Published : 21 Aug 2024, 05:04 PM
ভারি বৃষ্টিপাত ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে বেড়েই চলেছে হবিগঞ্জের নদ-নদীর পানি।
জেলার খোয়াই ও কুশিয়ারা নদীর পানি বিভিন্ন পয়েন্টেই বিপদসীমা অতিক্রম করেছে। যে কারণে নদী পাড়ের বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। বাঁধের ভাঙন ঠেকাতে রাত জেগে কাজ করেছেন তারা।
এর মধ্যে গত বন্যায় শহরতলীর জালালাবাদ এলাকার বাঁধের ভাঙা অংশ দিয়ে পানি প্রবেশ করে প্লাবিত হয়েছে বিভিন্ন এলাকা।
হবিগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী, বুধবার দুপুর পর্যন্ত খোয়াই নদীর পানি চুনারুঘাটের বাল্লা পয়েন্টে বিপৎসীমার ১৯৯ সেন্টিমিটার ওপর, শায়েস্তাগঞ্জ পয়েন্টে ১২০ এবং শহরের মাছুলিয়া পয়েন্টে বিপৎসীমার ১৯৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়।
অন্যদিকে, কুশিয়ারা নদীর পানি আজমিরীগঞ্জ ও মার্কুলি পয়েন্টে ৯ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী হাবিবুর রেজা জানান, সোমবার সারাদিন ও মঙ্গলবার রাত থেকে বৃষ্টি অব্যাহত থাকায় বৃদ্ধি পাচ্ছে খোয়াই ও কুশিয়ারা নদীর পানি। এর মধ্যে শহরের জালালাবাদ এলাকায় বাঁধের ভাঙ্গা অংশ দিয়ে রাতেই লোকালয়ে প্রবেশ করে পানি। এতে কয়েকটি গ্রাম প্লাবিত হয়ে ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতি হয়।
স্থানীয়রা জানান, মঙ্গলবার রাতে প্রবল বর্ষণে খোয়াই ও কুশিয়ারা নদীর পানি বৃদ্ধি পেতে থাকলে মাইকিং করে বিষয়টি এলাকাবাসীকে জানানো হয়। এতে গ্রামবাসী রাতেই দা-কোদাল নিয়ে বাঁধ মেরামত করতে নেমে পড়েন। খোয়াই নদীর চরহামুয়া-কালিগঞ্জ এলাকায় ভাঙ্গনের সম্ভাবনা দেখা দিলে রাত জেগে বাঁধে কাজ করেন স্থানীয়রা।
চরহামুয়া গ্রামের আমির হোসেন বলেন, “খোয়াই নদীর পানি উপরে উঠে আসলে বাঁধে গর্তের সৃষ্টি হয়, আমরা তাৎক্ষণিক এলাকাবাসীকে অবগত করি। পরে সবাই মিলে গর্ত ভরাটের কাজ করি।”
একই এলাকার নাজমুল মিয়া বলেন, “খোয়াই নদীর চরহামুয়া এলাকায় ভাঙনের সম্ভাবনা রয়েছে বলে মাইকিং করা হয়। এতে আমরা ভাঙন মেরামত কাজে ছুটে যাই।”
জালালাবাদ বাঁধ এলাকার বাসিন্দা মীর কাদির মিয়া বলেন, “গত বন্যার সময় নদীতে পানি আসলে জালালাবাদ এলাকার বাঁধটি ভেঙে যায়। এবার প্রবল বর্ষণে খোয়াই নদীতে পানি ঢুকলে ওই ভাঙন দিয়ে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করছে। এতে অনেক ক্ষয়-ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে।”
এছাড়াও টানা বৃষ্টি অব্যাহত থাকার কারণে হবিগঞ্জ শহরের অলিগলিতেও জলযটের সৃষ্টি হয়েছে। আর এতে করে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে সাধারণ মানুষদের।
হবিগঞ্জ জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী শামীম হাসনাইন মাহমুদ জানান, বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকায় এবং উজানের পানি নেমে আসায় নদ-নদীতে পানি বাড়ছে। বৃষ্টিপাত কমে আসলেই পানি কমে যাবে।