Published : 29 Sep 2024, 01:50 PM
ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনিকে দেশটির ভেতরে এক সুরক্ষিত অবস্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে বলে রয়টার্সকে জানিয়েছেন কয়েকজন কর্মকর্তা। ইসরায়েল লেবাননের ইরান সমর্থিত গোষ্ঠী হিজবুল্লাহর প্রধান হাসান নাসরাল্লাহকে হত্যা করার একদিন পর এ পদক্ষেপ নেওয়া হয়।
রয়টার্স লিখেছে, মধ্যপ্রাচ্যে ইরানের সবচেয়ে সশস্ত্র ও সুসজ্জিত মিত্র হিজবুল্লাহর ওপর ইসরায়েলের ধারাবাহিক ধ্বংসাত্মক আক্রমণের পর ইরানের শীর্ষ সিদ্ধান্তগ্রহণকারীকে রক্ষার পদক্ষেপ তেহরানের কর্তৃপক্ষের শঙ্কিত অবস্থার আরেকটি প্রকাশ।
চলতি মাসেই রয়টার্স এক প্রতিবেদনে জানিয়েছিল, হিজবুল্লাহর সদস্যদের ব্যবহার করা কয়েক হাজার পেজার ও ওয়াকিটকি বিস্ফোরণের পর ইরানের অভিজাত রেভল্যুশনারি গার্ড কোর তাদের সব সদস্যদের যে কোনো ধরনের যোগাযোগ ডিভাইসের ব্যবহার বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে।
লেবানন ও হিজবুল্লাহ বলেছে, এসব পেজার ও ওয়াকিটকি বিস্ফোরণের পেছনে আছে ইসরায়েল। কিন্তু ইসরায়েল এসব হামলার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার বা অস্বীকার কোনোটাই করেনি।
তেহরান থেকে নির্দেশনা পাওয়া ইরানের দুইজন আঞ্চলিক কর্মকর্তা রয়টার্সকে জানান, খামেনিকে একটি সুরক্ষিত অবস্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
তারা আরও জানান, নাসরাল্লাহর হত্যাকাণ্ডের ঘটনার পর পরবর্তী পদক্ষেপ ঠিক করতে ইরান হিজবুল্লাহ ও তাদের অন্য আঞ্চলিক মিত্র গোষ্ঠীগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে।
এসব বিষয় অত্যন্ত স্পর্শকাতর হওয়ায় ওই কর্মকর্তারা তাদের পরিচয় প্রকাশ করতে রাজি হননি।
শনিবার ইরানের গণমাধ্যম জানিয়েছে, শুক্রবার বৈরুতে ইসরায়েলের যে বিমান হামলায় নাসরাল্লাহ নিহত হয়েছেন ওই একই হামলায় ইরানের রেভল্যুশনারি গার্ড কোরের ডেপুটি কমান্ডার আব্বাস নিলফোরৌশনও নিহত হয়েছেন।
গত বছরের অক্টোবের গাজা যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে বিভিন্ন দিকে ছড়িয়ে পড়া সহিংসতায় রেভল্যুশনারি গার্ডের আরও বেশ কয়েকজন কমান্ডার নিহত হয়েছেন।
নাসরাল্লাকে হত্যা করা হয়েছে, শনিবার ইসরায়েল এমন ঘোষণা দেওয়ার পর এক বিবৃতিতে খামেনি বলেছেন, “প্রতিরোধ শক্তিগুলিই এই অঞ্চলের ভাগ্য নির্ধারণ করবে, হিজবুল্লাহ থাকবে এর সামনের সারিতে।”
পৃথক আরেক বিবৃতিতে তিনি বলেছেন, “শহীদের রক্তের প্রতিশোধ নেওয়া হবে।”
নাসরাল্লাহর মৃত্যু ইরানের জন্য একটি বড় ধরনের ধাক্কা। নাসরাল্লাহ হিজবুল্লাহকে আরব বিশ্বে ইরানের ছায়া বাহিনীগুলোর মধ্যে অন্যতম শক্তিশালী হিসেবে গড়ে তুলতে সক্ষম হয়েছিলেন।
আঞ্চলিক এসব মিত্রদের নিয়ে গড়ে ওঠা ইরানের নেটওয়ার্ক ‘প্রতিরোধ অক্ষ’ হিসেবে পরিচিত। এই অক্ষে লেবাননের হিজবুল্লাহ থেকে শুরু করে ফিলিস্তিনের হামাস, ইরাকের ইরান সমর্থিত মিলিশিয়া বাহিনীগুলো ও ইয়েমেনের হুতিরা আছে।
আরও পড়ুন:
নাসরাল্লাহ হত্যার বদলা নেওয়ার অঙ্গীকার, ইসরায়েলকে মোকাবেলার ডাক
নাসরাল্লাহর হত্যাকাণ্ড: ইসরায়েলি অনুপ্রবেশ হিজবুল্লাহর গভীরে