Published : 21 Feb 2024, 03:34 PM
খতনা করাতে এসে শিশুর মৃত্যুর ঘটনায় রাজধানীর মালিবাগের জে এস ডায়াগনস্টিক অ্যান্ড মেডিকেল সেন্টার বন্ধ করার পর, প্রতিষ্ঠানটির লাইসেন্স বাতিল করার উদ্যোগ নিয়েছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
বুধবার হাসপাতাল পরিদর্শন করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (হাসপাতাল ও ক্লিনিকসমুহ) ডা. আবু হোসেন মোহাম্মদ মইনুল আহসান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেছেন, প্রতিষ্ঠানটির ডায়াগনস্টিক সেন্টার পরিচালনার লাইসেন্স থাকলেও ‘চিকিৎসা সেবা দেওয়ার লাইসেন্স ছিল না’।
তিনি বলেন, “আমরা তাদের সব কার্যক্রম বাতিল করেছি। ডায়াগনস্টিক সেন্টারের লাইসেন্স ছিল, তা বাতিল করার প্রক্রিয়া শুরু করেছি। কাল এটা হয়ে যাবে। মেডিকেল সার্ভিস দেওয়ার অনুমোদন ছিল না। এ ব্যাপারেও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
মালিবাগের চৌধুরীপাড়ার ‘জে এস ডায়াগনস্টিক অ্যান্ড মেডিকেল চেকআপ সেন্টারে’ মঙ্গলবার ১০ বছর বয়সী আহনাফ তাহমিন আয়হামকে খতনা করাতে নিয়ে যায় পরিবারের সদস্যরা।
মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী আয়হামের বাসা খিলগাঁওয়ে। তার বাবা ফখরুল আলম ব্যবসায়ী।
হাতিরঝিল থানার ওসি আওলাদ হোসেন মামুন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “খতনা করানোর পর জ্ঞান ফিরে এলেও আহনাফ বমি করতে করতে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে।”
শিশুটির মৃত্যুর কারণ জানা গেছে কি না জানতে চাইলে চিকিৎসক আবু হোসেন মোহাম্মদ মইনুল আহসান বলেন, “প্রাথমিকভাবে অভিযোগ এসেছে খতনা করার সময় শিশুটির মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু কারণ এখনও জানা যায়নি। আমরা সেখানে কাউকে পাইনি। আমরা কাল সবার সঙ্গে কথা বলব। কাগজপত্র হাতে এলে বোঝা যাবে ঘটনা কি হয়েছে।”
এ বিষয়ে ওই হাসপাতালের বক্তব্য বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম জানতে পারেনি।
সন্তানের মৃত্যুর ঘটনায় চিকিৎসকের বিরুদ্ধে অবহেলার অভিযোগ এনে হাতিরঝিল থানায় মামলা করেছেন আয়হামের বাবা ফখরুল।
এ ঘটনায় এসএম মুক্তাদির ওরফে মুক্তার ও মাহবুব নামে দুই চিকিৎসককে গ্রেপ্তার করে হাসপাতাল বন্ধ করে দেয় পুলিশ।
এর আগে গত ৩১ ডিসেম্বর রাজধানীর সাঁতারকুলের ইউনাইটেড মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে খতনার জন্য অজ্ঞান করা হয়েছিল শিশু আয়ান আহমেদকে। খতনা করানোর পর ১১ ঘণ্টায়ও তার সংজ্ঞা না ফিরলে গুলশানের ইউনাইটেড হাসপাতালে এনে লাইফসাপোর্টে রাখা হয়। সাত দিন সেখানে থাকার পর গত ৭ জানুয়ারি আয়ানকে মৃত ঘোষণা করা হয়।
আয়ানের চাচার অভিযোগ ছিল, আংশিক অচেতন করে খতনা করানোর কথা থাকলেও চিকিৎসকরা আয়ানকে পুরোপুরি অজ্ঞান করা করেছিল।
ইউনাইটেড হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দেওয়া মৃত্যুসনদে আয়ানের মৃত্যুর কারণ হিসেবে কার্ডিও-রেসপিরেটরি ফেইলিওর, মাল্টিঅর্গান ফেইলিওর এবং কার্ডিয়াক অ্যারেস্টের কথা লেখা হয়।
শিশু আয়ানের এমন মৃত্যুর ঘটনায় কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ চেয়ে রিট করে ৯ জানুয়ারি রিট করেন এক আইনজীবী। জনস্বার্থে করা সেই রিটে শিশু আয়ান আহমেদের চিকিৎসার দায়িত্বে থাকা চিকিৎসকদের সনদ বাতিল এবং ইউনাইটেড হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশনা চাওয়া হয়।
পুরনো খবর