Published : 04 Jan 2014, 11:43 AM
গত মঙ্গলবার হঠাৎ ক্ষুদ্ধ হয়েই সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ বললেন, কিসের কনফিউশন? আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে, সিচ্যুয়েশন ইমপ্রুভ করছে। নির্বাচন হবে। নির্বাচন কমিশন সকল হুমকি-ধামকি, ঝড়ঝাপটা উপেক্ষা করে নির্ধারিত সময়েই নির্বাচন অনুষ্ঠানে যে বদ্ধপরিকর, তা তিনি তার বচনভঙ্গি দিয়ে বুঝিয়ে দিলেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও নির্বাচনী প্রচারে নেমে দৃঢ়তার সঙ্গে বারংবার বলেছেন, নির্বাচন কেউ ঠেকাতে পারবে না। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্যই এ নির্বাচন হতে হবে।
আগামী ৫ জানুয়ারি দশম সংসদ নির্বাচন। দেশের পরিস্থিতি যত প্রতিকূলই হোক, নির্বাচনের আয়োজন আটকে থাকেনি। ভোটের নির্ধারিত তারিখের আগেই একদফা নির্বাচন হয়ে গেছে। মোট তিনশ' আসনের মধ্যে ১৫৩ জন নির্বাচিত হয়েছেন। কারণ তাদের কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন না। মাঠে কোনো হাঙ্গামা ছিল না। পবিত্র ভোটাধিকার প্রয়োগের জন্য ভোট কেন্দ্রে যেতে হয়নি। প্রার্থীদেরও অর্থ ও শ্রম ক্ষয় করতে হয়নি। শত শত কোটি টাকা সাশ্রয় হয়েছে। কেউ অভিযোগ করতে পারবে না যে, প্রার্থীরা নিয়ম ভঙ্গ করে টাকা দিয়ে ভোট কিনেছেন। নির্বাচন হয়েছে– প্রার্থী ও ভোটার কেউই টের পাননি। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, কেউ না এলে খালি মাঠে গোল তো হবেই।
কিন্তু তাই বলে তো রেফারি ছাড়া চলে না– খেলার একটা মিনিমাম নিয়মকানুন আছে। গোলের হিসাব রাখার জন্যও তো একজন রেফারি দরকার। নিরপেক্ষভাবে ১৫৩টি গোলের গণনা করে নির্বাচন কমিশন নিঃসন্দেহে সকল অতীতরেকর্ড ভঙ্গ করেছে। বিরোধী দল বিএনপি বলেছে, এটা নীলনকশার (Blueprint) নির্বাচন। বিএনপির স্থাপত্যবিদ্যাজ্ঞান নেই। ইমারত গড়তে গেলে ব্লুপ্রিন্ট তো লাগবেই। ক্ষমতাসীন ১৪দলীয় মহাজোটের শরিক ওয়ার্কার্স পার্টির নেতা ও মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন কিছুদিন আগে 'প্রথম আলো'তে এক সাক্ষাৎকারে ঝানু জ্যোতিষীর মতো ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন (পরে আমার সঙ্গে এক টক-শো'তে তা পুনরুল্লেখ করেন), বিএনপি নির্বাচনে অংশ নেবে না এবং এটা তিনি দুই বৎসর আগেই বুঝতে পেরেছিলেন। তখন আমি তাকে প্রশ্ন করেছিলাম, তাহলে কি ব্লুপ্রিন্টটা দুই বছর আগেই তৈরি করা হয়েছিল? তিনি আমার প্রশ্নের কোনো সদুত্তর দেননি।
যাহোক, দ্বিতীয় দফা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে ১৪৭টি আসনে। গুটিকয়েক বাদে অধিকাংশ আসনেই 'সেইম সাইড' নির্বাচন হচ্ছে, আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থীর বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগেরই বিদ্রোহী প্রার্থীরা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। দলের শৃঙ্খলা ভঙ্গ করে বিদ্রোহী প্রার্থীরা নির্বাচন করলেও তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। শাপে বর হয়েছে। শূন্য মাঠে গোল দেওয়ার অপবাদ থেকে অন্তত কিছুটা রেহাই পাওয়া যাবে, বলা যাবে ভোটাভুটি হয়েছে।
