Published : 06 Dec 2024, 07:53 PM
বকেয়া মজুরি প্রদান ও বিভিন্ন দাবি বাস্তবায়নের আশ্বাসে বৃহস্পতিবার থেকে কাজে যোগ দেওয়ার কথা থাকলেও বেতন না পাওয়ায় কাজে ফেরেননি ন্যাশনাল টি কোম্পানি-এনটিসির শ্রমিকেরা।
শ্রমিকদের মজুরি তিন মাস ধরে বন্ধ রয়েছে। বুধবার তাদের বকেয়া মজুরির প্রথম কিস্তি প্রদানের কথা ছিল। তবে বেতন না পেলে কেউ কাজে যোগ দেবেন না বলে জানিয়েছেন শ্রমিক নেতারা।
শুক্রবার সন্ধ্যায় এনটিসির মহাব্যবস্থাপক এমদাদুল হক বলেন, “বাংলাদেশ ব্যাংকের একটি সই বাকি থাকার কারণে বুধবার বেতন দেওয়া যায়নি। আগামী রোববার সই হওয়ার পরই বকেয়া বেতন দিয়ে দেওয়া হবে। এ জন্য সবকিছু রেডি করা আছে। আর সোমবার থেকে শ্রমিকেরা বাগানের কাজে যোগ দেবেন।”
তিনি বলেন, “দীর্ঘ বছর ধরে বাগানের সঙ্গে যুক্ত থাকার কারণে চা শ্রমিকদের কষ্ট আমরা বুঝি, এই অবস্থার কারণে আমরা সবাই কষ্টে আছি। শ্রমিকদের কষ্টের বিষয়ে আজও এমডির সঙ্গে কথা হয়েছে। আমাদের চার মাসের বেতন বকেয়া পড়েছে।”
মজুরি না পেয়ে ন্যাশনাল টির শ্রমিকদের দিন কাটছে 'খেয়ে না খেয়ে'
বকেয়া পরিশোধের আশ্বাস, কাজে ফিরছেন ন্যাশনাল চা বাগানের শ্রমিকরা
সোমবার এমদাদুল হক জানিয়েছিলেন, রোববার শ্রীমঙ্গলে এক সভায় বকেয়া বেতনের বিষয়টি নিয়ে সমাধান হয়েছে। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বুধবার শ্রমিকদের দুই সপ্তাহের বকেয়া বেতন পরিশোধ করা হবে। বাকি বেতন পর্যায়ক্রমে দেওয়া হবে। বৃহস্পতিবার থেকে কাজে ফিরবেন শ্রমিকরা।
তবে সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বকেয়া বেতন মেলেনি।
বাংলাদেশ চা-শ্রমিক ইউনিয়নের সিলেট ভ্যালির সভাপতি ও কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক রাজু গোয়ালা বলেন, “শ্রমিকদের আর বুঝিয়ে রাখা যাচ্ছে না। সিলেট বিভাগের ১২টি বাগানে বেতন বন্ধ রয়েছে। কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে ব্যাংক থেকে টাকা পাস হয়নি। রোববার টাকা পাস হলে, বকেয়া দিয়ে দেবে।”
তবে রোববার বেতন না দিলে কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
সিলেটের লাক্কাতুরা চা বাগানের পঞ্চায়েত সভাপতি শিতু লোহার বলেন, “বুধবার দুই সপ্তাহের বকেয়া বেতন দেওয়ার কথা ছিল, কিন্তু দেয়নি। এখন কোম্পানির লোকজন বলছে রোববার বেতন দেবে। তবে বকেয়া না দিলে যা করা লাগে শ্রমিকরা করবে। এভাবে আর থাকা সম্ভব হচ্ছে না।”
সিলেটের লাক্কাতুরা, কেওয়াছড়া ও দলদলি এই তিনটি বাগানসহ এনটিসির অধীন বাকি বাগান মিলে প্রায় ১৫ হাজার শ্রমিক রয়েছেন। আর তাদের ওপর নির্ভরশীল অন্তত ৫০ হাজার মানুষ। তিন মাস ধরে বেতন বকেয়া থাকায় সবাই কষ্টে দিন কাটাচ্ছেন।