Published : 10 Jul 2025, 11:39 PM
অন্তর্বর্তী সরকারের ‘প্রশাসন যন্ত্রের’ কাছ থেকে ক্যাম্প উচ্ছেদ এবং বিদুৎ বিচ্ছিন্নের ‘হুমকির’ কারণে ‘আতঙ্কের’ মধ্যে থাকার কথা শিক্ষা উপদেষ্টা সি আর আবরারের কাছে তুলে ধরেন বাংলাদেশে অবস্থানরত উর্দুভাষীরা।
বৃহস্পতিবার দুপুরে সচিবালয়ে শিক্ষা উপদেষ্টার কার্যালয়ে উর্দুভাষীদের একটি প্রতিনিধি দল সাক্ষাৎ করে নিজেদের এমন আতঙ্কের কথা বলেন তারা।
তারা শিক্ষা উপদেষ্টাকে বিষয়টি উপদেষ্টা পরিষদের উত্থাপনের জোর দাবি জানান বলে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে।
রিফিউজি অ্যান্ড মাইগ্রেটরি মুভমেন্ট রিসার্চ ইউনিটের (রামরু) পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে অভিযোগ করা হয়, বর্তমান সরকারের ‘প্রশাসনযন্ত্র’ ক্যাম্প উচ্ছেদ এবং বিদুৎ বিচ্ছিন্নের ‘হুমকি দিচ্ছে’।
“যার দরুন ক্যাম্পবাসী আতঙ্কিত। বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের আমলে ঢাকার মিরপুরে একটি ক্যাম্প উচ্ছেদের উদ্যোগ গ্রহণ করলে ক্যাম্পবাসী আদালতে রিট আবেদন করলে আদালত উচ্ছেদ কার্যক্রম স্থগিতের নির্দেশ দেন।”
এতে বলা হয়, ৫৪ বছর ধরে ক্যাম্পগুলোতে উর্দুভাষী জনগোষ্ঠী অত্যন্ত ‘মানবেতর’ জীবনযাপন করে আসছে। স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে আন্তর্জাতিক কমিটি ফর রেড ক্রসের সঙ্গে সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের একটি চুক্তির মাধ্যমে এ জনগোষ্ঠীর ক্যাম্পে বসবাস এবং বিদুৎ ও পানি সরবরাহ নিশ্চিত করা হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সেই থেকে পরের সরকারগুলো তা অব্যাহত রয়েছে। মাঝে কোনো কোনো সরকারের আমলে ক্যাম্প উচ্ছেদ এবং বিদুৎ ও পানি সরবরাহ বিচ্ছিন্নের উদ্যোগ নেওয়া হলেও প্রশাসনিক বা নির্বাহী আদেশে এবং আদালতের হস্তক্ষেপে সে উদ্যোগ ‘কার্যকর হয়নি’।
ভারতীয় উপমহাদেশে বিভক্তির প্রেক্ষাপটে এসব উর্দুভাষীর পূর্বপুরুষরা ১৯৪৭ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশ, বিহার ও পশ্চিমবঙ্গ থেকে স্থায়ীভাবে বসবাসের জন্য ‘ধর্মীয় আবাসভূমি’ পূর্ব পাকিস্তান আসেন।
১৯৭১ সালে দেশ স্বাধীনের পর সরকার এই জনগোষ্ঠীর নিরাপত্তার বিষয়টি বিবেচনা করে তাদের শহরের বিভিন্ন এলাকা থেকে একত্রিত করে মিরপুরের ১০, ১১ ও ১২ নম্বর সেকশন এবং পল্লবীর খালি জায়গায় রেডক্রসের সহায়তায় ক্যাম্প করে দেয়। ১৯৭২ সাল থেকে এসব ক্যাম্পে তারা বসবাস করে আসছেন। ঢাকার বাইরেও এমন কিছু ক্যাম্প আছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সারাদেশে ক্যাম্পগুলোর বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্নের জন্য আদালতের একটি রায়ের ‘দোহাই’ দিয়ে বিদ্যুৎ কোম্পানিগুলো বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্নের হুমকি দিচ্ছে এবং হয়রানি করছে।
ক্যাম্পবাসীদের ‘মর্যাদাপূর্ণ’ স্থায়ী পূনর্বাসনের আগে ক্যাম্প উচ্ছেদ না করতে এবং বিদুৎ ও পানি সরবরাহ নিশ্চিত করতে একটি প্রশাসনিক বা নির্বাহী আদেশের আবেদন করেছে প্রতিনিধি দলটি।
শিক্ষা উপদেষ্টা প্রতিনিধি দলের যুক্তিযুক্ত দাবি পূরণে সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন বলে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে।
মো. আশরাফুল হক বাবু সাগরের নেতৃত্বে প্রতিনিধি দলে ছিলেন এস. এম. রেজওয়ানা, মো. মোশাররফ হোসেন, মোহাম্মদ হাসান, মো. মিজানুল হক প্রিন্স, শারাফাত হোসেন ফাহিম, মো. ইয়াসিন এবং মো. সরফরাজ খান।