Published : 02 Aug 2024, 01:03 AM
কোটা সংস্কার আন্দোলনের মধ্যে ঢাকার যাত্রাবাড়ীতে পুলিশ সদস্য গিয়াস উদ্দিন হত্যার ঘটনার মামলায় ডেমরা থানা ছাত্রদলের আহ্বায়ক মাসুদ রানা দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন।
সাত দিনের রিমান্ড চলাকালে বৃহস্পতিবার তাকে আদালতে হাজির করে পুলিশ।
আদালতে সেচ্ছায় দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দিতে সম্মত হন মাসুদ রানা। তারপর তার জবানবন্দি রেকর্ড করার আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের পরিদর্শক মোরাদুল ইসলাম।
মহানগর হাকিম মাহবুব আহম্মেদ তার খাসকামরায় মাসুদ রানার জবানবন্দি রেকর্ড করেন। জবানবন্দি রেকর্ড শেষে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেয় আদালত।
আদালতের পেশকার আতিকুর রহমান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে এ তথ্য দিয়েছেন।
২৭ জুলাই মাসুদ রানাকে মুখ্য মহানগর আদালতে হাজির করেছিল পুলিশ। এরপর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা তাকে ১০ দিনের রিমান্ড নিতে আবেদন করেছিলেন। শুনানি শেষে ঢাকার মহানগর হাকিম শান্তা আক্তার তার সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছিলেন।
মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, পুলিশের নায়েক গিয়াস উদ্দিন (৫৮) ঢাকার মাতুয়াইলে শিশু-মাতৃ স্বাস্থ্য ইউনস্টিটিউটের বিপরীত পাশে পরিবার নিয়ে ভাড়া বাসায় বসবাস করতেন। ১৯ জুলাই রাত আনুমানিক ৯টায় দায়িত্ব পালনের উদ্দেশ্যে ব্যক্তিগত মোটরসাইকেলে করে বাসা থেকে বের হন। রাত সাড়ে ৯টার দিকে যাত্রাবাড়ী থানাধীন রায়েরবাগ ফুটওভার ব্রিজের উত্তর পাশে আসামাত্রই আসামিরাসহ অজ্ঞাতনামা আরও অনেকে পুলিশ পরিচয় নিশ্চিত হয়ে গিয়াস উদ্দিনকে আটক করে।
এরপর তাকে ধারালো অস্ত্রের মাধ্যমে হত্যার উদ্দেশ্যে মাথায় গুরুতর আঘাতসহ রক্তাক্ত জখম করা বলে মামলায় বলা হয়েছে।
এতে আরও বলা হয়েছে, আঘাতে রাস্তায় পড়ে গেলে আসামিরা লোহার রড, লাঠি দিয়ে গিয়াস উদ্দিনের নাক, কান, মুখমণ্ডল, গলা, হাত, বুক, পেট, ডান পায়ের হাঁটুর নিচেসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে এলোপাতাড়িভাবে আঘাত করে। এতে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। এর পর তাকে রশি দিয়ে ফুটওভার ব্রিজের সঙ্গে বুলিয়ে রাখা হয়।
এ ঘটনায় যাত্রাবাড়ী থানায় গত ২৪ জুলাই নিহতের ভগ্নিপতি ফজল প্রধান মামলা দায়ের করেন।
জুলাইয়ের প্রথম সপ্তাহ থেকে শুরু হওয়া আন্দোলন ১৫ জুলাই সহিংস হয়ে ওঠে। ১৬ জুলাই থেকে ২১ জুলাই পর্যন্ত আন্দোলনের মধ্যে সহিংসতায় অনেক মানুষ হতাহত হয়েছে।
সংবাদমাধ্যমে আসছে দুই শতাধিক নিহতের খবর, তবে সরকার বলছে তাদের কাছে ১৪৭ জনের মৃত্যুর তথ্য রয়েছে। এর মধ্যে পুলিশ সদস্যও রয়েছেন।
সহিংস এই আন্দোলনে হতাহতের ঘটনায় জাতিসংঘসহ বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা, সংগঠন, জোট নিন্দা ও উদ্বেগ জানিয়ে এর নিরপেক্ষ, স্বচ্ছ ও সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করেছে।