Published : 31 May 2025, 09:23 PM
ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাসের মধ্যে যুদ্ধ শুরুর ১৯ মাস পর গাজা উপত্যকায় মানবিক পরিস্থিতি এখন সবচেয়ে ভয়াবহ অবস্থায় পৌঁছেছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ। বিশ্ব সংস্থাটি জানিয়েছে, সীমিত ত্রাণ বিতরণ ফের শুরু হওয়া সত্ত্বেও ফিলিস্তিনি ছিটমহলটিতে দুর্ভিক্ষের আশঙ্কা রয়েছে।
বাড়তে থাকা আন্তর্জাতিক চাপের মধ্যে ১২ দিন আগে গাজায় ১১ সপ্তাহ ধরে চলা অবরোধের অবসান ঘটায় ইসরায়েল। তারা জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে সীমিত পরিসরে ফের ত্রাণ কার্যক্রম শুরু অনুমোদন করে। তারপর গত সোমবার যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের সমর্থনে ত্রাণ বিতরণের জন্য যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংস্থা গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশন (জিএইচএফ) এর মাধ্যমে নতুন একটি বিতর্কিত উদ্যোগও চালু করা হয়।
শুক্রবার নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘের মুখপাত্র স্টিফেন দুজারিক সাংবাদিকদের বলেন, “যে কোনো ত্রাণ যাদের প্রয়োজন তাদের হাতে পৌঁছলে সেটা ভালো।”
কিন্তু এ পর্যন্ত গাজার মোট যে ত্রাণ বিতরণ করা হয়েছে তা ‘খুব সামান্য প্রভাব’ ফেলেছে বলে মন্তব্য করেছেন তিনি। তিনি বলেন, “যুদ্ধ শুরুর পর থেকে গাজার বিপর্যয়কর পরিস্থিতি এখন সবচেয়ে বাজে অবস্থায় আছে।”
জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক ত্রাণ সংস্থাগুলো জিএইচএফের সঙ্গে কাজ করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে। কারণ তারা বলছে, এই উদ্যোগ নিরপেক্ষ নয় এবং বিতরণ প্রক্রিয়াও এমনভাবে সাজানো হয়েছে যা ফিলিস্তিনিদের বাস্তুচ্যুত হতে বাধ্য করে।
ইসরায়েল চায় জাতিসংঘ যেন তাদের ত্রাণ কার্যক্রম জিএইচএফ-এর মাধ্যমে পরিচালনা করে। এই সংস্থাটি গাজায় ত্রাণ পৌঁছে দেয়া ও তা তথাকথিত নির্ধারিত নিরাপদ বিতরণকেন্দ্রে বেসামরিক দলগুলোর মাধ্যমে বিতরণের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের বেসরকারি নিরাপত্তা ও সরবরাহ কোম্পানিগুলোকে ব্যবহার করে।
ইসরায়েল বহুদিন ধরেই অভিযোগ করে আসছে, হামাস ত্রাণ চুরি করে; যদিও এই অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে হামাস।
জাতিসংঘ জানিয়েছে, গত ১২ দিনে জাতিসংঘ মাত্র ২০০টি ত্রাণবাহী ট্রাক গাজায় প্রবেশ করাতে পেরেছে, যার অন্যতম প্রধান বাধা নিরাপত্তাহীনতা ও ইসরায়েলি নিষেধাজ্ঞা।
জাতিসংঘে নিযুক্ত ইসরায়েলের রাষ্ট্রদূত ড্যানি ড্যানন গত সপ্তাহে জানিয়েছেন, ইসরায়েল ‘অদূর ভবিষ্যতের জন্য’ জাতিসংঘ এবং জিএইচএফ, উভয়ের মাধ্যমে ত্রাণ সরবরাহ অনুমোদন করবে।
শুক্রবার জিএইচএফ জানিয়েছে, তারা এ পর্যন্ত গাজার বাসিন্দাদের ২১ লাখ প্যাকেট খাবার দিতে সক্ষম হয়েছে।
তবে কতটুকু সহায়তা গাজার বাসিন্দাদের কাছে পৌঁছেছে তা পরিষ্কার নয়। জাতিসংঘ জানায়, কিছু ট্রাক ও বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির একটি গুদাম ক্ষুধার্ত মানুষ লুট করেছে।