Published : 18 May 2025, 11:05 PM
‘বামপন্থীরা দেশকে বনসাই বানিয়ে রাখতে চায় ও অন্তর্বর্তী সরকারের সব কিছু করবার এখতিয়ার আছে’ বলে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম যে বক্তব্য দিয়েছেন তার প্রতিবাদ জানিয়েছে বামপন্থী বিভিন্ন দলের দুই জোট।
সেই সঙ্গে প্রেস সচিবের বক্তব্যের বিষয়ে সরকারের কাছে ব্যাখ্যাও দাবি করেছে তারা।
রোববার বাম গণতান্ত্রিক জোট ও ফ্যাসিবাদবিরোধী বাম মোর্চা এক যৌথ বিবৃতিতে এই দাবি জানায়।
রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা না করে ‘মানবিক করিডোর’ ও চট্টগ্রাম বন্দরের টার্মিনাল পরিচালনার দায়িত্ব বিদেশিদের কোম্পানিকে দেওয়ার মত বিষয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের এখতিয়ার নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে জোট দুটি। সরকার এসব চুক্তির মাধ্যমে কার স্বার্থ রক্ষা করতে চাইছে? এই প্রশ্নও তুলেছে তারা।
বিবৃতিতে বলা হয়, “প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম সম্প্রতি একটি বেসরকারি টেলিভিশনে আলোচনায় অংশ নিয়ে বলেছেন—বামদের দ্বারা ইনফ্লুয়েন্সড হলে বাংলাদেশে জব হবে না, বাংলাদেশকে উনারা বনসাই বানিয়ে রাখতে চান।”
এই বক্তব্যকে একদেশদর্শী, পক্ষপাতদুষ্ট ও বিদ্বেষপ্রসূত আখ্যায়িত করে বিবৃতিতে বলা হয়েছে, তার এই বক্তব্যের ঐতিহাসিক কোনো ভিত্তি নেই।
“আমরা প্রেস সচিবের বক্তব্যের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। একইসঙ্গে প্রেসসচিবের এসব বক্তব্য নিয়ে সরকারের কাছে ব্যাখ্যা দাবি করছি।”
দুই জোট বলেছে, “চট্টগ্রাম বন্দর মার্কিন কোম্পানির কাছে লিজ দেওয়া, দেশের গ্যাস ভারতে রপ্তানি করা, ফুলবাড়ীর অসম কয়লা চুক্তির বিরোধিতা করা, রামপালে ভারতের কোম্পানির কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্রের বিরোধিতা করাসহ বহু দেশবিরোধী চুক্তির বিরোধিতা করে আন্দোলন করেছে বাম গণতান্ত্রিক শক্তি।
“বিগত ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগসহ যারাই দেশের জনগণের স্বার্থ বিদেশিদের কাছে বিকিয়ে দিয়েছে, দেশের স্বাধীন অর্থনৈতিক বিকাশ বাধাগ্রস্ত করতে চেয়েছে, বিদেশি কোম্পানির কমিশনভোগী, আমরা দেখেছি তারাই বামপন্থী শক্তিকে উন্নয়নবিরোধী বলে অ্যাখ্যায়িত করেছে।”
দুই জোট বলেছে, বিচার, সংস্কার, নির্বাচন আর রুটিন কাজ করার এখতিয়ার আছে শুধু এই সরকারের। সংস্কার করতে হলেও রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে ঐকমত্যের ভিত্তিতেই করতে হবে।
বিবৃতিতে স্বাক্ষরকারীরা মধ্যে আছেন-বামজোটের সমন্বয়ক ও বাংলাদেশের বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল কবির জাহিদ, সিপিবির সভাপতি শাহ আলম ও সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল- বাসদের সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশিদ ফিরোজ, বাসদের (মার্কসবাদী) কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক মাসুদ রানা, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির সাধারণ সম্পাদক মোশরেফা মিশু, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক পার্টির নির্বাহী সভাপতি আব্দুল আলী।
ফ্যাসিবাদী বিরোধী বাম মোর্চার সমন্বয়ক ও গণমুক্তি ইউনিয়নের সমন্বয়ক নাসির উদ্দিন আহম্মদ নাসু, বাংলাদেশের সাম্যবাদী আন্দোলনের আহ্বায়ক শুভ্রাংশু চক্রবর্তী, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ) এর সাধারণ সম্পাদক হারুনার রশিদ ভূঁইয়া, জাতীয় গণতান্ত্রিক গণমঞ্চের সমন্বয়ক মাসুদ খান, বাংলাদেশের সোশ্যালিস্ট পার্টির সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম।