Published : 03 Feb 2025, 05:15 PM
চট্টগ্রামের এম এ আজিজ স্টেডিয়াম নিয়ে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের নতুন নির্দেশনায় চট্টগ্রামের ক্রীড়ামোদীরা মনে ‘আঘাত’ পেয়েছেন বলে মনে করছেন স্থানীয় ক্রীড়া সংগঠকরা।
সোমবার চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে বিষয়টি নিয়ে কথা বলেন চট্টগ্রামের বিভিন্ন ক্লাব প্রতিনিধিরা।
ফুটবল ফেডারেশনকে স্টেডিয়াম বরাদ্দের সিদ্ধান্ত বাতিল করে সবধরনের খেলার জন্য উন্মুক্ত রাখার দাবি জানান তারা।
সংবাদ সম্মেলনের চট্টগ্রাম জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাবেক সহসভাপতি শাহীন আফতাবুর রেজা চৌধুরী বলেন, এম এ আজিজ স্টেডিয়াম ২৫ বছরের জন্য বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনকে লিজ দেওয়ার জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের সিদ্ধান্ডে চট্টগ্রামের ক্লাব কর্মকর্তা এবং ক্রীড়ামোদীরা হতবাক।
জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের এ সিদ্ধান্তের বিষয়ে প্রধানেউপদেষ্টা ও ক্রীড়া উপদেষ্টার কাছে স্মারকলিপি দেওয়ার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, “এর প্রেক্ষিতে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ একটি সংশোধনীপত্র প্রেরণ করেছে। যাতে সকল ক্রীড়া কর্মকাণ্ড পরিচালনার জন্য বাফুফের কাছ থেকে অনুমতি নেওয়ার কথা উল্লেখ আছে।
“জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ সিদ্ধান্ত দিয়েছে কিন্তু অন্যান্য ইভেন্টের খেলাগুলো কোন মাঠে হবে সেটার কোনো সুস্পষ্ট ঘোষণা দেওয়া হয়নি। তাই আমরা মনে করি এ মাঠ একটি ইভেন্টের জন্য বরাদ্দ দেওয়ার সিদ্ধান্তটি সমীচীন হয়নি।”
তিনি দাবি করেন, চট্টগ্রাম জেলা ক্রীড়া সংস্থার অধীনে অনুষ্ঠিত ৩০/৩২টি ইভেন্টে অন্তত সাত/আট হাজার খেলোয়াড় অংশ নেন। সেখান থেকে তাদের আর্থিক সংস্থান হয়। ইভেন্টগুলো বন্ধ হয়ে গেলে যুব সমাজ বিপথে যেতে পারে।
আন্তর্জাতিক ফুটবল স্টেডিয়াম হিসেবে তৈরির জন্য ১২ শর্তে চট্টগ্রামের এম এ আজিজ স্টেডিয়ামকে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) কাছে ‘লিজ’ দিয়েছে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ। গত ২ জানুয়ারি চিঠির মাধ্যমে বাফুফেকে মাঠ বরাদ্দের বিষয়টি জানানো হয়।
এ ঘোষণার পর থেকে চট্টগ্রামের বিভিন্ন ক্রীড়া সংগঠক ও সাবেক খেলোয়াড়রা প্রতিবাদ জানিয়ে আসছিলেন। গত ৩০ জানুয়ারি স্টেডিয়ামের সামনে ‘স্টেডিয়াম রক্ষা কমিটির’ ব্যানারে মানববন্ধন করা হয়।
সেখানে বাফুফেকে এম এ আজিজ স্টেডিয়াম বরাদ্দ দেওয়ার সিদ্ধান্তকে ‘হঠকারী’ মন্তব্য করে তা বদলানোর দাবি তোলেন চট্টগ্রামের সিটি মেয়র শাহাদাত হোসেন।
ওই দিনই জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ আগের সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসে নতুন একটি সিদ্ধান্ত জানায়, যেখানে বাফুফের সাথে সমন্বয়ের মাধ্যমে স্থানীয় জেলা ও বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থাগুলোকে খেলাধুলা আয়োজনের অনুমোদন দেওয়া যেতে পারে বলে জানানো হয়।
সোমবার সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ দাবা ফেডারেশনের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও চট্টগ্রাম জেলা ক্রীড়া সংস্থার অতিরিক্ত সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ শাহাবউদ্দিন শামীম বলেন, “জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের নতুন চিঠি আমাদের মনে ‘মারাত্মক আঘাত’ করেছে। তারা বলেছে বাফুফের সাথে সমন্বয় করে খেলার আয়োজন করার জন্য।
“আমাদের মাঠ আমাদের থাকবে। আমরা কেন মাঠ ব্যবহারে তাদের জিজ্ঞেস করব? তারা কিছু আয়োজন করলে আমাদের সাথে কথা বলবে।”
জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের এ সিদ্ধান্ত থেকে সরে না আসলে চট্টগ্রামে আগামীতে কোনো খেলাধুলায় মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব অংশ নেবে না জানিয়ে ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক শামীম আরও বলেন, “জেলা ক্রীড়া সংস্থার অধীনে ৮৫টি ক্লাব আছে। ক্লাব প্রতিনিধিরাই কমিটিতে থাকবে। তাদের সিদ্ধান্ত বাফুফে এবং বিসিবিকে মানতে হবে। কিন্তু তারা যে সিদ্ধান্ত আমাদের ওপর চাপিয়ে দিচ্ছে সেটাতো আমরা মানতে পারব না।”
চট্টগ্রাম জেলা ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক আ ন ম ওয়াহিদ দুলাল এ মাঠ বাফুফেকে বরাদ্দ দেওয়া হলে এবং ফিফার অধীনে গেলে চট্টগ্রামের স্থানীয় ফুটবল লিগ আয়োজন শঙ্কায় পড়বে বলে জানান।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের অন্তর্বর্তীকালীন কমিটির সদস্য সচিব জাহিদুল করিম কচি, বাংলাদেশ কারাতে ফেডারেশনের নবগঠিত অ্যাডহক কমিটির সভাপতি শাহাজাদা আলম, চট্টগ্রাম জেলা ক্রীড়া সংস্থার বিলুপ্ত কমিটির সহ-সভাপতি হাফিজুর রহমান, সৈয়দ আবুল বশর, যুগ্ম সম্পাদক আমিনুল ইসলাম, কোষাধ্যক্ষ শাহাবউদ্দিন মো. জাহাঙ্গীরসহ বিভিন্ন ক্লাবের কর্মকর্তারা।
এম এ আজিজ স্টেডিয়াম নিয়ে ক্রীড়া পরিষদের সিদ্ধান্ত বদলাতে হবে
এম এ আজিজ স্টেডিয়াম ফুটবলের জন্য বরাদ্দ, অন্য খেলার কী হবে?