মনোনীত, অমনোনীত যারাই নির্বাচিত হোন না কেন, চূড়ান্ত গণনায় দেখা যাবে সব ডিম এক ঝুড়িতেই পড়েছে। তবুও এই একতরফা কাজটা যেন অবাধে হয়, সে জন্য নিরাপত্তা দরকার। নিরাপত্তা নিñিদ্র্র করার জন্য আনসার, পুলিশ, র্যাব, বিজিবি, সেনাবাহিনী সবই মোতায়েন করা হয়েছে। ভয়টা প্রার্থীদের কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে নয়, ভয়টা নির্বাচন বিরোধীদের নিয়ে।
বিরোধী দল নির্বাচন ভ-ুল করার জন্য ১ জানুয়ারি থেকে সারাদেশে অনির্দিষ্ট কালের জন্য অবরোধ ও শনিবার থেকে দুদিনের হরতাল ঘোষণা করেছে। বিরোধী দলকে নির্বাচনে আনার দায়িত্ব নির্বাচন কমিশনের নয়, তাদের দায়িত্ব নির্বাচন অনুষ্ঠান করার। গণতন্ত্র রক্ষার জন্য নির্বাচন প্রয়োজন, নির্বাচনের অর্থ জনগণের ভোটাধিকার প্রয়োগ, ভোটাধিকার নাগরিকদের মৌলিক অধিকার– এসবই আমাদের সংবিধানে পরিষ্কারভাবে উল্লেখ আছে। আরেকটু কষ্ট করলে নির্বাচন কমিশন জাতিসংঘ সনদে গণতন্ত্র ও নির্বাচন সম্পর্কে কী বলা হয়েছে, তা দেখতে পেত। জাতিসংঘের দৃষ্টিতে ভোটাধিকার কেবল নাগরিকদের মৌলিক অধিকারই নয়– মানবাধিকার।
আওয়ামী লীগ রাজনৈতিক স্বার্থে ক্ষমতা আঁকড়ে রাখার জন্য এই মৌলিক অধিকার বা মানবাধিকার লংঘন করছে, কিন্তু সার্বভৌম নির্বাচন কমিশন কোন স্বার্থে তা পদদলিত করছে? সংবিধানে সুস্পষ্টভাবে বলা হয়েছে– "১২২ (১)। প্রাপ্তবয়স্কের ভোটাধিকার ভিত্তিতে সংসদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হইবে।"
ইতোমধ্যে ৫৩ শতাংশ ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ থেকে বঞ্চিত হয়েছে। ৫ জানুয়ারি বাকি ৪৭ শতাংশের কতজন ভোটার ভোট কেন্দ্রে যাবে? প্রথমত, বিরোধীদলের অবরোধ ও হরতালের কারণে নিরাপত্তা ঝুঁকি, দ্বিতীয়ত, প্রতিদ্বন্দ্বিতাহীন নির্বাচনে ভোটারদের অনাগ্রহ। আমাদের দেশ থেকে কিছু দূরেই থাইল্যান্ড। চিকিৎসাসহ বিভিন্ন ছোটবড় কাজে আমাদের ব্যাংককে যাতায়াত অতি মামুলি ব্যাপার। সেখানেও সরকারবিরোধী আন্দোলন চলছে। রাজনৈতিক সমাধানের জন্য প্রধানমন্ত্রী ইংলিং সানিয়াত্রা ফেব্রুয়ারিতে মধ্যবর্তী নির্বাচন ঘোষণা করেছেন।
কিন্তু বিরোধী দল তা বর্জনের ঘোষণা দিয়ে আগে সংস্কারের দাবি করছে। বিরোধীদলের অংশগ্রহণ ছাড়া মধ্যবর্তী নির্বাচন অর্থহীন– এই বাস্তবতা উপলব্ধি করে নির্বাচন কমিশন নির্বাচন অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত করে দেয়। সাংবিধানিক সংস্থা হিসেবে নির্বাচন কমিশন সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে স্বাধীনভাবে ক্ষমতা প্রয়োগের সর্বময় অধিকারী, এটা তার সর্বশেষ উদাহরণ। গণতন্ত্রের অব্যাহত চর্চায় অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানে প্রতিবেশী ভারতের নির্বাচন কমিশন যুগ যুগ ধরে কী ভূমিকা পালন করে আসছে, তা আমাদের নির্বাচন কমিশনের অজানা নয়। এসব কথা চোখে দেখা ও কানে শোনা অবশ্য আমাদের ঈমানদার নির্বাচন কমিশনের জন্য পাপ, তা আমরা জানি।
