Published : 08 Oct 2024, 06:37 PM
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন থেকে সরকার পতন পর্যন্ত আটটি হত্যার ঘটনায় নিউ মার্কেট ও যাত্রাবাড়ী থানার পৃথক মামলায় পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক-আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুনকে ৪৩ দিন হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি পেয়েছেন বাহিনীটির কর্মকর্তারা।
দুপুর ১২টার দিকে চৌধুরী মামুনকে ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করে তাকে রিমান্ডে পেতে আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তারা।
আদালতে তোলা হলে রিমান্ডের বিরোধিতা করে জামিন চেয়ে শুনানি করেন তার আইনজীবী। তবে তা নাকচ হয়ে যায়।
৪৩ দিন কি টানা জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে নাকি অন্য কোনো উপায় রয়েছে, জানতে চাইলে প্রসিকিউশনের এএসপি মো. নূরুল মোত্তাকিন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, বিভিন্ন মামলায় চৌধুরী মামুনের ৪৩ দিন রিমান্ড হলেও জিজ্ঞাসাবাদে সমস্যা হবে না।
তিনি বলেন, মামলার তদন্ত কর্মকর্তারা নিজেদের মধ্যে সমন্বয় করে আগে পরে জিজ্ঞাসাবাদ করবেন। এক্ষেত্রে কত দিনের মধ্যে জিজ্ঞাসাবাদ করতে হবে, তার কোনো নির্দেশনা দেননি আদালত। তাই একটানা ৪৩ দিন জিজ্ঞাসাবাদ করতে হবে- এমন কোনো বাধ্যবাধকতা নেই। তার শারীরিক অবস্থা বিবেচনায় তদন্তকারী কর্মকর্তারা এক মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের পর আরেক মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের পূর্বে তাকে বিশ্রামও দিতে পারেন।
চৌধুরী মামুনকে যাত্রাবাড়ী থানার সাতটি মামলায় ৩৮ দিন এবং নিউ মার্কেট থানার একটি মামলায় পাঁচ দিনের রিমান্ডে পাঠানো হয়েছে।
যাত্রাবাড়ীর সাত মামলার মধ্যে শিক্ষার্থী মো. সাকিব হাসান হত্যা মামলায় সাত দিন, ইমন হোসেন গাজী হত্যা মামলায় সাত দিন, মো. ইরফান ভুইয়া হত্যা মামলায় পাঁচ দিন, সৈয়দ মুস্তাসির রহমান হত্যা মামলায় পাঁচ দিন, কিশোর মাহমুদুল হাসান জয় হত্যা মামলায় পাঁচ দিন, ভ্যানচালক জাহাংগীর মৃধা হত্যা মামলায় পাঁচ দিন ও মো. রফিকুল ইসলাম হত্যা মামলায় চার দিনের জন্য রিমান্ডে দেওয়া হয়েছে পুলিশের সাবেক এই আইজিকে।
নিউ মার্কেট থানার মো. তাহির জামান হত্যা মামলায় পাঁচ দিনের রিমান্ড দেওয়া হয়েছে চৌধুরী মামুনকে।
৪ সেপ্টেম্বর পুলিশ কমিশনার মো. মাইনুল হাসান চৌধুরী মামুনকে গ্রেপ্তারের তথ্য দিয়েছিলেন।
ওই দিন ডিএমপির জনসংযোগ বিভাগের বার্তায় বলা হয়েছিল, সদ্য সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুনের বিরুদ্ধে মামলা হওয়ায় সেনা হেফাজতে থাকা অবস্থায় আত্মসমর্পণের ইচ্ছা প্রকাশ করেন তিনি। তাকে হেফাজতে নিয়েছে পুলিশ।
একই দিন সাবেক পুলিশপ্রধান শহীদুল হকও গ্রেপ্তার হন।
সরকার পতনের পর ৫ অগাস্ট বিকালে হেলিকপ্টারে পুলিশ সদর দপ্তর ছাড়েন আইজিপি চৌধুরী মামুনসহ কয়েকজন কর্মকর্তা। নতুন অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের আগেই তাকে চাকরি থেকে বাদ দেওয়া হয়।
চৌধুর মামুনের অবসরে যাওয়ার কথা ছিল দেড় বছর আগে। তারপরও তাকে চুক্তিতে আইজিপি করে রেখেছিলেন শেখ হাসিনা সরকার।
আইজিপি হওয়ার আগে তিনি র্যাবের মহাপরিচালক ছিলেন। সর্বশেষ গত ৫ জুলাই আরও এক বছরের জন্য তার চুক্তির মেয়াদ বাড়ানো হয়েছিল।
সরকার পতনের পর ৬ অগাস্ট রাতে তার চুক্তি বাতিল করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।