Published : 25 Jun 2024, 03:21 PM
আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন থেকে বর্জ্য এসে বাড়ির ছাদে পড়েছে। সেই ক্ষতির কারণে নাসার বিরুদ্ধে মামলা করেছে ফ্লোরিডার এক পরিবার।
এ পরিবারের পক্ষে কাজ করা আইনি প্রতিষ্ঠান ‘ক্র্যানফিল সামনার’ বলেছে, নাসার বিরুদ্ধে এ ধরনের মামলা এটিই প্রথম এবং এ মামলাটি ভবিষ্যতে একই ধরনের দাবির জন্য ‘ভিত্তি তৈরি করবে’। কারণ, মহাকাশে ব্যবহৃত যন্ত্রপাতির ধ্বংসাবশেষ বর্তমানে ‘বাস্তবিক ও গুরুতর সমস্যা’ হয়ে উঠেছে।
এর আগে নাসা’র এক ব্যাটারি প্যাকেজের টুকরো দেশটির ফ্লোরিডা অঙ্গরাজ্যের আলেহান্দ্রো ওতেরোর বাড়ির ছাদ ও মেঝে ভেঙে পড়ে বলে নিশ্চিত করেছিল মহাকাশ গবেষণায় যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি সংস্থাটি।
সেই সময় ওতেরোর বাড়িতে পড়ে ছাদ ও মেঝেতে গর্ত তৈরি করে এই বর্জ্য। এ ঘটনার সময় ওতেরোর ছেলে দানিয়েল বাসায় থাকলেও তিনি আহত হননি।
আর এ ঘটনাটি বাড়ির লোকদের জীবনে যে চাপ ও প্রভাব ফেলেছে তার জন্য পরিবারটি ৮০ হাজার ডলার ক্ষতিপূরণ চায় বলে জানিয়েছেন ওতেরোর আইনজীবীরা।
ক্র্যানফিল সামনার বলেছে, তাদের মক্কেলরা ‘কেউ শারীরিকভাবে আঘাত না পাওয়ায় কৃতজ্ঞ’ তবে ‘যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল’ তাতে যে কেউ ‘গুরুতর’ অবস্থায় পড়তে পারতেন।
“এ বর্জ্যটি যদি অন্য কোনো দিকে কয়েক ফুট দূরে পড়ত, তাহলে গুরুতর আহত বা প্রাণহানির ঘটনা ঘটতে পারত,” বলেছে প্রতিষ্ঠানটি।
নাসা জানিয়েছে, ২০২১ সালের ৮ মার্চ গ্রাউন্ড কন্ট্রোলার বা স্থল নিয়ন্ত্রকরা আইএসএস-এর রোবোটিক আর্ম ব্যবহার করে মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়া ব্যাটারিতে পূর্ণ একটি প্যালেট মহাকাশে ছাড়ার পর ধ্বংসাবশেষটি পৃথিবীতে পড়ে।
“নাসা আশা করেছিল, ২০২৪ সালের ৮ মার্চ পৃথিবীর বায়ুমণ্ডল দিয়ে প্রবেশের সময় এটি পুরোপুরি পুড়ে যাবে,” বলেছে সংস্থাটি।
“তবে, শেষপর্যন্ত যে সেটি হয়নি ফ্লোরিডার নেপলসের বাড়িতে এ বর্জ্য পড়ার ঘটনাই তার প্রমাণ।”
নাসা জানিয়েছে, প্যালেটে ব্যাটারি লাগানোর জন্য ফ্লাইট সাপোর্ট টুলে ব্যবহৃত একটি ‘স্ট্যানচিয়ন’ থেকে এটি তৈরি করা হয়েছে।
স্টাঞ্চিয়নটি উচ্চ তাপসহ চরম পরিবেশে টিকে থাকার জন্য ‘সুপারঅ্যালয় ইনকোনেল’ দিয়ে তৈরি। এর ওজন প্রায় ৭২৫ গ্রাম, আর উচ্চতা ও ব্যাস যথাক্রমে প্রায় ১০ সেমি ও ৪ সেমি।
“সাম্প্রতিক বছরগুলোতে মহাকাশে বর্জ্য বৃদ্ধির কারণে সেখানে ধ্বংসাবশেষের বিষয়টি বাস্তব ও গুরুতর সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে,” বলেছেন ওটেরো পরিবারের আইনজীবী মিকা নগুয়েন ওয়ার্দি।
“যদি নাসা এ অবস্থান নেয় যে, ওতেরো’র দাবির পুরো অর্থ তাদের দেওয়া উচিত, তবে তা অন্যান্য সরকারি ও বেসরকারি উভয় শিল্পের কাছে একটি শক্তিশালী বার্তা দেবে যে, এ ধরনের ক্ষতির কারণে ক্ষতিগ্রস্থরা দোষ-গুণ নির্বিশেষে ক্ষতিপূরণ পাওয়া উচিত।”