সর্বকালে সব ধরনের সরকারের প্রতি নির্ভেজাল আনুগত্য প্রকাশ তাদের মজ্জাগত বৈশিষ্ট্য। গত বিএনপি-জামায়াত সরকারের আমলে বিচারপতি আজিজ ও বিচারপতি সাদেকের কমিশন তা প্রশ্নাতীতভাবেই প্রমাণ করেছে। সংবিধান অনুসারে তারা যে শপথ গ্রহণ করেন, তাদের এই অনুগত ভূমিকা তার নিলর্জ্জ লংঘন। সংবিধান লংঘনের জন্য হয়তো একদিন তাদের আদালতের মুখোমুখি হতে হবে।
নির্বাচন কমিশন প্রার্থীদের হলফনামা অনুযায়ী তাদের অর্থসম্পদের হিসাব ওয়েবসাইটে প্রকাশ করেছিল। কমিশনের এই উদ্যোগ নিঃসন্দেহে প্রশংসার দাবিদার। যারা জনগণের নির্বাচিত প্রতিনিধি অথবা জনগণের ভোট প্রার্থী, তাদের অর্থবিত্তসহ সংশ্লিষ্ট তথ্য জানার আইনগত অধিকার জনগণের রয়েছে। জনগণের এই অধিকার নিশ্চিত করার জন্যই জনপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) প্রার্থীদের আটটি তথ্য প্রদানের বাধ্যবাধকতার বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। কিন্তু কমিশনকে দেওয়া হলফনামা অনুযায়ী পত্রপত্রিকাগুলো যখন সরকারি মন্ত্রী-এমপিদের সম্পদের খবর প্রকাশ করা শুরু করে, তখন ক্ষুদ্ধ সরকারি দলের ধমকে নতজানু কমিশন কারিগরি কারসাজি করে তা বন্ধ করে দেয়। কমিশনের কারসাজি ভোটারদের অধিকার ক্ষুণœ করেছে। গত পাঁচ বছরে মন্ত্রী-এমপিরা 'আঙুল ফুলে কলাগাছ হওয়া'র মতো যে বিত্তবৈভবের মালিক হয়েছেন, তা তারা করেছেন সংবিধানপরিপন্থী উপায়ে। সংবিধান বিশেষজ্ঞ ড. শাহদীন মালিক একে রাষ্ট্রদ্রোহিতার সামিল বলে উল্লেখ করেছেন। প্রার্থীতা যাচাই-বাছাইয়ের সময়ে নির্বাচন কমিশনের মনেও তাদের অস্বাভাবিক ধন-সম্পদ কোনো প্রশ্নের উদ্রেগ করেনি, যদিও পাঁচ বছর আগে তাদের দেওয়া সম্পদের হিসাব কমিশনের সামনেই ছিল। মন্ত্রী-এমপিদের সম্পদের তদন্ত করার আইনী দায়িত্ব নির্বাচন কমিশনের নয়, এটা ঠিক, কিন্তু আরপিও যখন কমিশনকে প্রার্থীদের সম্পদের হিসাব চাওয়ার অধিকার দিয়েছে, তখন তাদের অস্বাভাবিক সম্পদ সম্পর্কে প্রশ্ন করার নৈতিক অধিকারও তাতে অর্ন্তনিহিত রয়েছে।
প্রার্থীদের অস্বাভাবিক সম্পদ অর্জনের বিষয়ে কমিশন দুর্নীতি দমন কমিশনের দৃষ্টি আকর্ষণ না করলেও দুদক জেনে-শুনে চোখ-কান বন্ধ করে থাকতে পারে না। আইনই উদ্যোগী হয়ে এ ব্যাপারে তদন্ত ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের ক্ষমতা দিয়েছে দুদককে। কিন্তু সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে দুদক বলেছে, এখন এ ব্যাপারে ব্যবস্থা গ্রহণ করলে নির্বাচন প্রক্রিয়া ব্যাহত হবে।
