Published : 27 May 2025, 06:59 PM
যুক্তরাষ্ট্র-সমর্থিত ‘গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশন’ (জিএইচএফ) জানিয়েছে, তারা গাজায় খাদ্য সহায়তা পৌঁছে দিতে শুরু করেছে। ট্রাকে করে খাদ্যসামগ্রী নির্ধারিত বিতরণ কেন্দ্রগুলোতে পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে।
যদিও সোমবার কেউই সেখানে সহায়তা পৌঁছানোর কোনও চিহ্ন দেখেননি বলে জানিয়েছিলেন ফিলিস্তিনিরা। ইসরায়েল অনুমোদন দিলেও জাতিসংঘ এই সহায়তা কার্যক্রম প্রত্যাখ্যান করেছে।
রোববার ত্রাণ গোষ্ঠীটির প্রধান নির্বাহী জেক উড পদত্যাগও করেছেন। তিনি জানান, মানবিক নীতিমালা—মানবতা, নিরপেক্ষতা, স্বচ্ছতা এবং স্বাধীনতা—রক্ষা করা তাদের পক্ষে সম্ভব নয়।
ইসরায়েলি হামলায় গাজা উপত্যকায় একটি স্কুলসহ একাধিক স্থানে বহু মানুষ নিহত হওয়ার মধ্যে চলছে এ ত্রাণ বিতরণ। জিএইচএফ তাদের বিবৃতিতে জানায়, সোমবার থেকে বিতরণ শুরু হয়েছে এবং মঙ্গলবার আরও ট্রাক পাঠানো হবে, প্রতিদিন সহায়তার পরিমাণ বাড়ানো হবে।
সোমবার হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশন জানায়, তাদের নতুন অন্তর্বর্তী প্রধান হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন জন অ্যাক্রি, যিনি দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও সামরিক-মানবিক সমন্বয়ের কাজে দুই দশকের অভিজ্ঞতা অর্জন করেছেন।
তবে জিএইচএফ-এর এই বিতরণ পরিকল্পনার কড়া সমালোচনা করেছে জাতিসংঘ। কর্মকর্তারা বলছেন, এই ত্রাণ তৎপরতা গাজার জনগণের প্রকৃত চাহিদা পূরণে ‘অপর্যাপ্ত’ এবং এতে সহায়তা নিরপেক্ষভাবে পৌঁছানো সম্ভব হবে না।
ত্রাণ গোষ্ঠীটির পরিকল্পনা অনুযায়ী, গাজার দক্ষিণে চারটি প্রধান বিতরণ কেন্দ্রে পরিবারগুলোকে ‘হামাস সংশ্লিষ্টতা’র জন্য স্ক্রিনিং করা হবে।
এর জন্য মুখাবয়ব শনাক্তকরণ বা বায়োমেট্রিক প্রযুক্তি ব্যবহারের কথাও বলা হয়েছে, যা নিয়ে উদ্বেগ জানিয়েছেন মানবাধিকারকর্মীরা। তাছাড়া, ফাউন্ডেশনটির ত্রাণ বিতরণ পদ্ধতির বিস্তারিত এখনও অস্পষ্ট।
ফাউন্ডেশনটির সঙ্গে সহযোগিতা করতে রাজি নয় এমন সংস্থাগুলো এ ব্যবস্থার বাইরে থেকে কীভাবে সহায়তা পাঠাবে, তাও পরিষ্কার নয়।
হামাস এই নতুন ব্যবস্থার তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেছে, “এটি বিশৃঙ্খলা তৈরি করবে, পরিকল্পিতভাবে ফিলিস্তিনিদের অনাহারে ঠেলে দেবে এবং যুদ্ধকালীন খাদ্যকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহারের পথ তৈরি করবে।”
অন্যদিকে ইসরায়েল বলছে, এই পদ্ধতি হামাসকে ত্রাণ সরবরাহ থেকে আলাদা রাখার জন্য। তারা অভিযোগ করেছে, হামাস খাদ্য লুট করে ও তা দিয়ে জনগণের ওপর কর্তৃত্ব ধরে রাখে—যা হামাস অস্বীকার করে বলেছে, তারা বরং অস্ত্রধারী লুটেরাদের হাত থেকে ত্রাণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে।
দীর্ঘ প্রায় তিন মাসের অবরোধের পর কিছু সহায়তা গাজায় প্রবেশের অনুমতি দিয়েছে ইসরায়েল। তবে শত শত ট্রাকে যে ত্রাণ প্রবেশ করেছে, তা প্রয়োজনের তুলনায় সামান্য।
ওয়াশিংটন বলছে, তারা যুদ্ধবিরতি ফিরিয়ে আনতে কাজ করছে। তবে ১৯ মাস পেরিয়ে যাওয়া এই যুদ্ধে সে প্রচেষ্টায় দৃশ্যমান অগ্রগতি নেই।