Published : 01 Jan 2025, 03:54 PM
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৪ বছর আগে মো. আবু বকর ছিদ্দিক হত্যার ঘটনায় দুই শিক্ষার্থীর বহিষ্কারাদেশ অবৈধ ঘোষণা করে হাই কোর্ট যে আদেশ দিয়েছিল, তার বিরুদ্ধে আপিল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তর থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে বলা হয়, ‘ন্যায্যতা ও ন্যায়বিচারের স্বার্থে এ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে।”
আধিপত্য বিস্তারের চেষ্টায় ২০১০ সালের ১ ফেব্রুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্যার এ এফ রহমান হলে ছাত্রলীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষ হয়। পরে সেখানে অভিযান চালায় পুলিশ।
ওই সময় গুরুতর আহত হন ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র আবু বকর ছিদ্দিক। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৩ ফেব্রুয়ারি তিনি মারা যান।
ওই ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ২০১০ সালের ২ মার্চ সিন্ডিকেট সভায় ১০ ছাত্রকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়।
তাদের দুজন বহিষ্কারাদেশের বিরুদ্ধে হাই কোর্টে রিট আবেদন করে। শুনানি করে হাই কোর্ট ২০১২ সালে বহিষ্কারাদেশ অবৈধ ঘোষণা করে রায় দেয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়, “কর্তৃপক্ষ ওই রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চআদালতে আপিল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ মনে করে, উচ্চ আদালতে আপিল করার মাধ্যমে মেধাবী ছাত্র আবু বকর সিদ্দিক হত্যার বিষয়ে ন্যায়বিচার পাওয়ার পথ সুগম হবে।"
আবু বকরের মৃত্যুর আট বছর পর ২০১৮ সালে ওই মামলার রায়ে দশ আসামির সবাইকে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়। তারা সবাই ছাত্রলীগের নেতাকর্মী ছিলেন।
ওই মামলার পুনঃতদন্ত চেয়ে ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরেও টাঙ্গাইলের মধুপুর বাসস্ট্যান্ডে মানববন্ধন করেন স্থানীয় বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
আবু বকর ছিদ্দিকের গ্রামের বাড়ি টাঙ্গাইলের মধুপুর উপজেলার গোলাবাড়ী গ্রামে। তৃতীয় সেমিস্টার পর্যন্ত তার সিজিপিএ ছিল ৪ এর মধ্যে ৩.৭৫, যা ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের ইতিহাসে সর্বোচ্চ।
চতুর্থ সেমিস্টারের ফল বের হওয়ার আগে তিনি খুন হন। ওই ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ ছাত্ররা বিক্ষোভে ফেটে পড়ে।
দিনমজুর রুস্তম আলীর সন্তান আবু বকর ছুটির সময় গ্রামে গিয়ে কৃষিকাজ করতেন, প্রতিবেশীদের বাচ্চাকে পড়িয়ে নিজের পড়ার খরচ জোগাতেন। তার মৃত্যুতে পুরো পরিবারের স্বপ্ন ভেঙে খান খান হয়ে যায়।