অর্থাৎ একতরফা নির্বাচন অনুষ্ঠানে এককভাবে কেবল ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগই মরিয়া হয়ে নয়, নির্বাচন কমিশন, বিচার বিভাগ, দুদক, প্রশাসন, র্যাব-পুলিশসহ যারাই কোনো-না-কোনোভাবে বর্তমান সরকারের বেনিফিনিয়ারি, তারাও নিজেদের স্বার্থরক্ষার জন্য বিভিন্ন ক্ষেত্রে সমানভাবে তৎপর। সাবেক প্রধান বিচারপতি খায়রুল হক হাই কোর্ট ও সুপ্রিম কোর্টের অধিকাংশ বিচারক এবং এমিকাস কিউরিদের অধিকাংশের মতকে উপেক্ষা করে এয়োদশ সংশোধনী বাতিলের মাধ্যমে পঞ্চদশ সংশোধনীর পথ উন্মোচন করে, আজ যে সর্বনাশা রাজনৈতিক সংকট সৃষ্টি হয়েছে, সে ব্যাপারে পথপ্রদর্শকের ভূমিকা পালন করেছেন। এনামস্বরূপ অর্থ ও চাকরি (অবসরের পর ল' কমিশনের চেয়ারম্যান) দুটোই পেয়েছেন। সাবেক প্রধান বিচারপতি মোদাচ্ছের হোসেনও ২০০৬ সালে কলমের এক খোঁচায় এমনি রাজনৈতিক সংকটের সৃষ্টি করেছিলেন। রাষ্ট্রপতি ইয়াজউদ্দিন আহমদ কর্তৃক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের বিষয়টি উচ্চ আদালতে চ্যালেঞ্জ করা হলে তিনি তা স্টে (Stay) করে দেন। ফলে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণে রাষ্ট্রপতি ইয়াজউদ্দিনের সামনে আর কোনো বাধা ছিল না। বিচারপতি মোদাচ্ছেরের স্টে অর্ডারটি (Stay Order) দেশের জন্য কাল হয়ে দেখা দিয়েছিল।
এরই পরিণতি ছিল এক-এগারোর অসাংবিধানিক উত্থান। আমাদের মাননীয় বিচারপতিরা এর আগেও এমন কিছু ঘটনা ঘটিয়েছেন, যার ফলে সংবিধান বা সাংবিধানিক ধারা ধুলোণ্ঠিত হয়েছে। বিচারপতি মোদাচ্ছের ওই স্টে অর্ডার (Stay Order) না দিলে ইতিহাস হয়তো অন্যরকম হত। ইতিহাসের টুটি চেপে ধরলেও ইতিহাস কথা কয়। ওই সময় বিএনপিও দ্বিতীয় মেয়াদে রাষ্ট্রক্ষমতায় আসীন হওয়ার চেষ্টা করেছিল। তবে পার্থক্যটা এই, বিএনপি ক্ষমতা দখলের চেষ্টা করেছিল তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মাধ্যমে, এবার আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থেকেই দ্বিতীয় মেয়াদের জন্য ক্ষমতা দখলের চেষ্টা করছে। বিএনপি ব্যর্থ হয়েছিল, আওয়ামী লীগ সফল হতে যাচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার দল ও মহাজোটের শরিক দলগুলোর নেতানেত্রীরাসহ অনেকেই বলছেন, বিরোধীদল বিশেষত বিএনপি আন্দোলনে ব্যর্থ হয়েছে। ২৯ ডিসেম্বর খালেদা জিয়ার ঘোষিত মার্চ ফর ডেমোক্রেসি (March for Democracy) বা গণতন্ত্রের অভিযাত্রার ব্যর্থতার ব্যাপারে তারা এবং মিডিয়াও বেশ সোচ্চার। ওই দিন রাজধানীতে যে সমাবেশের আহ্বান জানানো হয়েছিল, তা হয়নি। রাস্তায় বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর নেতাকর্মীদের উপস্থিতি দেখা যায়নি। রাজধানী ও রাজধানীতে প্রবেশপথগুলো ছিল র্যাব-পুলিশ-বিজিবি ও আওয়ামী লীগ-যুবলীগ-ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের দখলে। খালেদা জিয়া নিজে তার গুলশানের বাসা থেকে বের হয়ে নয়া পল্টনে আসার চেষ্টা করেছিলেন, কিন্তু পুলিশের তিন স্তরের বেষ্টনি ভেদ করে বের হতে পারেননি।
