Published : 27 Jan 2025, 10:53 AM
ভারতীয় ক্রিকেটে প্রতিভার যেমন অভাব নেই, তেমনি সেখানে তারকার জন্মও হয় নিত্য। এখন যেমন তিলাক ভার্মার প্রতিভার আলোয় চোখ ধাঁধিয়ে গেছে অনেকের। তাকে অবশ্য স্রেফ তারকা নয়, মহাতারকা মনে করেন সাবেক ভারতীয় ব্যাটসম্যান আম্বাতি রায়ুডু। তার মতে, টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে আলোড়ন তোলা তরুণ এই ব্যাটসম্যান কার্যকর হতে পারেন সব সংস্করণেই।
বয়সভিত্তিক ক্রিকেটে ও আইপিএলে তিলাক নজর কেড়েছেন বেশ আগেই। এজন্যই এবার তাকে বেশ চড়া মূল্যে ধরে রেখেছে মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স। তবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সেরাটা দেখিয়েছেন তিনি গত কিছুদিনে।
গত নভেম্বরে দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে তৃতীয় টি-টোয়েন্টিতে ৫৬ বলে ১০৭ রাসের অপরাজিত ইনিংস খেলেন তিনি সাত ছক্কায়। পরের ম্যাচে উপহার দেন আরও বিধ্বংসী এক সেঞ্চুরি। এবার ১০ ছক্কায় করেন ৪৭ বলে অপরাজিত ১২০।
ওই সিরিজের পর ইংল্যান্ডের বিপক্ষে চলতি টি-টোয়েন্টি সিরিজর প্রথম ম্যাচে বড় কিছুর প্রয়োজন পড়েনি তারা। ১৬ বলে অপরাজিত ১৯ রান করে দলকে জিতিয়ে ফেরেন তিনি। এরপর শনিবার চেন্নাইয়ে প্রায় একার লড়াইয়ে অসাধারণ পরিণত ব্যাটিংয়ে ৫৫ বলে ৭২ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলে জয় এনে দেন ভারতকে।
এই পরিক্রমায় রেকর্ড বইয়ে জায়গা করে নেন ২২ বছর বয়সী ব্যাটসম্যান। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে আউট না হয়ে টানা সবচেয়ে বেশি রানের বিশ্বরেকর্ড এখন তারই। এই অপরাজেয় পথচলায় চার ইনিংসে ১৭৪ বল খেলে ২২ ছক্কা ও ২৪ চারে রান করেছেন তিনি ৩১৮।
টি-টোয়েন্টিতে দুটি আউটের মধ্যে সবচেয়ে বেশি রানের রেকর্ড আগে ছিল নিউ জিল্যান্ডের মার্ক চ্যাপম্যানের (২৭১)।
তিলাকের এমন ব্যাটিংয়ে মুগ্ধ গোটা ভারতীয় ক্রিকেট। স্টার স্পোর্টসে আম্বাতি রায়ুডু বললেন, টি-টোয়েন্টি ছাপিয়ে সব সংস্করণেই ভারতীয় ক্রিকেটের ভরসা হতে পারেন এই তরুণ।
“আমার মনে হয়, ভারত বিশাল এক মহাতারকা পেয়ে গেছে। সব সংস্করণের ব্যাটসম্যান হয়ে উঠতে পারে সে। শুধু একজন টি-টোয়েন্টি ব্যাটসম্যান সে নয়। এই ম্যাচে (ইংল্যান্ডের বিপক্ষে দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে) যে ধরনের পরিণত মানসিকতা সে দেখিয়েছে, অনেক বছর ধরে ভারতকে ম্যাচ জেতানোর সামর্থ্য তার আছে। সব সংস্করণেই তার ওপর আস্থা রাখা উচিত।”
সব সংস্করণেই দারুণ ব্যাটসম্যান হয়ে ওঠার ছাপ ঘরোয়া ক্রিকেটে রেখেছেন তিলাক। হায়দরাবাদের ব্যাটসম্যান ১৮টি প্রথম শ্রেণির ম্যাচ খেলে সেঞ্চুরি করেছেন ৫টি, ব্যাটিং গড় পঞ্চাশের বেশি। লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে ৩৫ ইনিংসে ৫ সেঞ্চুরি করেছেন। এই সংস্করণে স্ট্রাইক রেট প্রায় ৯৫, গড় ৪৮।
টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে তো ১০০ ম্যাচে ৪ সেঞ্চুরি ও ১৯ ফিফটিতে প্রায় সাড়ে তিন হাজার রান করেই ফেলেছেন। গড় ৪৬.০৯, স্ট্রাইক রেট ১৪৭.৬৩।
নভেম্বরে ওই দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে দুটি সেঞ্চুরির আগে ভারতীয় অধিনায়ক সুরিয়াকুমার ইয়াদাভের কাছে গিয়ে তিলাক বলেছিলেন, তিনি ব্যাট করতে চান তিন নম্বরে। সুরিয়াকুমার নিজে তিন থেকে সরে গিয়ে তিলাককে সুযোগ করে দেন।
তরুণ এই ব্যাটসম্যানের জ্বলে ওঠার পেছনে ভারতীয় অধিনায়কের কৃতিত্ব দেখেন রায়ুডু।
“তিলাক এখনই মহাতারকা, তাকে আমি দেখেছি হায়দরাবাদে গড়ে উঠতে। চারটি অসাধারণ ইনিংস সে গত কিছুদিনে খেলেছে। সুরিয়াকুমার অধিনায়ক হওয়ার পর থেকে যে বিশ্বাস সে জুগিয়েছে তিলাককে, তার ওপর যতটা আস্থা রেখেছে, সেসবের প্রতিদান দিচ্ছে সে।”