেও পুরনো মডেলগুলো বিক্রি নিষেধাজ্ঞার আওতায় নেই। ‘ওয়াচ সিরিজ ৬’ থেকেই রক্ত চাপ পর্যবেক্ষণ ফিচারটি চালু করেছিল অ্যাপল।
অ্যাপল এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল করার পাশাপাশি নিষেধাজ্ঞার ওপর বিরতি চেয়ে আবেদন করলে কমিশনকে সেটি প্রত্যাখ্যান করেছে।
এর মানে হচ্ছে মার্কিন প্রেসিডেন্ট তার নির্বাহী ক্ষমতা প্রয়োগ করে ভিটো না দিলে নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হতে যাচ্ছে বলে প্রতিবেদনে লিখেছে এনগ্যাজেট। তবে, মার্কিন সংস্থা ‘ইউএস ট্রেড রিপ্রেসেন্টেটিভ’ আইটিসি’র এ সিদ্ধান্ত পর্যালোচনা করছে এবং নীতিগত কারণে তারা এ সিদ্ধান্ত আটকে দিতে পারে।
ম্যাসিমো মূলত ‘ট্রেড সিক্রেট’ চুরির দায়ে ২০২০ সালে অ্যাপলের বিরুদ্ধে মামলা করে। কোম্পানিটির দাবি অ্যাপল ম্যাসিমোর কর্মীদের নিয়োগ করে অ্যাপল ওয়াচের রক্তের অক্সিজেন পর্যবেক্ষণ সম্পর্কিত ফিচার তৈরিতে কোম্পানির পণ্য সম্পর্কে তাদের জ্ঞান ব্যবহার করছে। সে মামলা এখনো চলমান রয়েছে।
অ্যাপল কী করছে?
অ্যাপল আগেই জানিয়েছিল আইটিসি রায় বহাল রাখলে তারা সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে নিষেধাজ্ঞা পাওয়া ঘড়ির মডেলগুলো ২১ ডিসেম্বর তাদের ওয়েবসাইট থেকে সরিয়ে ফেলবে। পাশাপাশি, বিভিন্ন দোকান থেকে ২৪ ডিসেম্বর মডেলগুলো সরিয়ে ফেলার কথা ছিল অ্যাপলের।
“অ্যাপলের টিম অক্লান্ত পরিশ্রম করে এসব পণ্য ও পরিষেবা তৈরি করে থাকে যা ব্যবহারকারীদেরকে এ খাতের শীর্ষ সব স্বাস্থ্য, সুস্থতা ও সুরক্ষা ফিচার ব্যবহারের সুযোগ দেয়।” – এ মাসের শুরুতে বলে কোম্পানিটি।
“অ্যাপল এ অদেশের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করার পাশাপাশি বাজারে অ্যাপল ওয়াচের সরবারহ বজায় রাখতে বিভিন্ন আইনি ও প্রযুক্তিগত প্রক্রিয়া অনুসরণ করছে।”
আইফোন নির্মাতা কোম্পানিটি বলছে, যত দ্রুত সম্ভব ‘অ্যাপল ওয়াচ সিরিজ ৯’ ও ‘অ্যাপল ওয়াচ আল্ট্রা ২’ গ্রাহকদের কাছে ফিরিয়ে আনতে সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করবে তারা।
২০২২ সালে অ্যাপল নিজেই ম্যাসিমোর বিরুদ্ধে একটি পেটেন্ট লঙ্ঘনের মামলা দায়ের করে যেখানে অভিযোগ আনা হয় ম্যাসিমো একটি স্মার্ট ওয়াচ এনেছে যেখানে অ্যাপলের ঘড়ির বিভিন্ন ফিচারের নকল রয়েছে।
ম্যাসিমো’র সিইও জো কিয়ানি ব্লুমবার্গ কে বলেছেন তিনি তার প্রযুক্তি ব্যবহারের বিনিময়ে অ্যাপলের সঙ্গে আর্থিক চুক্তির জন্য প্রস্তুত হলেও অ্যাপলের দিক থেকে কোনো আলোচনার চেষ্টা দেখেননি।