সকালে আইনজীবীদের একটা অংশ সুপ্রিম কোর্ট চত্বর থেকে, সাংবাদিকদের একটা অংশ প্রেস ক্লাব থেকে এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের একটা অংশ বিশ্ববিদ্যালয়ের চত্বর থেকে নয়া পল্টনে যাওয়ার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু পুলিশ ও লাঠিধারী আওয়ামী লীগের কর্মীদের বাধার মুখে তারা এগোতে পারেনি। তাদের উপর হামলা হয়েছে, শত শত পুলিশের সামনেই আওয়ামী লীগ-যুব লীগের কর্মীরা সুপ্রিম কোর্ট চত্বরে ঢুকে মহিলা আইনজীবীসহ আইনজীবীদের মারধর করেছে। অতীতে এমন লাঠিসোটা নিয়ে সুপ্রিম কোর্ট চত্বরে ঢুকে আক্রমণের দ্বিতীয় নজির নেই। প্রবীণ আইনজীবী ব্যারিস্টার রফিক-উল হক ক্ষোভে-দুঃখে বলেছেন, আজ সুপ্রিম কোর্টের কবর রচিত হল। এই চারটি উল্লেখযোগ্য ঘটনা ছাড়া আর কোনো ঘটনা ঘটেনি, এমনকি রাজধানীতে প্রবেশের পথগুলোতেও বিরোধী দলের কোনো সমাবেশ বা সংঘাত হয়নি।
তবে আশংকা ছিল অনেক বড়। রাজধানীমুখী দেশের সকল স্থল ও জলপথে যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দিয়ে সরকার নিজেই দুদিন আগ থেকে অবরোধ সৃষ্টি করেছিল। সরকারের এই অবরোধ চলে টানা চারদিন। ওই দিন নয়া পল্টনে সমাবেশ হতে দিলে কী হত?– এমন প্রশ্ন অনেকেরই।
সরকারি গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর কাছে নাকি খবর ছিল, ওই দিন সমাবেশ করতে দিলে তা অনির্দিষ্ট সময়ের জন্য অব্যহত থাকত। খালেদা জিয়াসহ ১৮দলীয় জোটের নেতানেত্রীরা সমাবেশস্থলে অবস্থান করে কর্মী ও সমর্থকদের সাহস ও উৎসাহ জোগাতেন। এর প্রতিক্রিয়া দ্রুত সারাদেশে ছড়িয়ে পড়লে সরকারবিরোধী আন্দোলন নতুন করে চাঙা হয়ে উঠত। ফলে, একদিকে নির্বাচন অনিশ্চিত হয়ে পড়ত, অপরদিকে এই সুযোগে আমেরিকাসহ পাশ্চাত্য দেশগুলো আবার সরকারের উপর নির্বাচন তফসিল বাতিল ও সকলের অংশগ্রহণে নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য চাপ সৃষ্টি করত। কেউ কেউ আগ বাড়িয়ে বলেছেন যে, সমাবেশ করতে দিলে যে পরিস্থিতির উদ্ভব হত, তাতে সরকার পতনের আশংকাও ছিল।
এ কারণেই বিরোধীদলের চেয়ে সরকারি বাহিনীগুলো ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে সাজ-সাজ রব ছিল বেশি এবং আগেভাগেই অবরোধ সৃষ্টি করে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া হয়েছে। এই ঘটনার আরেকটি দৃশ্যও আছে, যা অদৃশ্যই থেকে গেছে। যে জামায়াত-শিবির গত কয়েক মাস যাবৎ সারাদেশে এত সহিংস ঘটনার সঙ্গে জড়িত বলে সরকারি বক্তব্য ও মিডিয়ার তথ্য থেকে আমরা জেনে আসছি, তারাও ২৯ ডিসেম্বর মাঠে ছিল না। তার পরও মাঠে নেই।
হঠাৎ জামায়াত-শিবিরের নিষ্ক্রিয়তা রাজনৈতিক মহলে কৌতূহলের সৃষ্টি করেছে। শোনা যাচ্ছে, জামায়াত নেতারা বিএনপিকে জানিয়েছেন, ইতোমধ্যে সন্ত্রাসী হিসেবে তারা দেশে-বিদেশে বদনাম কুড়িয়েছেন, এখন তাদের কর্মীরা আর এককভাবে মাঠে নামবে না। বিএনপির নেতাকর্মীরা মাঠে নামলেই কেবল তারা মাঠে নামবে। সরকার ও পুলিশ যা-ই বলুক, খালেদা জিয়া কার্যত অবরুদ্ধ অথবা গৃহবন্দি। বিএনপির অধিকাংশ শীর্ষস্থানীয় নেতানেত্রীই কারাগারে। বাকিদের পুলিশ তাড়া করছে গ্রেফতারের জন্য। জেলজুলুমের শিকার কর্মীরাও। দমনপীড়নের জন্য রাষ্ট্রযন্ত্রকে ইচ্ছামতো ব্যবহার করে সরকারের মন্ত্রীরা বলছেন, বিএনপি ব্যর্থ। বিএনপি ব্যর্থ হলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার কথা। বিরাজমান পরিস্থিতি কি তাই প্রমাণ করে?
