Published : 30 Dec 2023, 12:50 PM
বিএনপি নেতা জয়নুল আবদিন ফারুক বলেছেন, তার দল আগামী ৭ জানুয়ারির সংসদ নির্বাচন 'বর্জনের' ডাক দিয়েছে, ভোট 'প্রতিহত' করার কথা বলেনি।
নির্বাচনের আর এক সপ্তাহ বাকি থাকলেও বিএনপির পরবর্তী করণীয় ঠিক করতে ‘এখনো হাতে সময় আছে’ বলেও মনে করছেন দলের চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের এই সদস্য।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ফারুক বলেন, "আমরা জনগণকে এই ভোট বর্জনের কথা বলছি। বলছি ভোটের দিন ঘরে থাকুন, কেউ ভোট কেন্দ্রে যাবেন না। আমরা 'প্রতিহত' শব্দটা এখন বলছি না, আমরা জনগণকে সম্পৃক্ত করছি। আমরা কি করবে, এখনো সময় আমাদের আছে।”
শনিবার সকালে ঢাকায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এবং তোপখানা রোড়ে 'ভোট বর্জনের' লিফলেট বিতরণের আগে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলছিলেন ফারুক।
৭ জানুয়ারি ভোটে বিএনপি কী করবে- এ প্রশ্নের জবাবে সাবেক বিরোধী দলীয় প্রধান হুইপ ফারুক বলেন, "আমরা মনে করি, ৭ জানুয়ারি ২০১৪ সালের মত আরেকটি ভোটবিহীন নির্বাচন সরকার করবে। আমরা আন্দোলনে আছি, আমরা চেষ্টা করছি জনগণকে সম্পৃক্ত করে আন্দোলনে রাজপথে থাকতে, সরকারের একদলীয় নির্বাচনের প্রতিবাদ করে যাব।”
'একদলী ভোট’ বর্জনে সারাদেশের পাড়া-মহল্লা, শহর-গ্রাম-গঞ্জের মানুষ 'এক হয়েছে' বলেও দাবি করেন বিএনপির এই নেতা।
ফারুক বলেন, “সরকার ভাইয়ে ভাইয়ে যে এক দলীয় নির্বাচন করতে যাচ্ছে, সেই ৭ জানুয়ারির নির্বাচনে জনগণ অংশ গ্রহণ করবে না। কারণ আমরা আজকে পঞ্চম দিন লিফলেট বিতরণের কর্মসূচিতে পাড়া থেকে গ্রামে, গ্রাম থেকে শহরে যে অনুভূতিটা জনগণের কাছ থেকে পাচ্ছি, মানুষের কাছ থেকে পাচ্ছি, ভোটারের কাছ থেকে পাচ্ছি, তারা এই নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করবে না।”
ফারুকের ভাষ্য, "যারা এই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছে, তারা সবাই এক দলের বা এক দলের সমর্থক। তাদের নেতা এক, তাদের সভাপতি এক। সেই কারণে জনগণ এই প্রহসনের নির্বাচনে ভোট দিতে যাবে না।”
২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনের প্রসঙ্গ টেনে ফারুক বলেন, “২০১৮ সালে বিশ্বাস করে নির্বাচনে গিয়েছিলাম। সেই বিশ্বাস সরকার ভঙ্গ করেছে। তারা দিনের ভোট রাতে করে প্রমাণ করেছে যে, তারা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে না।
“১৮ সালে দিনের ভোট রাতে করেছে, সেই নির্বাচনের মত আরেকটা নির্বাচন করতে পারবে। কিন্তু আমি আগেই বলেছি, শুক্রবারের পর শনিবার আসে, রোববারের পর সোমবার আসে।”
বিএনপিসহ অধিকাংশ দল ২০১৪ সালের দশম সংসদ নির্বাচন বর্জন করে। কিন্তু ২০১৮ সালের নির্বাচনে বিএনপিসহ সব দলই অংশ নেয়। সেই নির্বাচনে ভোটের আগের রাতেই ব্যালটে সিল মেরে বাক্স ভরার অভিযোগ ওঠে। তাতে নির্বাচনের গ্রহণযোগ্যতা প্রশ্নবিদ্ধ হয়। সে কারণে আওয়ামী লীগের বর্তমান সরকারকে বিএনপি বলে ‘নিশিরাতের সরকার’।
গত দুই মাস ধরে দফায় দফায় হরতাল অবরোধ করলেও গত কয়েকদিন ধরে সারাদেশে গণসংযোগ ও লিফলেট বিতরণ করছে বিএনপি।
সরকারের পদত্যাগ, নির্বাচনকালীন নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা পুনঃপ্রতিষ্ঠা, নির্বাচনে বর্জন ও অসহযোগ আন্দোলনের পক্ষে এই গণসংযোগ কর্মসূচি চালাচ্ছে দলটি।
জাতীয়তাবাদী উলামা দলের নেতা-কর্মীদের নিয়ে জয়নুল আবদিন ফারুক পথচারী, দোকানদারসহ সাধারণ মানুষের হাতে লিফলেট তুলে দেন।
এছাড়া বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী উত্তরার ১২ ও ১৩ নম্বর সেক্টর, তুরাগ এলাকা এবং ধানমণ্ডির এলিফ্যান্ট রোডে নেতা-কর্মীদের নিয়ে লিফলেট বিতরণ করেন। সে সময় দলের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক নাসির উদ্দিন অসীম তার সঙ্গে ছিলেন।