Published : 30 Jun 2025, 07:49 PM
বেআইনি ছাঁটাই ও অতিরিক্ত কাজের চাপ বন্ধ করার দাবিতে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের নিচে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন গাজীপুরের অনন্ত ক্যাজুয়াল ওয়্যার লিমিটেডের শ্রমিকরা।
সোমবার সকাল ৯টা থেকে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত টঙ্গীর আই আর আই রোডের ওই প্রতিষ্ঠানের নিচে তারা অবস্থান নেন। পরে কলকারখানা কর্তৃপক্ষের প্রতিনিধি ওই কারখানার মালিক পক্ষের সঙ্গে কথা বলে প্রতিশ্রুতি দিলে শ্রমিকরা অবস্থান থেকে সরেন।
অনন্ত ক্যাজুয়াল ওয়্যার লিমিটেড গাজীপুর মহানগরীর কুনিয়া (তারগাছ) এলাকায় স্থাপিত।
অবস্থানকারী শ্রমিকদের ভাষ্য, তারা জানতে পেরেছেন, মালিকপক্ষ কারখানাটি বন্ধ করে দেবে। সেলক্ষ্যে গত এক মাসে অন্তত আট শতাধিক শ্রমিক ছাঁটাই করে একটি ফ্লোর খালি করে ফেলেছে।
রোববার দুপুর ১২টা পর্যন্ত শ্রমিকরা কারখানায় কাজ করেন। বেআইনি ছাঁটাই, অতিরিক্ত কাজের চাপ ও জোর করে চাকরি থেকে অব্যাহতি বন্ধ করার দাবিতে দুপুরের পর কাজ বন্ধ রাখেন তারা।
এ অবস্থায় কারখানা কর্তৃপক্ষ রোববার বিকালে ছুটির নোটিস টানিয়ে দেয়।
নোটিসে তারা উল্লেখ করে, সোমবার স্ব বেতনে কারখানার সব সেকশনে সাধারণ ছুটি থাকবে।
মঙ্গলবার থেকে কারখানার সব শ্রমিককে যথা সময়ে কাজে যোগ দিতে বলা হয়েছে ওই নোটিসে।
কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের সহকারী মহা পরিদর্শক মোতালেব মিয়া বলেন, “শ্রমিদের দাবি ছিল, মালিকপক্ষ থেকে জোরে করে শ্রমিক ছাঁটাই এবং অতিরিক্ত কাজের চাপ বন্ধ করা। তাদের দাবির বিষয়ে আমরা কারখানা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করেছি। শ্রমিকদের ওপর অতিরিক্ত কাজ যেন চাপিয়ে না দেওয়া হয়; তাদের যতটুকু সক্ষমতা আছে, সেভাবে যেন কারখানার উৎপাদন কার্যক্রম পরিচালনা করে, এই মর্মে মালিক পক্ষের স্বীকারোক্তি নিয়ে শ্রমিকদের পড়ে শোনালে তারা দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে চলে যায়।”
অনন্ত ক্যাজুয়াল ওয়্যার লিমিটেড কারখানার ব্যবস্থাপক (প্রশাসন ও মানব সম্পদ) বদর উদ্দিনের মোবাইল ফোনে একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি রিসিভ না করায় এ বিষয়ে কর্তৃপক্ষের কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
গার্মেন্টস শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র গাজীপুরের জেলা শাখার সভাপতি জিয়াউল কবীর খোকন বলেন, “অনন্ত ক্যাজুয়াল ওয়্যার লিমিটেড বিনা নোটিসে শ্রমিক ছাঁটাই করে। যদিও শ্রম আইন অনুযায়ী ছাঁটাই শ্রমিকদের পাওনা পরিশোধ করে দিয়েছে কারখানা কর্তৃপক্ষ। তবে শ্রমিকরা ছাঁটাই চায় না, চাকরি চায়।”
তিনি আরো বলেন, “গত এক মাসে ৮১৫ জন শ্রমিক ছাঁটাই করেছে ওই কারখানা। যাদের জোর করে ছাঁটাই করছে, তাদের সংসার চালানোর কোনো পথ রইল না।”
এ বিষয়ে গাজীপুর শিল্প পুলিশের পরিদর্শক হাবিল বলেন, “রোববার শ্রমিকরা কাজ না করে কারখানায় অবস্থান করেছে। ওই ঘটনায় কারখানা কর্তৃপক্ষ এদিন বিকালে কারখানা ছুটি ঘোষণা করে। আজকেও শ্রমিকরা তাদের দাবি নিয়ে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের নিচে সাড়ে ৩ ঘণ্টা অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন।”