Published : 28 Jul 2024, 04:47 PM
কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সংঘাত-সহিংসতায় মৃত্যু এবং রাষ্ট্রীয় সম্পদের ক্ষতির ঘটনায় তদন্তের দাবি জানিয়েছে সেক্টর কমান্ডারস ফোরাম- মুক্তিযুদ্ধ’৭১।
রোববার সংগঠনটির এক বিবৃতিতে শিক্ষার্থী ও চাকরি প্রত্যাশীদের এই আন্দোলনকে ‘স্বতঃস্ফূর্ত ও যুক্তিনির্ভর’ হিসেবে বর্ণনা করে বলা হয়, এই আন্দোলন ভবিষ্যতের জন্য ‘সতর্ক বার্তা’।
সেক্টর কমান্ডারস ফোরাম বলছে, “কোটা সংস্কার আন্দোলনে সরকারবিরোধী রাজনৈতিক গোষ্ঠী, বিশেষ করে দেশের স্বাধীনতাবিরোধী রাজাকার মনোবৃত্তির মানুষেরা যুক্ত হওয়ায় ছাত্র আন্দোলন ভয়াবহ সহিংসতার রূপ নেয়।”
এই সহিংসতায় প্রাণহানি এবং রাষ্ট্রীয় সম্পদের ক্ষতির কথা তুলে ধরে সংগঠনটি বলেছে, “সেক্টর কমান্ডারস ফোরাম মুক্তিযুদ্ধ’৭১ সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য তদন্তের মাধ্যমে প্রতিটি হত্যাকাণ্ড ও অবর্ণনীয় রাষ্ট্রীয় ক্ষয়ক্ষতির যোগ্য বিচার দাবি করে। কারণ ধ্বংসপ্রাপ্ত রাষ্ট্রীয় সম্পদ কোনো দল বা সরকারের নয়, সেগুলো রাষ্ট্রের বা বাংলাদেশের মানুষের সম্পদ।”
দেশের বীর মুক্তিযোদ্ধারা কোনো কোটা বা স্বার্থের জন্য নিজেদের জীবন উৎসর্গ করেননি বলেও বিবৃতিতে মন্তব্য করা হয়।
সেখানে বলা হয়, “ছাত্র আন্দোলনের নামে দেশের মুক্তিযুদ্ধ ও ধর্মীয় মৌলবাদী গোষ্ঠীর অনুপ্রবেশ পরিস্থিতিকে জটিল করে তুলেছে।”
শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে দ্রুত সুস্থ ও স্বাভাবিক শিক্ষার পরিবেশ ফিরিয়ে আনারও দাবি জানানো হয় বিবৃতিতে।
২০১৮ সালে সরকারি চাকরিতে কোটা বাতিল করে পরিপত্র হাই কোর্ট অবৈধ ঘোষণা করলে ছাত্ররা জুলাই মাসের শুরু থেকে ফের মাঠে। ধীরে ধীরে তাদের আন্দোলনের মাত্রা ও ব্যপ্তি বাড়তে থাকে।
১৫ জুলাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের সঙ্গে কোটা আন্দোলনকারীদের সংঘাতের পর পরিস্থিতি পাল্টে যায়। পরদিন ঢাকা, চট্টগ্রাম ও রংপুর থেকে ৬ জনের মৃত্যুর খবর আসে।
এর প্রতিক্রিয়ায় ১৮ জুলাই সারা দেশে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচি ঘোষণা হয়, সেদিন মাঠে নামে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ও স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীরাও। রাজধানীর বাড্ডা, উত্তরা ও ধানমন্ডি এলাকায় গুলিতে বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থীর মৃত্যুর খবর আসে। গোটা দেশে নানা গুজব ছড়িয়ে পড়ে, এর মধ্যে বিভিন্ন এলাকায় রাষ্ট্রীয় সম্পত্তিতে হামলা শুরু হয়। প্রাণহানির সংখ্যাও বাড়ে।
রামপুরায় বিটিভি ভবন, মেট্ররেলের দুটি স্টেশন, বনানীতে সেতু ভবন, মহাখালীতে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ভবন ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে ভাঙচুর করে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। বিদ্যুৎকেন্দ্রের সাব স্টেশন, মেট্রোরেলের দুটি স্টেশনেও ভাঙচুর হয়।
সেদিন থেকেই ঢাকার উত্তরার পথে পথে, ধানমন্ডির শংকর ও সোবহানবাগ এলাকা, মোহাম্মদপুর ও বসিলা, মিরপুর এলাকায় গোলাগুলির খবর আসে। এর পর জারি করা হয় কারফিউ ও দুই দফায় তিনদিনের সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়।
এই কয়েক দিনের সংঘাতে দুই শতাধিক মানুষের মৃত্যুর কথা বলা হচ্ছে সংবাদমাধ্যমে আসা খবরে। তবে সরকারের তরফে নিহতের সংখ্যা ১৪৭ বলে জানানো হয়েছে।