বিএনপি নির্বাচন বর্জন ও হরতাল-অবরোধ ঘোষণার করার ফলে নির্বাচন কি দেশে ও বিদেশে বিশ্বাসযোগ্যতা ও গ্রহণযোগ্যতা পাবে? আন্দোলনে বিএনপির ব্যর্থতার চিত্রের পাশাপাশি এ চিত্রও রয়েছে। অপরদিকে, মহাজোটের দ্বিতীয় বৃহত্তম শরিক জাতীয় পার্টির প্রধান বৈরী এরশাদকেও আটক করে রেখে আওয়ামী লীগকে কেবল ক্ষীণকায় ওয়ার্কাস পার্টি ও জাসদের একাংশকে নিয়ে নির্বাচন করতে হচ্ছে। এ নির্বাচন আওয়ামী লীগের একক অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত হচ্ছে বলাটাই সমীচিন হবে। নিবন্ধিত ছোটবড় ৪১টি দলের মধ্যে ১১টি দল ছাড়া আর কেউ এ নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করছে না।
জাতিসংঘসহ যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং পাশ্চাত্যের নির্বাচন পর্যবেক্ষণ সংগঠনগুলো পর্যবেক্ষক দল না পাঠানোর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে ইতোমধ্যেই ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের গ্রহণযোগ্যতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। নির্বাচন কমিশনের চেষ্টায় অবশেষে সার্কভুক্ত কয়েকটি দেশের পর্যবেক্ষক দল আসবে বলে জানা গেছে। কাজেই পাশ্চাত্য দেশগুলোর আস্থা অর্জনে শেখ হাসিনাকে যে বিরাট চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হতে হবে, তাতে কোনো সন্দেহ নেই। ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সালমান খুরশিদও বাংলাদেশের নির্বাচন পরিস্থিতি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে তার দেশের বিরোধের কথা স্বীকার করেছেন।
তিনি বলেছেন, বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংকটের ব্যাপারে ভারতের যে অভিমত, সংকট সমাধানে যুক্তরাষ্ট্রকে বরং তা সাহায্যই করবে। সাপ্তাহিক দ্য ইকোনোমিস্ট সম্প্রতি বলেছে, ভারত হস্তক্ষেপ করলে বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংকটের সমাধান হতে পারে। কিন্তু ভারত হস্তক্ষেপ করবে না। ভারতের প্রভাবশালী ইংরেজি দৈনিক দ্য হিন্দু বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংকটের কথা উল্লেখ করে বলেছে, এতে করে বাংলাদেশ নিয়ে দিল্লির নীতি ভয়ানক চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বে। পত্রিকাটি মনে করে, বাংলাদেশের নির্বাচনের পর সহিংসতা আরও বাড়তে পারে। আর প্রশ্নবিদ্ধ নির্বাচনের মাধ্যমে যে সরকার সেখানে ক্ষমতায় আসছে, তাদের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক তখন আরও জটিল হয়ে পড়বে। আনন্দবাজার পত্রিকা বলেছে, যে রিপোর্টটি সাম্প্রতিক সাউথ ব্লকে পৌঁছেছে, তাতে বলা হচ্ছে, "এই নির্বাচনের মাধ্যমে যে সরকার গঠিত হবে তার সঙ্গে চূড়ান্ত অসহযোগিতার পথে হাঁটবে আমেরিকা ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন। বাংলাদেশের সামগ্রিক অর্থনীতির উপরে তার প্রভাব পড়তে বাধ্য।"
