Published : 04 Nov 2023, 04:48 PM
চট্টগ্রামে গোরখোদকের পর একই কায়দায় পাচারের সময় পাঁচটি মুখপোড়া হনুমানসহ তিন 'পাচারকারীকে' গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
নগরীর শাহ আমানত ব্রিজ এলাকা থেকে শুক্রবার রাতে একটি অটোরিকশায় তল্লাশি চালিয়ে পাঁচটি হনুমান উদ্ধার করে ৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে নগর পুলিশের উপ-কমিশনার (দক্ষিণ) মোস্তাফিজুর রহমান জানান।
গ্রেপ্তার তিনজন হলেন- মো. সেলিম (৫৩), সালাউদ্দিন কাদের ওরফে হেলাল উদ্দিন (৩৫) ও নুরুল কবির (৩১)।
এই তিনজন বণ্যপ্রাণী পাচার চক্রের সদস্য বলে পুলিশের ভাষ্য; এদের মধ্যে সেলিম এর আগে বাঁশখালীতে রাজধনেশ পাখি এবং চট্টগ্রাম নগরীতে গোরখোদক পাচারে জড়িত ছিলেন।
কক্সবাজারের মহেশখালী উপজেলার শাপলাপুর পাহাড় থেকে হনুমানগুলো সংগ্রহ করে সীমান্তবর্তী জেলায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল বলে পুলিশ জানিয়েছে।
পুলিশের উপ-কমিশনার মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, গত মাসের শেষে গোরখোদক উদ্ধারের পর পাচারকারী চক্রের ওপর পুলিশের নজরদারি চলছিল। ওই নজরদারিতে হনুমান পাচার চক্রটিও ধরা পড়ে।
"আগের চক্রটির সঙ্গে গ্রেপ্তার হওয়া চক্রের যোগসূত্র আছে। এই হনুমানগুলোকেও নানাভাবে চট্টগ্রামে এনে অটোরিকশায় তোলা হয়," বলেন পুলিশের উপ-কমিশনার মোস্তাফিজুর রহমান।
তিনি বলেন, "এ চক্রের সদস্যরা পার্বত্য অঞ্চলসহ বিভিন্ন গহীন অঞ্চল থেকে বিপন্ন প্রজাতীর এসব প্রাণী সংগ্রহ করে। পরে সেগুলো আরেকটি পক্ষের হাতে তুলে দেয়। এভাবে কয়েকবার হাত বদলের মাধ্যমে সীমান্ত পথে কিংবা নৌপথে বিভিন্ন দেশে প্রাণীগুলো পাচার করে দেওয়া হয়।
"ইন্টারপোলের মাধ্যমে আমরা জানতে পেরেছি, এসব প্রাণী বাংলাদেশ থেকে সংগ্রহণের পর ইউরোপের বিভিন্ন দেশেও পাচার হয়ে থাকে।”
এর আগে গত ২৫ মে রাতে বাঁশখালী উপজেলার গুনাগরি এলাকা থেকে পাঁচটি রাজ ধনেশপাখিসহ একজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। সে সময় গ্রেপ্তার সেলিমের দেওয়া তথ্যে পুলিশ মিজানুর নামের আরেক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তারের পর তাদের ছয় মাসের কারাদণ্ড দিয়েছিল ভ্রাম্যমাণ আদালত।
ছয় মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হলেও একমাসের মাথায় সেলিম জামিনে ছাড়া পেয়ে যান বলে বাকলিয়া থানার ওসি আব্দুর রহিম জানান।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, "গত ৩০ অক্টোবর যে গোরখোদক উদ্ধার করা হয়েছিল সেগুলো নিয়ে সেলিমের চট্টগ্রামে আসার কথা ছিল। কিন্তু সেলিম সেগুলো হাতবদল করেছিলেন মইজ্জ্যার টেক এলাকায়। সে সময় ধরা পরে আমজু ও শাকিব।"
এরপর সেলিমের ওপর নজরদারি বাড়িয়ে এবার তাকে হনুমানসহ গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা।
মুখপোড়া হনুমান (Capped Langur, Capped Monkey, Capped Leaf Monkey বা Bonneted Langur) স্তন্যপায়ী প্রাণি। মূলত গাছের পাতা খেয়ে জীবনধারণ করে বলে এদের পাতা বানরও বলা হয় । Cercopithecidae গোত্রভুক্ত প্রাণীটির বৈজ্ঞানিক নাম Trachypithecus pileatus।
প্রকৃতি সংরক্ষণ বিষয়ক আন্তর্জাতিক সংস্থা 'ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনজারভেশন অব নেচার’ বা আইইউসিএন এর করা লাল তালিকায় এ প্রাণীকে রাখা হয়েছে প্রকৃতিতে ‘সংকটাপন্ন’ প্রজাতির তালিকায়।
পুরনো খবর