Published : 04 Apr 2025, 05:23 PM
প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে প্রথম বৈঠকে বাংলাদেশের সঙ্গে ‘বাস্তবতার নিরীখে ইতিবাচক ও গঠনমূলক সম্পর্ক এগিয়ে নেওয়ার কথা বলেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
শুক্রবার বিমসটেক সম্মেলনের ফাঁকে ওই বৈঠকে ‘পরিবেশ নষ্ট’ করে এমন বক্তব্য পরিহার করার আহ্বানও জানিয়েছেন তিনি। বৈঠকের পর এক ব্রিফিংয়ে মোদীর এই অবস্থানের কথা তুলে ধরেন ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রি।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের সম্পর্কের ক্ষেত্রে ‘জনগণ-কেন্দ্রিক দৃষ্টিভঙ্গিতে’ বিশ্বাস করার কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। দুদেশের দীর্ঘদিনের সহযোগিতা যে বাস্তবিক ফল বয়ে এনেছে, তাও তিনি বিশেষভাবে বলেছেন।
“এই মনোভাব থেকে, বাংলাদেশের সঙ্গে বাস্তবতার নিরীখে ইতিবাচক ও গঠনমূলক সম্পর্ক গড়ার বিষয়ে ভারতের আকাঙ্ক্ষার কথা আবারও অধ্যাপক ইউনূসের কাছে তুলে ধরেছেন তিনি (মোদী)। এক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী আরও আহ্বান জানিয়েছেন, পরিবেশ নষ্ট করে এমন কোনো বক্তব্য পরিহার করাই সর্বোত্তম।”
‘গণতান্ত্রিক, স্থিতিশীল, শান্তিপূর্ণ, প্রগতিশীল এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক’ বাংলাদেশের প্রতি ভারতের সমর্থনের কথাও বৈঠকে পুনর্ব্যক্ত করেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী।
বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা জনাব মুহাম্মদ ইউনূসের সাথে সাক্ষাৎ করেছি। ভারত বাংলাদেশের সাথে একটি গঠনমূলক ও জনকেন্দ্রিক সম্পর্কের প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
আমি বাংলাদেশে শান্তি, স্থিতিশীলতা, অন্তর্ভুক্তি ও গণতন্ত্রের প্রতি ভারতের সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেছি।… pic.twitter.com/RVbR5WQ9nu
— Narendra Modi (@narendramodi) April 4, 2025
বিক্রম মিশ্রি বলেন, “প্রধানমন্ত্রী (মোদী) আশা প্রকাশ করেছেন, তার বিশ্বাস, দুদেশের পারস্পরিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা চলমান থাকবে; এবং দুদেশের মধ্যে দীর্ঘ ও পারস্পরিকভাবে লাভজনক দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের স্বার্থে গঠনমূলক আলোচনার মাধ্যমে বিষয়গুলোর সমাধান হবে।”
বাংলাদেশে ‘সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতনের’ বিষয়ে উদ্বেগ জানিয়ে সেসব ‘নৃশংসতার’ পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্তের আহ্বান বৈঠকে জানিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী।
এ প্রসঙ্গে পররাষ্ট্র সচিব বলেন, “বাংলাদেশে হিন্দুসহ সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা ও সুরক্ষার বিষয়ে ভারতের উদ্বেগের কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। তিনি আশা প্রকাশ করেছেন, বাংলাদেশ সরকার তাদের সুরক্ষা নিশ্চিত করবে, একইসঙ্গে তাদের ওপর ঘটানো নৃশংসতার পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্ত করবে।”
সীমান্ত নিরাপত্তার প্রশ্নে বৈঠকে আলোচনা হওয়ার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, “সীমান্তের ক্ষেত্রে… সীমান্ত নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতার জন্য আইনের কঠোর প্রয়োগ এবং বৈধ সীমান্ত পারাপার–বিশেষ করে রাতের বেলায়–বন্ধ করা জরুরি।
পররাষ্ট্র সচিব বলেন, ভারত এবং বাংলাদেশের মধ্যে বেশ কিছু দ্বিপক্ষীয় আলোচনার প্ল্যাটফর্ম আছে। তারা নানাদিক পর্যালোচনার জন্য বসতে এবং সম্পর্ককে এগিয়ে নিতে যেতে পারে।
বিমসটেকের পরবর্তী সভাপতি নির্বাচিত হওয়ায় নরেন্দ্র মোদী বাংলাদেশকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। পাশাপাশি বাংলাদেশের নেতৃত্বে জোটের আঞ্চলিক সহযোগিতা আরও এগিয়ে যাবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেছেন।
ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বলেন, দুই নেতা অন্যান্য বিষয়েও মতবিনিময় করেছেন এবং আঞ্চলিক সমন্বয়কে এগিয়ে নিতে সংলাপ এবং সহযোগিতা ত্বরান্বিত করার বিষয়ে একমত পোষণ করেছেন।