Published : 07 Oct 2023, 08:09 AM
প্রবল বৃষ্টিপাতের কারণে সিকিমের তুষার লেক লোনাক উপচে হড়কা বানে সৃষ্ট বন্যায় ভারতে এখন পর্যন্ত ১৯ জনের মৃত্যু হয়েছে, নিখোঁজ রয়েছেন ১০৩ জন।
তীব্র বৃষ্টিতে সৃষ্ট বন্যার চেয়ে হিমবাহ রয়েছে বা তুষারপাত হয় এমন লেক উপচে সৃষ্ট বন্যার ভয়াবহতা অনেক বেশি। বুধবার উত্তর সিকিমের সেটিই ঘটেছে।
রাত ১টার দিকে সিকিমের উত্তর-পশ্চিমের উঁচু অংশে অবস্থিত লোনাক লেকের পাড় উপচে পানির ঢল নামতে শুরু করে। তার আগে সিকিমের ওই অঞ্চলে প্রচণ্ড বৃষ্টিপাত হয়। এরপর জলস্রোত তিস্তাকে প্লাবিত করে ধ্বংসাত্মক পরিস্থিতি ডেকে আনে।
এনডিটিভি জানিয়েছে, লেকটি সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ১৭ হাজার ফুট উপরে অবস্থিত। স্যাটেলাইট চিত্রে দেখা গেছে, লোনাকের প্রায় ৬৫ শতাংশ পানি নিষ্কাশন হয়ে প্রবাহিত হয়েছে তিস্তা নদী দিয়ে। নিচু অংশ প্লাবিত করে এটি ভয়ানক পরিস্থিতি তৈরি করেছে।
সেই জলস্রোত সমুদ্র সমতল থেকে ৫ হাজার ফুট উপরে সিকিমের সবথেকে বড় জলবিদ্যুৎকেন্দ্র তিস্তা-থার্ড প্রকল্প পর্যন্ত পৌঁছায়। স্রোত আর ভেসে আসা ধ্বংসাবশেষ ধাক্কা দেয় বাঁধে। এরপর বাঁধের কিছু অংশ ভেঙে তলিয়ে যায় গোটা এলাকা। ভাটির অংশে দেখা দেয় মারাত্মক বন্যা।
ভারতের কেন্দ্রীয় পানি কমিশন বলছে, বাঁধ ভেঙে পানি আসার আগে তিস্তার পানি বিপৎসীমার নিচ দিয়েই প্রবাহিত হচ্ছিল। কিন্তু পরে ছয় ঘণ্টার ব্যবধানে তিস্তার পানি বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হতে শুরু করে। মঙ্গন, ডিকচু, সিংটাম ও রংপোসহ নদীর আশেপাশের নিচু এলাকায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া গেছে।
জলস্রোতে যেখানে ২৩ সেনা সদস্য নিখোঁজ হয়েছেন, সেই বারদাং শহরটিও তিস্তার তীরে অবস্থিত। তাদের একজনকে বুধবার উদ্ধার করা হয়। অন্যদের খোঁজে তল্লাশি চলছে।
বন্যায় ৩ হাজার পর্যটক আটকা পড়েছেন। ওই এলাকা থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে আড়াই হাজার মানুষকে। ৬ হাজার বাসিন্দাকে ত্রাণ শিবিরে পাঠানো হয়েছে।
জাতীয় সড়ক ১০ এর অংশ ভেসে যাওয়ায় গ্যাংটকের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। ১৪টির মত সেতু ভেসে গেছে। মঙ্গন জেলার সাংকালান ও টুংয়ে বন্যার কারণে ফাইবার ক্যাবল লাইন নষ্ট হয়ে গেছে। ফলে চুংথাং ও উত্তর সিকিমের বেশিরভাগ অংশে ব্যাহত হচ্ছে মোবাইল নেটওয়ার্ক ও ব্রডব্যান্ড সংযোগ।
জরুরি সহায়তা উপকরণ পাঠাতে কাজ করছে সেনাবাহিনী। রাজ্য সরকার সিংটাম, রংপো, ডিকচু এবং আদর্শগাঁওসহ বিভিন্ন এলাকায় ত্রাণ শিবির স্থাপন করেছে।
আরও পড়ুন-