বিদ্যুৎস্পৃষ্ট ছেলেকে বাঁচাতে গিয়ে প্রাণ গেল মায়েরও

চোখের সামনে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ছটফট করছিল ছেলে। তাকে জড়িয়ে ধরে বাঁচানোর চেষ্টা করেন মা। কিন্তু শেষ পর্যন্ত বিদ্যুৎস্পৃষ্টে ছেলের সঙ্গে প্রাণ গেল মায়েরও।

শনিবার সকাল ৯টার দিকে লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলার গোড়ল ইউনিয়নের দুলালী গ্রামে এ ঘটনা ঘটে বলে জানান কালীগঞ্জ থানার ওসি সেলিম মালিক।

নিহতরা হলেন- ওই গ্রামের প্রয়াত তৈয়ব আলীর স্ত্রী কমলা বেওয়া (৫০) এবং তার একমাত্র ছেলে জামাল হোসেন (৩০)। এ সময় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে প্রাণ গেছে একটি গরুরও।

প্রতিবেশী শরিফুল ইসলাম বলেন, প্রতিদিনের মত সকালে ঘরের এক কোনে রাখা অটোরিকশা চার্জে দিয়েছিলেন জামাল। পাশে বাঁধা ছিল একটি গরু। হঠাৎ সেই চার্জার থেকে বিদ্যুৎ ছড়িয়ে পড়ে গরুটির শরীরে। শুরু হয় ছটফটানি। গরুটিকে বাঁচাতে ছুটে যান জামাল। ধরতেই বিদ্যুৎ প্রবাহ ছড়িয়ে পড়ে তার শরীরেও।

ছেলেকে বাড়িতে দেখতে না পেয়ে খোঁজা শুরু করেন মা কমলা। ছেলের খোঁজে গোয়ালঘরে গিয়ে দেখেন, ছেলে গরুর ওপর পড়ে আছে। এগিয়ে গিয়ে ছেলের শরীরে হাত রাখতেই তার আর্তনাদ ছড়িয়ে পড়ে আশপাশে। তবে সঙ্গে সঙ্গে থেমে যায় তার প্রাণের স্পন্দনও।

তিনি বলেন, চিৎকার শুনে ছুটে যান জামালের বোন। বিদ্যুতের মেইন সুইচ বন্ধ করতে গিয়ে সুইচের হাতল ভেঙে ফেলেন তিনি। তার চিৎকারে শরিফুল গিয়ে বাঁশের সাহায্যে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেন। ততক্ষণে মারা যান মা, ছেলে ও গরু।

দুলালী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তপন চন্দ্র রায় বলেন, মর্মান্তিক এ ঘটনায় একটি পরিবারের দুটি তরতাজা প্রাণ অকালে ঝড়ে গেল। এ ঘটনায় পুরো এলাকার মানুষ শোকাহত।

গোড়ল পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ এসআই মোস্তাকিন ইসলাম বলেন, ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে। পরিবারটিকে স্থানীয়ভাবে সহায়তা করার জন্য বলা হয়েছে।

কালীগঞ্জ থানার ওসি সেলিম মালিক বলেন, পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো অভিযোগ না থাকায় লাশ দাফনের অনুমতি দেওয়া হয়েছে।