Published : 25 Nov 2022, 11:34 PM
রাধারমণ সাংস্কৃতিক কমপ্লেক্স নির্মাণের কাজ শিগগিরই শুরু হবে বলে জানালেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ।
শুক্রবার সন্ধ্যায় বাংলা একাডেমির নজরুল মঞ্চে তিন দিনব্যাপী 'রাধারমণ লোকসংগীত উৎসব'র উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এ আশার কথা শোনান।
এবারের উৎসবই উদযাপন হচ্ছে 'রাধারমণ কমপ্লেক্স নির্মাণ সময়ের দাবি’ স্লোগানে।
কে এম খালিদ বলেন, “বর্তমান সরকার কবি, শিল্পী, সাহিত্যিকদের ব্যাপারে অত্যন্ত আন্তরিক এবং তাদের স্বার্থ সুরক্ষায় সচেষ্ট। এরই অংশ হিসেবে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মাধ্যমে 'সাংস্কৃতিক মনীষীদের নামে সাংস্কৃতিক কেন্দ্র নির্মাণ' শীর্ষক একটি প্রকল্প প্রক্রিয়াধীন রয়েছে- যেখানে রাধারমণ দত্ত, শাহ আবদুল করিম ও দুরবীণ শাহসহ বিভিন্ন সাংস্কৃতিক মনীষী অন্তর্ভুক্ত রয়েছেন।
“প্রকল্পটির ডিপিপি প্রণয়নের কাজ শেষ হয়েছে। স্থাপত্য নকশা চূড়ান্ত পর্যায়ে। আশা করা যায়, এ বছরের ডিসেম্বর মাসের মধ্যে প্রকল্পটির চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানো যাবে। শিগগিরই রাধারমণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্র নির্মাণ করা হবে।”
সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী বলেন, “কথায় আছে- যে দেশে গুণীর কদর নেই, সেদেশে গুণী জন্মায় না। গুণীজনদের সম্মান দেওয়া আমাদের নৈতিক দায়িত্ব ও কর্তব্য। নতুন প্রজন্ম তাদের জীবন থেকে শিক্ষা লাভ করে সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়ার অনুপ্রেরণা পায়।"
রাধারমণ সংস্কৃতিচর্চা কেন্দ্র আয়োজিত এ উৎসব উদ্বোধন করেন সুনামগঞ্জের প্রবীণ কীর্তনীয়া যশোদা রাণী সূত্রধর।
রাধারমণ সংস্কৃতিচর্চা কেন্দ্রের সভাপতি মাহমুদ সেলিমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন বিশ্ব আইটিআই’র সাবেক সভাপতি রামেন্দু মজুমদার। আলোচনা করেন গবেষক সুমন কুমার দাশ। শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন ড. বিশ্বজিৎ রায়। স্বাগত বক্তৃতা করেন রজত বরণ দত্ত। উপস্থাপনা করেন বাচিক শিল্পী রূপা চক্রবর্তী।
উদ্বোধনী দিন দলীয় সংগীত পরিবেশন করেছে গানের দল 'নিবেদন'। এছাড়া একক কণ্ঠে গান পরিবেশন করেন অণিমা মুক্তি গোমেজ, আবুবকর সিদ্দিক, তুলিকা ঘোষ, শুভ বণিক, শাহনাজ বেলী, বাউল হারুনসহ অনেকে।
২৭ নভেম্বর পর্যন্ত চলা এ উৎসবে পরিবেশিত হচ্ছে হাওর অঞ্চলের লোক গান। প্রতিদিন বিকেল সাড়ে ৪টা থেকে অনুষ্ঠান শুরু হবে বলে জানিয়েছেন আয়োজকরা।
গত বছর থেকে রাধারমণের নামে আয়োজিত এই উৎসবের পরিসর আরও বাড়ানো হয়েছে। সৈয়দ শাহনূর, রাধারমণ, শেখ ভানু, হাছন রাজা, ফকির দীন হীন, মনমোহন দত্ত, আরকুম শাহ, উকিল মুন্সি, দীন শরৎ, জালালউদ্দিন খাঁ, অখিল ঠাকুর, শাহ আবদুল করিম, দুর্বিন শাহ, অমর শীল, কফিলউদ্দিন সরকার, বিজয় সরকার, রশীদ উদ্দিনের গান উৎসবে যুক্ত করা হয়েছে।
গত ১১ বছর বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মাঠে উৎসবের আয়োজন করা হলেও এবার মাঠ ব্যবহারের অনুমতি দেওয়া হয়নি। সে কারণে এবারের উৎসব বাংলা একাডেমির নজরুল মঞ্চে আয়োজন করা হয়েছে বলে জানায় আয়োজক সংগঠন।
শনিবার উৎসবের দ্বিতীয় দিন দলীয় সঙ্গীত পরিবেশন করবে 'ফোক বাংলা'। নৃত্য পরিবেশন করবে বেণুকা ললিতকলা একাডেমি। একক গান পরিবেশন করবেন বাউল আব্দুর রহমান, রণেশ ঠাকুর, চন্দনা মজুমদার, শাহানা আক্তার, সেলিম চৌধুরী, সুমনা দাস, বাউল সিরাজউদ্দিনসহ অনেকে।
রোববার উৎসবের সমাপনী আয়োজনে প্রধান অতিথি থাকবেন আওয়ামী লীগের যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল-আলম হানিফ। বিশেষ অতিথি থাকবেন আওয়ামী সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল, ম হামিদ, রফিকুল ইসলাম, ঝুনা চৌধুরী, কবি শামীম রেজা। সভাপতিত্ব করবেন অভিজিৎ চৌধুরী।
সমাপনী আয়োজনে দলীয় সংগীত পরিবেশন করবে লোকাঙ্গণ৷ নৃত্য পরিবেশন করবে নৃত্যাক্ষ। একক সঙ্গীত পরিবেশন করবেন বাউল বসিরউদ্দিন, সূর্যলাল, শিশির অধিকারী, সুনীল কর্মকার, রেখা বেগম, নারায়ণচন্দ্র শীলসহ অনেকে।