Published : 27 Feb 2025, 12:24 AM
ফেনীর দাগনভূঞায় প্রতিপক্ষের মারধরে আহত সাবেক যুবদল নেতা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন।
বুধবার রাতে উপজেলার পপুলার নামে একটি বেসরকারি হাসপাতালে তার মৃত্যু হয় বলে দাগনভূঞা থানার ওসি লুৎফুর রহমান জানান।
নিহত বেলাল হোসেন (৫০) দাগনভূঞা উপজেলার পূর্বচন্দ্রপুর ইউনিয়নের প্রতাপপুর গ্রামের খলিল ভূঞা বাড়ির আবু বকর ছিদ্দিকের ছেলে। বেলাল বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। তিনি পূর্ব চন্দ্রপুর ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ড যুবদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ছিলেন বলে দাগনভূঞা উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি নিজাম উদ্দিন ভূঞা হুদন জানান।
স্থানীয়দের বরাতে ওসি লুৎফুর রহমান বলেন, বেলাল মানসিকভাবে কিছুটা অসুস্থ ছিলেন। রোববার তার এক প্রতিবেশির সঙ্গে পূর্ব বিরোধ নিয়ে বেলালের তর্ক হয়। প্রতিবেশি তার লোকজন ডেকে বেলালকে মারধর করেন।
নিহতের স্বজন, প্রত্যক্ষদর্শী ও বিএনপির নেতাকর্মীরা জানান, ওইদিন সকালে বাড়ির সামনে সড়কের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন বেলাল হোসেন। এ সময় প্রতিবেশি খোরশেদের সঙ্গে আগের বিরোধ নিয়ে তার তর্ক হয়। একপর্যায়ে খোরশেদ আরো কয়েকজনকে ডেকে লাঠিসোঁটা নিয়ে বেলালের ওপর হামলা চালায়। তারা এলোপাতাড়ি মারধর করে অজ্ঞান অবস্থায় বেলালকে পাশের জমিতে ফেলে দেন।
পরে স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে দাগনভূঞা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। পরদিন সোমবার অবস্থার অবনতি হলে সেখান থেকে তাকে দাগনভূঞা পপুলার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বুধবার রাতে বেলাল মারা যান।
দাগনভূঞা পপুলার হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার আনোয়ার হোসেন মাহাদী বলেন, “বেলালকে যে মারধর করা হয়েছে তা গোপন রেখেই রোগীর স্বজনরা আমাদের হাসপাতালে ভর্তি করেন। পরে একাধিক রিপোর্ট হাতে পেলে রোগীর পেটে গ্যাসের সমস্যা ও ফুসফুসে ইনফেকশন দেখতে পাই। আমরা হাসপাতাল থেকে তার মুখে খাবার বন্ধ করে নল দিয়ে খাবার দিয়ে থাকি। বুধবার বিকালে রোগীর মেয়ে আমাকে জানায়, তার বাবাকে মারধর করা হয়েছে, ফলে তার পুরো শরীরে ব্যথা। পরে তাকে হালকা ব্যথার ওষুধ দেওয়া হয়। রাতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।”
নিহতের মেয়ে সুমাইয়া আক্তার বলেন, “পূর্ব বিরোধের জেরে হামলাকারীরা আমার বাবাকে পিটিয়ে আহত করে। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় আমরা মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছি।”
দাগনভূঞা উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি নিজাম উদ্দিন ভূঞা বলেন, “নিহত বেলাল বিএনপির ত্যাগী কর্মী। তাকে যারা মারধর করেছে, তাদের মধ্যে একজন যুবলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। আমি এ হত্যাকাণ্ডের সঠিক বিচার দাবি করছি।”
দাগনভূঞা থানার ওসি লুৎফুর রহমান বলেন, “ময়নাতদন্তের জন্য বেলালের মরদেহ ফেনী ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে নিহতের শরীরে একাধিক আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। লিখিত অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”