বাংলাদেশ-দক্ষিণ আফ্রিকা
Published : 30 Sep 2024, 06:56 PM
‘কন্ডিশন বিবেচনায় আমরা স্কোয়াড সাজিয়েছি…’, বাংলাদেশ সফরের দল ঘোষণার সময় বললেন দক্ষিণ আফ্রিকার কোচ শুক্রি কনরাড। উপমহাদেশে সবসময়ই দেখা যায় স্পিনারদের রাজত্ব। সেই চিন্তা থেকেই তিন বিশেষজ্ঞ স্পিনার নিয়ে বাংলাদেশে টেস্ট খেলতে আসছে প্রোটিয়ারা।
দুই টেস্টের সিরিজটির জন্য সোমবার ১৫ সদস্যের দল ঘোষণা করেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। স্কোয়াডে টেস্ট অভিষেকের অপেক্ষায় থাকা কেবল একজনই, ম্যাথু ব্রিটস্কি। ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে প্রথমবার টেস্ট দলে ডাক পেলেও খেলার সুযোগ পাননি ৫৩টি প্রথম শ্রেণির ম্যাচে ৮ সেঞ্চুরিতে ৩ হাজারের বেশি রান করা এই কিপার-ব্যাটসম্যান।
দেড় বছরের বেশি সময় পর ফের টেস্টে দক্ষিণ আফ্রিকার প্রতিনিধিত্ব করার হাতছানি সেনুরান মুথুসামির সামনে। এই সংস্করণে তিন ম্যাচের সবশেষটি তিনি খেলেছেন ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারি-মার্চে। প্রথম শ্রেণিতে ১০৫ ম্যাচে বাঁহাতি স্পিনে তার শিকার ২৪৭ উইকেট। ইনিংসে ১৪ বার নিয়েছেন পাঁচ উইকেট, ৪ উইকেট ১০বার। আর ম্যাচে ১০ শিকার ধরেছেন তিনবার।
ব্যাট হাতেও বেশ কার্যকর মুথুসামি। আট সেঞ্চুরিতে করেছেন চার হাজার ৮০৫ রান, ৩০.৪১ ব্যাটিং গড়ে। ফিফটি আছে ২৮টি।
গত অগাস্টে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে খেলা অফ স্পিনার ডেন পিট ধরে রেখেছেন জায়গা। ১১ টেস্টের ক্যারিয়ারে তার উইকেট ৩৬টি। পাঁচ উইকেট পেয়েছেন দুইবার, চারটি তিনবার।
এই দুইজনের সঙ্গে দলে আছেন বিশেষজ্ঞ স্পিনার কেশাভ মহারাজ। বাঁহাতি স্পিনে ৫২ টেস্টে ১৭১ শিকার ধরেছেন তিনি। ম্যাচে ১০ উইকেট নিয়েছেন একবার। ইনিংসে পাঁচ উইকেট ৯ বার।
বাংলাদেশ সফরে ভালো কিছু করার আশা দক্ষিণ আফ্রিকার টেস্ট দলের কোচ কনরাডের।
“আমাদের তিনজন দারুণ স্পিনার আছে এবং তাদের প্রত্যেকেরই দলের প্রয়োজনে যেকোনো সময় এগিয়ে আসার সামর্থ্য রয়েছে। সেনুরানের মতো একজনের জন্য এটি দুর্দান্ত সুযোগ, যার ব্যাট ও বল উভয় ক্ষেত্রেই ছাপ ফেলার সম্ভাবনা রয়েছে। দলে সে কী অবদান রাখতে পারে, তা দেখার জন্য আমরা মুখিয়ে আছি। সামগ্রিকভাবে, আসছে চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করার জন্য স্কোয়াডের গভীরতা ও বহুমুখী প্রতিভার ওপর আস্থা রাখছি আমরা।”
দলে বিশেষজ্ঞ পেসার হিসেবে আছেন অভিজ্ঞ কাগিসো রাবাদা, নান্দ্রে বার্গার, ডেন প্যাটারসন। পেস বোলিং অলরাউন্ডার হিসেবে আছেন ভিয়ান মুল্ডার। রাবাদা ও বার্গার দলের সবশেষ সিরিজে ছিলেন। তবে গত ফেব্রুয়ারির পর প্রথম টেস্ট খেলতে যাচ্ছেন এখন পর্যন্ত এই সংস্করণে চার ম্যাচ খেলা প্যাটারসন।
অভিজ্ঞ পেসার লুঙ্গি এনগিডি ও আনরিখ নরকিয়াকে দলে রাখেনি দক্ষিণ আফ্রিকা। বিশ্রামে থাকায় এই সিরিজের বিবেচনায় ছিলেন না মার্কো ইয়ানসেন ও জেরল্ড কুটসিয়া।
টেম্বা বাভুমার নেতৃত্বাধীন দলে ব্যাটিং বিভাগে আছেন এইডেন মার্করাম, টোনি ডি জোর্জি, ডেভিড বেডিংহ্যাম, ট্রিস্টান স্টাবস। কিপার-ব্যাটসম্যান হিসেবে রায়ান রিকেলটন ও কাইল ভেরেইনাকে।
ব্যক্তিগত কারণে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে দলের সঙ্গে না যাওয়া দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটিং কোচ অ্যাশওয়েল প্রিন্স আসবেন বাংলাদেশে। পূর্বে নাজমুল হোসেন শান্ত, মুমিনুল হকদের ব্যাটিং কোচ হিসেবে দায়িত্ব পালন করে গেছেন তিনি।
বাংলাদেশের রাজনৈতিক অবস্থার প্রেক্ষাপটে সিরিজটি নিয়ে কিছুটা শঙ্কা দেখা দিয়েছিল। কদিন আগে দক্ষিণ আফ্রিকার একটি নিরাপত্তা প্রতিনিধি দল বাংলাদেশ সফরে এসে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে যাওয়ার পর সোমবার আনুষ্ঠানিকভাবে সূচি প্রকাশ করা হয়। এরপরই দল ঘোষণা করল দক্ষিণ আফ্রিকা।
আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের অংশ এই সিরিজের প্রথম ম্যাচ শুরু আগামী ২১ অক্টোবর, মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে। এ বছর মিরপুরে প্রথম টেস্ট এটিই। দ্বিতীয় টেস্ট চট্টগ্রামে, শুরু ২৯ অক্টোবর।
এই সফরে কোনো প্রস্তুতি ম্যাচ নেই দক্ষিণ আফ্রিকার। আইসিসি ভবিষ্যৎ সফর সূচির অংশ এই সিরিজে অন্য সংস্করণের খেলাও নেই।
দক্ষিণ আফ্রিকা টেস্ট দল: টেম্বা বাভুমা (অধিনায়ক), ডেভিড বেডিংহ্যাম, ম্যাথু ব্রিটস্কি, নান্দ্রে বার্গার, টোনি ডি জোর্জি, কেশাভ মহারাজ, এইডেন মার্করাম, ভিয়ান মুল্ডার, সেনুরান মুথুসামি, ডেন প্যাটারসন, ডেন পিট, কাগিসো রাবাদা, ট্রিস্টান স্টাবস, রায়ান রিকেলটন, কাইল ভেরেইনা।