Published : 06 Jul 2025, 01:12 PM
পেনসিলভানিয়ার বাসিন্দা টোনিয়া ফুচি ইন্ডিপেন্ডেন্স ডে-র ছুটিতে দাদির বাড়ি বেড়াতে এসেছিলেন; ‘বালতিভর্তি পানি পড়ার মতো’ প্রবল বৃষ্টির শব্দে শুক্রবার ভোরে ঘুম ভাঙে তার।
বৃষ্টির পাশাপাশি অন্য কিছুও শুনেছিলেন তিনি- জোরাল, চিরে যাওয়ার ভীতিকর শব্দ।
“এটা ভাষায় বর্ণনা করার অযোগ্য, ওই শব্দ, কত জোরে যে ছিল, পরে জানা গেল নদীর ধারের বিশাল সাইপ্রেস গাছ ভেঙে পড়েছে,” পরদিন বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক সাংবাদিককে এমনটাই বলেন ফুচি।
টেক্সাসের মধ্যাঞ্চলে ওই হড়কা বানে এখন পর্যন্ত ৪৩ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে, যার মধ্যে ১৫ জনই শিশু বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
বিভিন্ন ক্যাম্পের বাসিন্দা, ছুটি কাটাতে আসা লোকজন ও স্থানীয়দের মধ্যে যারা নিখোঁজ, তাদের সন্ধানে শনিবারও উদ্ধারকর্মীদের প্রাণান্ত চেষ্টা দেখা গেছে।
বন্যা তীব্র আঘাত হেনেছে প্রায় শতবর্ষ পুরনো মেয়েদের শিবির ‘ক্যাম্প মিস্টিকে’, এখান থেকেই ডজনের বেশি কিশোরী বন্যার পানিতে ভেসে গেছে। উদ্ধারকর্মীরা এ ‘ক্যাম্প মিস্টিক’ থেকে অনেকের মৃতদেহ উদ্ধার করেছেন, এখনও অনেকে নিখোঁজ।
উপচে পড়া গুয়াডালুপে নদীর তীরে কমফোর্টে থাকা ফুচি তার ফোনের ভিডিওতে দাদির বাড়ির রাস্তায় কাদামাখা পানির স্রোত এবং পার্কিং লটে থাকা দুটি আরভির (রিক্রিয়েশনাল ভেহিকেল বা ভ্রাম্যমাণ গাড়ি) চাকার পানিতে ডুবে থাকার দৃশ্য ধারণ করেছেন।
যাচাই করে তার ভিডিওর সত্যতা নিশ্চিত হয়েছে রয়টার্স।
“এখনও আতঙ্কে আমি,” বলেছেন ফুচি।
কাউকে জীবিত পাওয়া যাবে, এমন আশা খুব একটা নেই তার।
“অনেক শিশু নিখোঁজ, অনেক মানুষই নিখোঁজ। পরিবারগুলোর কথা ভেবে সবাই চাইছে তাদের পাওয়া যাক। কিন্তু এটার শেষ যে ভালো কিছু হতে যাচ্ছে না তা আপনি জানেন। এত তীব্র স্রোতে কারও বেঁচে থাকার উপায়ই নেই,” বলেন এ নারী।
ফুচি জানান, তিনি তার ফোনে আবহাওয়া বিভাগের বার্তা পেয়েছেন বন্যা আঘাত হানারও কয়েক ঘণ্টা পর।
যে কারণে শহরের বাসিন্দাদের একে অপরের ওপরই নির্ভর করতে হয়েছিল। উদ্ধারকর্মীরা পৌঁছানোর আগেই তারা ছুটে গিয়েছিল আশপাশের বাড়িগুলোতে, দেখার জন্য কার কী সাহায্য লাগবে।
“এমনটা আমি আগে কখনও দেখিনি। আপনি জানেন, এটা কতটা বেদনাদায়ক,” নদী কত দ্রুত শহরটিকে ডুবিয়ে দিয়েছিল, সে কথা মনে করে বলেন ফুচি।
“স্রোত কমছিল না, একটুও না। আর নদীর সঙ্গে ভেসে আসছিল ধ্বংসাবশেষ, আসবাবপত্র আর আরভি।”
আরও পড়ুন