Published : 07 Aug 2024, 11:52 AM
গণআন্দোলনে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর সাজা থেকে পুরোপুরি মুক্তি পাওয়া বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
এ সময় দেশের মানুষকে শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রেখে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়েছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া।
মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১১টায় এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে তাকে শুভেচ্ছা জানান ফখরুল। এ সময় দলীয় প্রধানকে দেশের সার্বিক পরিস্থিতি সম্পর্কে অবহিত করেন তিনি।
ফখরুল বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ম্যাডাম অসুস্থ। তাকে সব সময় আমরা দেশের পরিস্থিতি অবহিত করছি। তিনি দেশবাসীকে এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রেখে ঐক্যবদ্ধ থাকার জন্য বলেছেন।”
দুর্নীতির দুই মামলায় ১৭ বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিয়ে সোমবার প্রজ্ঞাপন জারি করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগ। সেখানে বলা হয়, সংবিধানের ৪৯ অনুচ্ছেদের ক্ষমতাবলে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার দণ্ড মওকুফ করেছেন।
আরও পড়ুন:
যেভাবে মুক্ত হলেন খালেদা জিয়া
শেখ হাসিনার পতন: দেশের অবস্থা খালেদা জিয়াকে জানালেন ফখরুল
এছাড়া বঙ্গভবনের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, তিন বাহিনী প্রধান, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের সোমবারের বৈঠকের সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে খালেদা জিয়াকেও মুক্তি দেওয়া হয়েছে।
এর আগে খালেদা জিয়া ২০২০ সাল থেকে সরকারের নির্বাহী আদেশে সাময়িক মুক্ত থাকলেও এখন দুর্নীতি মামলার সাজা থেকে থেকে পুরোপুরি মুক্তি পেলেন।
২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় পাঁচ বছরের সাজা দিয়ে কারাগারে পাঠানো হয় সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে। ওই বছরের অক্টোবরে হাই কোর্টে আপিল শুনানি শেষে সাজা বেড়ে হয় ১০ বছর।
এরপর জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায়ও আরও সাত বছরের সাজা হয় বিএনপি নেত্রীর। তিনি তখনও পুরান ঢাকার নাজিমউদ্দিন সড়কের কারাগারে ছিলেন।
বিএনপি বরাবরই বলে আসছে, আওয়ামী লীগ সরকারের প্রভাবে ‘মিথ্যা’ মামলায় তাদের নেত্রীকে কারাবন্দি করা হয়েছে তাকে রাজনীতি থেকে বিদায় করার জন্য।
দেশে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের পর পরিবারের আবেদনে ২০২০ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার নির্বাহী ক্ষমতা প্রয়োগ করে খালেদার দণ্ড ছয় মাসের জন্য স্থগিত করেন। ওই বছরের ২৫ মার্চ সাময়িক মুক্তি পেয়ে গুলশানের বাসা ফিরোজায় ফেরেন খালেদা। তখন থেকে তিনি সেখানেই আছেন।
এরপর থেকে পরিবারের আবেদনে প্রতি ছয় মাস পরপর বিএনপি নেত্রীর মুক্তির মেয়াদ বাড়িয়ে আসছিল শেখ হাসিনার সরকার। প্রতিবারই তাকে দুটি শর্ত দেওয়া হচ্ছিল। তাকে বাসায় থেকে চিকিৎসা নিতে হবে এবং তিনি বিদেশ যেতে পারবেন না।
খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন ধরে লিভার, কিডনি, ডায়াবেটিস, আর্থ্রাইটিস ও হৃদরোগে ভুগছেন। সাময়িক মুক্তির পর তাকে কয়েক দফা হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিতে হয়েছে।
তাকে বিদেশে পাঠানোর জন্য পরিবারের তরফ থেকে বেশ কয়েকবার আবেদন করা হলেও ওই শর্তের যুক্তি দিয়েই বার বার তা প্রত্যাখ্যান করেছে শেখ হাসিনার সরকার।
আরও পড়ুন:
খালেদা জিয়াকে 'মুক্তি' দেওয়ার সিদ্ধান্ত জানালেন রাষ্ট্রপতি