Published : 06 Oct 2024, 10:05 PM
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে কটাক্ষ করে ফেইসবুকে কবিতা পোস্ট করার অভিযোগে খোয়ানো চাকরি দুই বছর পর ফিরে পেয়েছেন মো. সাইদুর রহমান।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে জ্যেষ্ঠ সচিব হিসেবে বরখাস্ত হওয়া এই কর্মকর্তা কবিতাঙ্গনে পরিচিত ‘রহমান হেনরি’ নামে।
২০২২ সালের ১৩ জুন তাকে বরখাস্ত করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছিল।
একই পদে তাকে পুনর্বহাল করে গত বৃহস্পতিবার প্রজ্ঞাপন জারি করেছে সরকার।
এতে বলা হয়, “চাকরি হতে বরখাস্তের তারিখ হতে পুনর্বহালের পূর্ব পর্যন্ত সময়কে কর্মরত গণ্য করে তার বকেয়া বেতনাদি, পদোন্নতি এবং অন্যান্য সুযোগ সুবিধা বিধি মোতাবেক প্রাপ্য হবেন।”
কবি রহমান হেনরি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “রোববার আমি চাকরিতে যোগ দিয়েছি।”
কবিতা লেখার জন্য এভাবে চাকরিচ্যুত করাটা অন্যায় ছিল উল্লেখ করে তিনি বলেন, “আমাকে চাকরিতে বহাল করায় আমি ন্যায়বিচার পেয়েছি। আমি যে কবিতাটি ফেইসবুকে পোস্ট করেছিলাম, সেই কবিতাটি কয়েক বছর আগের লেখা ছিল। কবিতার কোথাও শেখ হাসিনার নামও ছিল না। কিন্তু তারা বুঝে নিয়েছিলেন যে আমি শেখ হাসিনাকে নিয়ে লিখেছি।"
কবিতায় কী লিখেছিলেন জানতে চাইলে রহমান হেনরী বলেন, “আমার কাছেও এখন কবিতাটা নাই। কবিতার লাইনটা এরকম ছিল, ‘আমি এক রাজপ্রাসাদের কাছে এসে দেখলাম এখানে ভয়ানক ডাইনিকে সম্রাজ্ঞী বলা হয়’।”
পঞ্চদশ বিসিএস প্রশাসন ক্যাডারে ১৯৯৫ সালে যোগ দেন সাইদুর রহমান। তিনি জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনে উপপরিচালক হিসেবে কাজ করেছেন।
তাকে বরখাস্ত করার প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছিল, “ত ৮ অক্টোবর ২০২০ তারিখ সন্ধ্যা ১৯:৪৬ মিনিটে তার ফেইসবুক আইডি 'Rahman Henry' থেকে 'রহমান হেনরী' ছদ্মনামে একটি কুরুচিপূর্ণ, অশোভন ও আপত্তিকর কবিতা প্রকাশ করেন, যা একদিকে একজন সরকারি কর্মচারীর পক্ষে অশোভন ও অকর্মকর্তাসুলভ আচরণ এবং অন্যদিকে, এতে প্রশাসনের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হওয়ায় সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮ এর বিধি ৩(খ) অনুযায়ী 'অসদাচরণ' এর অভিযোগে তাঁর বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা রুজু করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।”
রহমান হেনরি বলেন, “২৭ বছর চাকরি করার পর আমাকে কবিতা লেখার জন্য চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয় এবং আমার প্রাপ্য সবকিছু থেকে বঞ্চিত করা হয়। এই শাস্তির ফলে আমার পক্ষে আর অন্য কোথাও চাকরি করারও সুযোগ ছিল না।”
রহমান হেনরিকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করার পর কবিদের একটি অংশ প্রতিবাদও করেছিলেন।
গত ৫ অগাস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর কবি-লেখকদের অনেকে তাকে চাকরিতে পুনর্বহালের দাবি তোলেন।