Published : 12 May 2025, 09:23 PM
দক্ষিণ আফ্রিকার শ্বেতাঙ্গ শরণার্থী নিতে শুরু করেছে যুক্তরাষ্ট্র। শরণার্থীর মর্যাদা পাওয়া ৪৯ জন শ্বেতাঙ্গ দক্ষিণ আফ্রিকানদের প্রথম একটি দল যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়ার পথে রয়েছে।
বিবিসি জানায়, এই দলটি রোববার দক্ষিণ আফ্রিকার জোহানেসবার্গ থেকে ভাড়া করা ফ্লাইটে উঠেছে। ফ্লাইটটি সোমবার ওয়াশিংটন ডিসি-তে নামার কথা রয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রে পৌঁছার পর বিভিন্ন গন্তব্যে রওনা হওয়ার আগে এই আফ্রিকানরা একটি সংবাদ সম্মেলনে অংশ নেবেন বলে জানিয়েছেন বিষয়টি সম্পর্কে সংশ্লিষ্ট কয়েকজন।
এই শরণার্থীদের কেউ যাবেন ডেমোক্র্যাটিক-নেতৃত্বাধীন রাজ্য মিনেসোটায়, আবার কেউ যাবেন। শরণার্থীদের সাদরে বরণ করায় মিনেসোটার সুনাম আছে।
এই রাজ্য ছাড়াও শরণার্থীদের কেউ কেউ যাবেন রিপাবলিকান-নেতৃত্বাধীন আইডাহ এবং অ্যালাবামার মতো রাজ্যে।
যুক্তরাষ্ট্র এমন এক সময়ে দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে এই শ্বেতাঙ্গ শরণার্থী নিচ্ছে, যখন ট্রাম্প প্রশাসন মেক্সিকো, কলম্বিয়া, ভারতের মতো বিশ্বের বিভিন্ন দেশের 'অশ্বেতাঙ্গ' অভিবাসীদের বিতাড়ন করছে।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প গত ফেব্রুয়ারিতে দক্ষিণ আফ্রিকার ‘নির্যাতিত’ শ্বেতাঙ্গ নাগরিকদের যুক্তরাষ্ট্রে শরণার্থীর মর্যাদা দেওয়া ও পুনর্বাসনের প্রস্তাব দেন।
দেশটিতে ‘এক শ্রেণির মানুষের সঙ্গে খুব খারাপ আচরণ করা হচ্ছে, জমি দখল করে নেওয়া হচ্ছে’বলে অভিযোগ তুলে এবং এ ঘটনার তদন্ত না হওয়া পর্যন্ত দক্ষিণ আফ্রিকাকে সবরকম সাহায্য দেওয়া বন্ধেরও হুমকি দিয়েছিলেন ট্রাম্প।
ট্রাম্প সরাসরি শ্বেতাঙ্গ শব্দটি উচ্চারণ না করলেও নির্দিষ্ট এক শ্রেণির মানুষের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার এবং জমি দখলের কথা বলতে সংখ্যালঘু শ্বেতাঙ্গ নির্যাতনের দিকেই অঙ্গুলি নির্দেশ করেন।
ট্রাম্প প্রশাসনের অভিযোগ দক্ষিণ আফ্রিকা সরকার এমন একটি ভূমি বাজেয়াপ্তকরণ আইন করেছে, যার আওতায় ক্ষতিপূরণ ছাড়াই সংখ্যালঘু শ্বেতাঙ্গ আফ্রিকানদের কৃষিসম্পত্তি জব্দ করা যাবে।
তবে এই অভিযোগ নাকচ করে দিয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা সরকার। তারা বলছে, নতুন ভূমি আইন নিয়ে ট্রাম্প প্রশাসনের বর্ণনা ভুল।
দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট রামাফোসা বলছেন, তার দেশের নতুন আইনে সরকার জমি দখল করছে না; বরং এর মাধ্যমে ঐতিহাসিক ভুল শোধরানোর চেষ্টা করছে। শ্বেতাঙ্গরা দেশটিতে কোনও নির্যাতনের স্বীকার হচ্ছে না।
যুক্তরাষ্ট্রে শ্বেতাঙ্গ আফ্রিকানদের পুনর্বাসনের যে প্রস্তাব ট্রাম্প দিয়েছিলেন, সেটি শ্বেতাঙ্গ আফ্রিকানদের সবচেয়ে প্রভাবশালী দুটি সংগঠনও ওই সময় মানতে রাজি হয়নি।
আফ্রিকানদের যুক্তরাষ্ট্রে পুনর্বাসনের পশ্নে ‘আফ্রিফোরাম’ এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ক্যালি কারিয়েল বলেছিলেন, আফ্রিকানরা যুক্তরাষ্ট্রে শরণার্থী হলে তাদের সাংস্কৃতিক পরিচয় হারিয়ে যাবে। এ ঝুঁকি তারা নিতে চায় না।