Published : 12 Oct 2023, 12:15 PM
তের বছর আগে কাশ্মির নিয়ে ‘উসকানিমূলক’ বক্তব্য দেওয়ার অভিযোগে বুকারবিজয়ী ভারতীয় সাহিত্যিক অরুন্ধতী রায় ও কাশ্মির বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক শেখ শওকত হোসেনের বিরুদ্ধে মামলা চালানোর অনুমতি দিয়েছেন দিল্লির লেফটেন্যান্ট গভর্নর ভি কে সাক্সেনা।
২০১০ সালে দায়ের করা এ মামলায় ধর্ম, জাতি, জন্মস্থান, বাসস্থান, ভাষা ইত্যাদির ভিত্তিতে বিভিন্ন গোষ্ঠীর মধ্যে বিদ্বেষ ছড়ানো, সম্প্রীতির জন্য ক্ষতিকর কাজ করা, জাতীয় ঐক্যের জন্য ক্ষতিকর বক্তব্য দেওয়ার অভিযোগ করা হয়েছে।
দোষী সাব্যস্ত হলে এ মামলায় অরুন্ধতী রায়ের সাত বছরের কারাদণ্ড হতে পারে বলে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে।
সুশীল পণ্ডিত নামের এক নাগরিক অধিকারকর্মী এবং কাশ্মীরি পণ্ডিতদের সংগঠন ‘রুটস ইন কাশ্মীর’ দিল্লির ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টে এ মামলা দায়ের করেন। সেখানে অভিযোগ করা হয়, ওই বছর দিল্লিতে কমিটি ফর রিলিজ অব পলিটিক্যাল প্রিজনারস আয়োজিত ‘আজাদি: দ্য অনলি ওয়ে’ নামে এক কনফারেন্সে কাশ্মীরকে ভারত থেকে বিচ্ছিন্ন করার দাবি তোলা হয়। সেখানে অরুন্ধতী রায় ও শেখ শওকত হোসেনসহ অন্য আসামিরা ‘উসকানিমূলক’ বক্তব্য দেন।
‘কাশ্মির ভারতের অংশ নয়’– এমন মন্তব্যও অরুন্ধতী করেন বলে অভিযোগ করা হয় মামলায়।
ভারতীয় আইন অনুযায়ী, দণ্ডবিধির ১৫৩এ, ১৫৩বি ও ৫০৫ ধারায় মামলা বিচারের জন্য রাষ্ট্রের অনুমোদনের প্রয়োজন হয়। ১৩ বছর পর দিল্লির লেফটেন্যান্ট গভর্নর সেই অনুমতি দেওয়ায় মামলাটি বিচারে যাওয়ার পথ খুলল।
দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সাঈদ আবদুল রহমান গিলানি এবং কাশ্মীরের বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতা সাঈদ আলি শাহ গিলানিকেও এ মামলায় আসামি করা হয়েছিল। তারা দুজনেই পরে মারা যান।
এখন ভারতীয় দণ্ডবিধির তিনটি ধারায় অরুন্ধতী রায় ও শেখ শওকত হোসেনের বিরুদ্ধে মামলা পরিচালনা করার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে বেআইনি কার্যক্রমে সমর্থন, উৎসাহ বা উসকানি দেওয়ার অভিযোগ প্রমাণিত হলে সাত বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড হতে পারে।
ভারত সরকারের কাশ্মির নীতির বিরুদ্ধে সোচ্চার অরুন্ধতী রায় দেশটির নরেন্দ্র মোদী সরকারেরও একজন কট্টর সমালোচক হিসেবে পরিচিত।
১৯৯৭ সালে ‘দ্য গড অব স্মল থিংস’ উপন্যাসের জন্য বুকার পুরস্কার পান অরুন্ধতী। প্রথম ভারতীয় নারী লেখক হিসেবে এ পুরস্কারে ভূষিত হয়ে বিশ্বজুড়ে পরিচিতি পান তিনি। পরবর্তীতে তাকে অধিকার আন্দোলনে অত্যন্ত সক্রিয় ভূমিকায় দেখা যায়। ভারত ও বিদেশের বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে নিয়মিত লেখেন তিনি।