Published : 05 Apr 2025, 05:05 PM
নারায়ণগঞ্জে ব্রহ্মপুত্র নদের তীরে মহাতীর্থ লাঙ্গলবন্দ স্নানোৎসব উপলক্ষে দেশি-বিদেশি লাখো পুণ্যার্থীর ঢল নেমেছে৷
এবার বন্দর ও সোনারগাঁ উপজেলার ব্রহ্মপুত্র নদের তীরে প্রায় তিন কিলোমিটার জুড়ে বিশটি ঘাটে পুণ্যস্নানের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছেন লাঙ্গলবন্দ স্নানোৎসব উদযাপন কমিটির উপদেষ্টা জয় কে রায় চৌধুরী৷
উদযাপন কমিটির সূত্রে জানা যায়, শনিবার রাত ২টা আট মিনিটে স্নানের লগ্ন শুরু হয়৷ এর আগে থেকেই নদের দুই তীরে পুণ্যার্থীদের আগমন শুরু হয়, যা ভোর থেকে বাড়ে৷ স্নানোৎসব চলবে রোববার রাত পৌনে ১টা পর্যন্ত।
আয়োজকরা জানান, মন্ত্র পাঠ করে ফুল, বেলপাতা, ধান, দুর্বা, হরিতকী, ডাব, আম্রপল্লব নিয়ে পুণ্যার্থীরা স্নানে অংশ নেন। তাদের উলুধ্বণিতে মুখর হয়ে উঠে প্রতিটি স্নানঘাট।
এ বছর উৎসবে অন্তত দশ লাখ মানুষের সমাগম ঘটেছে বলে জানিয়েছেন কমিটির উপদেষ্টা জয় কে রায় চৌধুরী৷
কন্যা ও ছেলের স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে রাজঘাটে স্নানপর্ব সেরেছেন ৬৩ বছরের রীতা রানি সরকার৷ তিনি বলেন, পুণ্যস্নান শেষে তিনি নিজের আরোগ্য এবং পরিবারের সকলের সুস্বাস্থ্য কামনা করেছেন৷
কুমিল্লার তপন দাস বলেন, “পরিবারের সবাইকে নিয়ে এসেছি৷ স্নানের পর মনে প্রশান্তি পাইছি৷ প্রার্থনা করেছি যেন ঈশ্বর সকলের মঙ্গল করেন৷”
সড়কপথে যানজটে ভোগান্তির কথাও জানান পুণ্যার্থীরা৷
শনিবার দুপুরে স্নানোৎসব পরিদর্শনে আসেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী৷
তিনি জেলা প্রশাসক জাহিদুল ইসলাম মিঞা ও জেলা পুলিশ সুপার প্রত্যুষ কুমার মজুমদারসহ স্থানীয় প্রশানসিক কর্মকর্তাদের নিয়ে কয়েকটি ঘাট পরিদর্শন করেন এবং পুণ্যার্থীদের সঙ্গে কথা বলেন৷
বিগত বছরগুলোতে সহযোগী হিসেবে থাকলেও এবার স্নানোৎসবের আয়োজক ছিল নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসন৷
সনাতন ধর্মাবলম্বীদের শাস্ত্র মতে, দেবতা পরশুরাম হিমালয়ের মানস সরোবরে গোসল করে পাপমুক্ত হন। লাঙ্গল চষে হিমালয় থেকে এ পানিকে ব্রহ্মপুত্র নদরূপে নামিয়ে আনেন সমতলে। পৌরাণিক এ বিশ্বাসকে কেন্দ্র করে প্রতি বছর চৈত্র মাসের এ দিনে সনাতন ধর্মাবলম্বী লাখো নারী-পুরুষ পুণ্যলাভের আশায় জড়ো হন ব্রহ্মপুত্র নদের তীরে।