Published : 09 Jan 2024, 05:00 PM
টাঙ্গাইল সদর উপজেলায় দুধ দিয়ে আওয়ামী লীগ কার্যালয় ধুয়েমুছে সেখান থেকে নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর ব্যানার সরিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে বিজয়ী সংসদ সদস্যের ছবি সম্বলিত ব্যানার টানানোর অভিযোগ ওঠেছে।
টাঙ্গাইল-৫ আসনের আওয়ামী লীগের প্রার্থী মামুন-অর-রশিদ বলেন, “পোড়াবাড়ী বাজারে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের কার্যালয় রয়েছে। ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. জহিরুল ইসলাম দুধ দিয়ে সেই কার্যালয় ধুয়েমুছে নৌকার প্রার্থীর ব্যানার খুলে ঈগলের প্রার্থী ছানোয়ার হোসেনের ব্যানার লাগিয়েছেন।
“এ ছাড়া স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থকরা নৌকার কর্মী ও অনুসারীদের বাড়িঘরে হামলা, মামলা ও হুমকি দিচ্ছেন”, বলেন পরাজিত মামুন।
মঙ্গলবার দুপুরে টাঙ্গাইল প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এই অভিযোগ করেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী।
টাঙ্গাইল সদর আসনে দুইবারের সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ছানোয়ার হোসেন দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন পাননি। এখানে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য অ্যাডভোকেট মামুনুর রশিদ মামুনকে। তিনি টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক।
রোববারের ভোটের বেসরকারি ফলাফল অনুযায়ী, ছানোয়ার হোসেন ঈগল প্রতীকে ৭২ হাজার ২৭৬ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে বিজয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগ প্রার্থী মামুন অর রশিদ নৌকা প্রতীকে পেয়েছেন ৬৫ হাজার ৮৬৭ ভোট।
ভোটের দুদিন বাদে সংবাদ সম্মেলন মামুন-অর-রশিদ বলেন, “প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাকে সদর আসনে নৌকার মনোনয়ন দিয়েছিলেন। কিন্তু স্বতন্ত্র প্রার্থী ছানোয়ার হোসেন কালো টাকা ছড়িয়ে তার সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে নৌকার নেতাকর্মীদের হুমকি-ধামকি দিয়ে তার পক্ষে কাজ করিয়েছেন। তিনি নির্বাচিত হওয়ার পর উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে আমার সমর্থক নেতাকর্মীদের ওপর হামলা-মামলা ও হুমকি-ধামকি দিয়ে যাচ্ছেন। আওয়ামী লীগের অনেক নেতাকর্মী বর্তমানে বাড়ি ছাড়া। আমি এর প্রতিবাদ জানাই।”
তিনি আরও বলেন, “গালা ইউনিয়নের সূত্রধরপাড়ায় সাধন চন্দ্র, ঘারিন্দা ইউনিয়নের বড়রিয়া গ্রামের স্বাধীন, মগড়ার চৌরাকররা গ্রামের স্বাধীন, মাজেদুর, শামীমসহ নৌকার অসংখ্য নেতা কর্মীকে হুমকি ও মারধর করছেন এমপি ছানোয়ারের নেতাকর্মীরা।”
এসব ঘটনায় পৃথকভাবে থানায় অভিযোগ দেওয়া হয়েছে উল্লেখ করে মামুন-অর-রশিদ বলেন, অবিলম্বে জড়িতদের আইনের আওতায় এনে শাস্তির দাবি জানাই।
সংবাদ সম্মেলনে জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সুভাষ চন্দ্র সাহা, উপ-দপ্তর সম্পাদক আনন্দ মোহন দে, বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক বদিউজ্জামান ফারুক, মহিলা বিষয়ক সম্পাদক শামীমা আক্তার, সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক এলেন মল্লিক, যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক এহসানুল ইসলাম আজাদ, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ফারুক হোসেন মানিক, শহর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এম এ রৌফ উপস্থিত ছিলেন।
এ সময় সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ফারুক হোসেন মানিক বলেন, “জহিরুল স্বতন্ত্র প্রার্থীর নির্বাচন করেছেন তাতে কোনো আপত্তি নেই। আওয়ামী লীগের কার্যালয় তিনি দুধ দিয়ে ধুয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থীর ছবি লাগানোর কারণে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”
পোড়াবাড়ী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জহিরুল ইসলাম বলেন, “আমি ঈগলের নির্বাচন করেছি। তবে অফিস দুধ দিয়ে পরিষ্কার করিনি। আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অপবাদ দেওয়া হয়েছে।”
নবনির্বাচিত সংসদ সদস্য ছানোয়ার হোসেন বলেন, “আমার কোনো সন্ত্রাসী বাহিনী ও কালো টাকা নেই। কোনো প্রকার কালো টাকা ছড়াইনি আমি। নৌকার প্রার্থী কালো টাকা ছড়ানোর কারণে আমি ভোট কম পেয়েছি। তা নাহলে আমি আরও অনেক বেশি ভোট পেতাম।”