দিল্লি কর্তৃপক্ষ এটা বোঝার চেষ্টা করুক, আর না-ই করুক, সাধারণভাবে বাংলাদেশের জনগণের বদ্ধমূল ধারণা যে, তাদের (দিল্লির) আশির্বাদের কারণেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একতরফা নির্বাচন অনুষ্ঠানের ব্যাপারে অনড় অবস্থান গ্রহণ করেছেন। এতে এ দেশের মানুষের মধ্যে নতুন করে ভারতবিদ্বেষ দেখা দেবে। বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংকটের ব্যাপারে দিল্লির বর্তমান নীতি পরিস্থিতিকে আরও জটিলই করবে, দীর্ঘস্থায়ী সমাধান দেবে না– যা প্রতিবেশী হিসেবে তাদের জন্য স্বস্তিদায়ক হবে না।
জামায়াত-শিবিরের সহিংস আচরণের বিষয়ে ভারতের মিডিয়া যত হৈচৈ ও দিল্লি যত উদ্বেগ প্রকাশ করছে, তাতে মনে হয়, তারা বাংলাদেশের সংকট সমাধানের পরিবর্তে 'একটা পরিস্থিতি' সৃষ্টির ব্যাপারেই বেশি আগ্রহী। জামায়াতে ইসলামী একটি ক্যাডারভিত্তিক ধর্মীয় রাজনৈতিক দল, কিন্তু গণভিত্তি নেই। সাম্প্রতিক ঘটনাবলির সময়ও দেখা গেছে, তাদের এই শক্তি দেশের কয়েকটি এলাকার মধ্যে সীমাবদ্ধ। তবে ওইসব এলাকায় তাদের ব্যাপক জনসমর্থন রয়েছে, তা বলা যায় না। সারাদেশে তাদের জনসমর্থন চার থেকে সাড়ে চার শতাংশের বেশি নয়। সকল দলের অংশগ্রহণে নির্বাচন না হওয়ায় জামায়াত-শিবির শক্তির মহড়ার সুযোগ পেয়েছে। শক্তির মহড়ার ফলে জামায়াত-শিবিরের প্রতি জনসমর্থন বেড়েছে, এটাও ঠিক নয়, বরং তাদের প্রতি মানুষের সমর্থন-সহানুভূতি আরও কমেছে। দুই প্রধান দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপিসহ সকল দলের অংশগ্রহণে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলে নির্বাচনমুখী নেতাকর্মী ও জনগণই তাদের প্রতিহত করত।
কিন্তু বাংলাদেশের জনগণকে বন্ধু না ভেবে একমাত্র আওয়ামী লীগকে বন্ধু ভেবে ভারত যে ভুল নীতি গ্রহণ করেছে, আমাদের রাজনৈতিক দৃশ্যপটে তারই প্রতিফলন দেখছি। যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন যদি নির্বানোত্তর আওয়ামী লীগ সরকারের সঙ্গে অসহযোগিতা শুরু করে, তাহলে জাতিসংঘ ও বিশ্বব্যাংকসহ অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোও বাংলাদেশের প্রতি বিরূপ দৃষ্টিতে তাকাবে। বাংলাদেশ– পাকিস্তান ও আফগানিস্তান নয়। কিন্তু ভারত পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের সঙ্গে বাংলাদেশকে ব্র্যাকেট করে যে নীতি গ্রহণ করেছে, তার মাশুল একা বাংলাদেশ দেবে না, ভারতকেও দিতে হবে।
নির্বাচনের পর নতুন পরিস্থিতি সৃষ্টি হবে। নবম সংসদ থাকতেই গায়েবি পোশাকে দশম সংসদ ভূমিষ্ঠ। তবে নাম ধরে ডাকা যাবে না। এ জন্য অপেক্ষা করতে হবে ২৪ জানুয়ারি পর্যন্ত। নির্বাচিত হওয়ার পরও তারা এমপি নন। সংবিধান অনুসারে শপথ নেওয়ার পরই তাদের গায়ে লেবাস উঠবে, তখন তাদের এমপি নামে ডাকা যাবে। নবম সংসদ বিদায় হবে, দশম সংসদ গঠিত হবে।
দশম সংসদের বৈধতা ও গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে দেশ-বিদেশে যত প্রশ্নই থাকুক, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একটানা দ্বিতীয় মেয়াদের জন্য সরকার গঠন করবেন। রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যেই তার প্রথম যাত্রা শেষ, রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যেই তার দ্বিতীয় যাত্রা শুরু, তবে অনিশ্চয়তার দিকে। যাদের দ্বারা দশম সংসদ ও সরকার গঠিত হবে, তারা আমাদের অতি চেনা। 