Published : 03 Jan 2025, 12:39 PM
এক মাস আগে বাবাকে হারানোর পর সংসার চালানোর হুসাইনকে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা কিনে দিয়েছিল স্বজনরা। কিন্তু সেই রিকশার জন্য প্রাণ দিতে হল ১৩ বছরের এ কিশোরকে।
শুক্রবার সকালে ফরিদপুরে শহরের এ কিশোরের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। পুলিশের ধারণা, ব্যাটারিচালিত রিকশা ছিনতাইয়ের জন্য গলায় দড়ি পেচিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে তাকে।
কোতোয়ালি থানার এসআই সনাতন কুমার বলেন, সকালে ফরিদপুরে শহরের ভাটি লক্ষ্মীপুরে একটি মহিলা মাদরাসার সীমানা দেয়ালের পাশে ফেলে রাখা লাশটি দেখতে পায় স্থানীয়রা।
নিহত হুসাইনের (১৩) বাড়ি শহরের চর টেপাখোলা ব্যাপারীপাড়ায়। ওই এলাকার খোকা ব্যাপারী ও শেফালী বেগমের চার সন্তানের মধ্যে একমাত্র ছেলে ও সবার ছোট ছিল হুসাইন। বড় তিন মেয়ের সবার বিয়ে হয়ে গেছে।
খোকা ব্যাপারী দিনমজুরি ও মাছ ধরা-বিক্রির কাজে সহায়তা করে সংসার চালাতেন। তাকে সহযোগিতার জন্য চর টেপুরাকান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে পঞ্চম শ্রেণির আর পড়াশোনা করতে পারেনি হুসাইন।
এর মাত্র মধ্যেই এক সপ্তাহ আগে মারা যান তার বাবা খোকা ব্যাপারী।
হুসাইনের চাচাতো ভাই ওবায়দুর রহমান বলেন, “চাচা মারা যাওয়ার পর মা-ছেলের উপার্জনের অবলম্বন হিসেবে আমরা আত্মীয়-স্বজনেরা হুসাইনকে একটি নতুন রিকশা কিনে দেই।
“সেই রিকশা নিয়ে সর্বশেষ বৃহস্পতিবার বিকালে বাসা থেকে বের হয়ে নিখোঁজ ছিল সে। রাতে বাড়িতে না ফেরায় এলাকায় মাইকিংও করা হয়।”
এরপর শুক্রবার সকালে লোক মারফত তার লাশ পাওয়া গেছে বলে তারা জানতে পারেন।
ঘটনাস্থলে সরেজমিনে দেখা যায়, গলায় দড়ি পেচানো হুসাইনের মরদেহের দুই হাত দুই পাশে মেলে রাখা। নাক দিয়ে ফেনিল জাতীয় কিছু এসে জমে রয়েছে। আশেপাশে জড়ো হয়েছেন উৎসুক জনতা।
একটি রিকশার জন্য অসহায় কিশোরকে এভাবে হত্যার ঘটনায় শোকাহত-নির্বাক তারা।
এসআই সনাতন জানান, লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। পুলিশের পাশাপাশি সিআইডির ক্রাইম সিনের টিম ঘটনা তদন্ত করছে। আশা করছি দ্রুতই জড়িতদের চিহ্নিত করে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হবে।