Published : 03 Jul 2025, 06:00 PM
ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভুর বরগুনার টিনের ঘর, ঢাকার উত্তরায় রাজউকের একটি ফ্ল্যাট ও আরও ৩৩ বিঘা জমি জব্দের আদেশ দিয়েছে আদালত।
একইসঙ্গে বরগুনা-১ আসনের সাবেক এই এমপির ১৬টি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধের আদেশ দেওয়া হয়েছে, এসব হিসাবে ৫ কোটি ৩৪ লাখ ১৭ হাজার টাকা রয়েছে।
এছাড়া একটি সঞ্চয়পত্র, দুটি স্থায়ী আমানত হিসাব (এফডিআর) ও দুটি গাড়ি অবরুদ্ধের আদেশ দেওয়া হয়েছে।
দুর্নীতি দমন কমিশন-দুদকের উপসহকারী পরিচালক খাইরুল হাসানের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার ঢাকা মহানগর জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ মো. জাকির হোসেন গালিব এ আদেশ দেন।
সংস্থার জনসংযোগ কর্মকর্তা আকতারুল ইসলাম এ তথ্য দিয়েছেন।
সম্পদ জব্দের আবেদন দুদক শম্ভুর টিনের ঘর, রাজউকের ফ্ল্যাট ও ঢাকার আফতাবনগরে ইস্টার্ন হাউজিং, বরগুনা সদর ও আমতলীতে মোট ৩৩ বিঘা জমির থাকার কথা বলা হয়েছে।
এসব সম্পদের দাম ৯৩ লাখ ৮৩ হাজার টাকা দেখানো হলেও প্রকৃত মূল্য ২ কোটি ৩৭ লাখ ৪০ হাজার টাকা বলে দুদক আবেদনে তুলে ধরেছে।
এতে বলা হয়, শম্ভু জ্ঞাত আয়ের উৎসের সাথে ‘অসঙ্গতিপূর্ণ’ ৫ কোটি ৪২ লাখ ২০ হাজার টাকার সম্পদ অর্জন ও দখলে রাখেন। তিনি নিজ নামে মোট ১৬টি ব্যাংক হিসাবে ৪১ কোটি ৯৩ লাখ টাকার ‘অস্বাভাবিক’ লেনদেন করেন। এজন্য তার বিরুদ্ধে মামলা করা হয়।
দুদক বলেছে, তদন্তকালে জানা যায়, আসামি তার অর্জিত স্থাবর সম্পদ অন্যত্র ‘হস্তান্তর বা বেহাত’ করার চেষ্টা করছেন। মামলার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে অবিলম্বে এসব সম্পদ জব্দ ও ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ করা প্রয়োজন।
গণআন্দোলনের মুখে ২০২৪ সালের ৫ অগাস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর প্রায় তিন মাসের মাথায় ১১ নভেম্বর ঢাকার উত্তরা থেকে গ্রেপ্তার করা হয় শম্ভুকে।
তার আগে ২৫ অগাস্ট তার বিরুদ্ধে অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেয় দুদক। আওয়ামী লীগের পাঁচবারের এই এমপি সবশেষ দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বরগুনা-১ আসনে (সদর-আমতলী-তালতলী) স্বতন্ত্র প্রার্থী গোলাম সরোয়ার টুকুর কাছে হেরে যান।
শম্ভুর বিরুদ্ধে দুদকে করা অভিযোগে বলা হয়েছে, বরগুনায় সড়ক ও জনপথ বিভাগ, পানি উন্নয়ন বোর্ড এবং এলজিইডিসহ ঠিকাদারি সংশ্লিষ্ট দপ্তরে টেন্ডারবাজি করে বিপুল অর্থ অর্জন করেছেন তিনি।
এ ছাড়া জেলার বিভিন্ন কাজে নজিরবিহীন অনিয়ম-দুর্নীতি আর অপরাজনীতির মাধ্যমে শত কোটি টাকার মালিক হয়েছেন বলেও অভিযোগ করা হয়।
২৯ জানুয়ারি শম্ভু ও তার স্ত্রী মাধবী দেবনাথের বিরুদ্ধে ‘অবৈধ’ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে আলাদা দুটি মামলা করে দুদক।
এছাড়া একই অভিযোগে শম্ভুর ছেলে ও পুত্রবধূ সুনাম দেবনাথ ও কাপসিয়া তালুকদার এবং দুই মেয়ে শুল্কা দেবনাথ, মনীষা মুনমুনের সম্পদের তথ্য দাখিলেরও নোটিশ দিয়েছে দুদক।
৬ মে মাধবী দেবনাথের গুলশানের এবং বাড্ডার দুইটি ফ্ল্যাট জব্দ এবং সাতটি ব্যাংক হিসাবে থাকা ৫১ লাখ ৭০ হাজার টাকা অবরুদ্ধের আদেশ দেয় আদালত।
তারপর ২১ মে আরেকটি আবেদনের পর মাধবীর পাঁচটি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধের আদেশ দেয় আদালত। এসব হিসাবে মোট ৭১ লাখ ৩৯ লাখ ৯৩৩ টাকা রয়েছে।
পুরনো খবর:
অবৈধ সম্পদ: স্ত্রীসহ সাবেক এমপি শম্ভুর নামে দুদকের মামলা