'নৌকার বাণিজ্য' করে গত পাঁচ বছরে তারা অস্বাভাবিক ধনদৌলতের মালিক হয়েছেন। নির্বাচনী ওয়াদা মোতাবেক তাদের নিয়েই শেখ হাসিনাকে 'সুশাসন' কায়েম করতে হবে। সংসদ সদস্যের ব্যক্তিগত কর্মকাণ্ডের স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার যে প্রতিশ্রুতি তিনি দিয়েছেন, তা আর প্রয়োজন হবে না। কেননা, মিডিয়ার কল্যাণে ইতোমধ্যেই জনগণ তাদের স্বচ্ছতার পরিচয় জেনে গেছে। সংসদে বিরোধীদলের আসনে কারা বসবেন, তা এখনও দৃশ্যমান নয়। তবে এবারও বিরোধীদলীয় নেতার আসনে একজন মহিলা বসতে পারেন। তিনি রওশন এরশাদ।
আগামী দিনগুলোতে চ্যালেঞ্জ কেবল শেখ হাসিনার নতুন সরকারের জন্যই অপেক্ষা করছে না, চ্যালেঞ্জ অপেক্ষা করছে বিরোধীদলগুলোর জন্যও। সরকারকে একই সঙ্গে মোকাবিলা করতে হবে প্রতিকূল রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও কূটনৈতিক অবস্থা। আর বিরোধীদলগুলোকে মোকাবিলা করতে হবে সরকারের রক্তচক্ষুর শাসন। ডিগবাজিতে অভ্যস্ত এরশাদ হয়তো আরোগ্যের সার্টিফিকেট নিয়ে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতাল থেকে মুক্তি পাবেন; কিন্তু খালেদা জিয়ার হয়তো আর মুক্ত বাতাস সেবনের সুযোগ হবে না, অঘোষিত গৃহবন্দি হিসেবেই দিন কাটাতে হবে। কারণ শেখ হাসিনার প্রতিদ্বন্দ্বী একমাত্র খালেদা জিয়াই। সরকারবিরোধী আন্দোলন যত বেগবান হবে, খালেদা জিয়ার বাসার চারপাশে পুলিশের সংখ্যা তত বাড়বে। যে আন্দোলন চলছে তা থামবে না, আরও জোরদার হবে। অতীতে একদলীয় রাজনৈতিক ব্যবস্থার যে কঠিন অভিজ্ঞতা, তা-ই আন্দোলনের দিকে তাড়া করবে সকল রাজনৈতিক নেতা, কর্মী ও গণতন্ত্রকামী মানুষকে।
শেখ হাসিনা দ্বিতীয় দফায় নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন যে, আবার সরকার গঠন করলে মানবতাবিরোধী অপরাধে অপরাধী সকলের মৃত্যুদ- কার্যকর করা হবে। এর বিরুদ্ধে জামায়াত-শিবির নতুন করে, হয়তো আরও ভয়ংকরভাবে সক্রিয় হয়ে উঠবে। পরিস্থিতি সামল দিতে তখন স্বাভাবিকভাবেই সরকারও ভয়ংকর রূপ ধারণ করবে। আনন্দবাজার পত্রিকার মতো রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহলের অনেকেই মনে করছেন, পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য তখন সরকারের সামনে জরুরি অবস্থা জারি করা ছাড়া আর কোনো উপায় থাকবে না। বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ড. ওয়াহিদ উদ্দিন মাহমুদ বলেছেন, বাংলাদেশের জন্য সম্ভাবনার দ্বার যখন খুলে গিয়েছে, তখন রাজনৈতিক সংকটের কারণে তা আবার বন্ধ হয়ে গেল।
তবে এতকিছুর পরেও সমাধানের পথ চিরতরে রুদ্ধ হয়ে যায়নি। এটা প্রধানতই নির্ভর করছে সরকারের সদিচ্ছা ও আন্তরিকতার উপর। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার নির্বাচনী প্রচারণার বক্তৃতায় একাধিকবার দশম সংসদের নির্বাচনের পর মধ্যবর্তী নির্বাচনের ইঙ্গিত দিয়েছেন। তিনি এখনই সে উদ্যোগ নিলে দেশ সম্ভাব্য ভয়াবহ বিপর্যয় থেকে উদ্ধার পেতে পারে। খালেদা জিয়া সাংবাদিকদের সামনে তার সর্বশেষ বক্তৃতায় বলেছিলেন, গণতন্ত্রে রাজনীতি হচ্ছে 'আর্ট অব কম্প্রোমাইজ (Art of Compromise)', অর্থাৎ সমঝোতার কৌশল। দেশবাসী আশা করে, তিনি তার সেই কৌশলেই আন্তরিক থাকবেন।
আমানুল্লাহ কবীর : সাংবাদিক ও কলামিস্ট। বিডিনিউজটোয়েন্টিফোর ডটকমের সিনিয়র এডিটর।