Published : 17 Dec 2024, 10:32 PM
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদরে জাতীয় নাগরিক কমিটির কেন্দ্রীয় তিন নেতার ওপর হামলার ঘটনায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। এ ঘটনায় আইনজীবী এবং নাগরিক কমিটি পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি পালন করেছে।
মঙ্গলবার সকালে জেলা আইনজীবী সমিতি সংবাদ সম্মেলন করার পর দুপুরে শহরে বিক্ষোভ মিছিল করে জাতীয় নাগরিক কমিটি। এ সময় আদালত এলাকায় উত্তেজনা দেখা দেয়।
রোববার আইনজীবী ও তাদের সহযোগীদের পরিকল্পিত হামলার শিকার হন বলে দাবি করেছেন নাগরিক কমিটির কেন্দ্রীয় যুগ্ম মুখ্য সংগঠক মো. আতাউল্লাহ।
তবে আইনজীবী সমিতির নেতারা বলছেন, সালিশ সভায় বাদী-বিবাদী পক্ষের মধ্যে হওয়া মারামারির সময় জাতীয় কমিটির এক নেতা আহত হয়েছেন।
সকালে আইনজীবী সমিতি ভবনে সংবাদ সম্মেলনে সমিতির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মো. ইউনুছ সরকার বলেন, “নাগরিক কমিটির কেন্দ্রীয় যুগ্ম মুখ্য সংগঠক মো. আতাউল্লাহ ক্ষমতার অপব্যবহার করে আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য বি এম ফরহাদ হোসেনের ঘনিষ্ঠজন আসাদুজ্জামান খোকনকে সোমবার জামিন করান।
চট্টগ্রাম আদালতে দায়ের হওয়া মামলার নথি ব্রাহ্মণবাড়িয়া এনে বিচারককে চাপ প্রয়োগ করে জামিন করিয়েছেন, যা নজিরবিহীন ঘটনা বলে দাবি করেছেন তিনি।
তিনি বলেন, “কসবার একটি পারিবারিক সালিশ করার জন্য বাদীপক্ষের হয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান বাবুলের কক্ষে যান। সেখানে সালিশ হওয়া না হওয়া নিয়ে বাদী ও বিবাদী পক্ষের মধ্যে হওয়া মারামারিতে টেবিলের গ্লাসে লেগে পড়ে গিয়ে একজন আহত হন।
“বিষয়টি তাৎক্ষণিকভাবে ফেইসবুকে লাইভ করে অপপ্রচার চালানো শুরু হয়। পরে তাদের পক্ষ নিয়ে কয়েকজন এসে মফিজুর রহমান বাবুলের কক্ষে ভাঙচুর চালায়।”
তবে মফিজুর রহমান বাবুল কোনো পক্ষেরই আইনজীবী নন বলে সংবাদ সম্মেলনে জানান মো. ইউনুছ সরকার।
এদিকে দুপুরে হামলার ঘটনায় জড়িতদের বিচার দাবিতে পৌর এলাকার কাউতলীর সড়ক ভবনের সামনে থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করে জাতীয় নাগরিক কমিটি।
মিছিলটি জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে গিয়ে অবস্থান নেয়। সেখানে মফিজুর রহমান বাবুলকে জেলা আওয়ামী লীগের আইনবিষয়ক সম্পাদক উল্লেখ করে তাকে গ্রেপ্তারের দাবিতে স্লোগান দেন বিক্ষোভকারীরা।
পরে পুলিশ তাদেরকে সেখানে আটকে দেয়। এক পর্যায়ে মিছিল নিয়ে ফেরার পথে সার্কিট হাউজের ভেতরের রাস্তা দিয়ে তারা আবার আদালত এলাকায় প্রবেশের চেষ্টা করেন। পুলিশের বাধার মুখে তারা অবস্থান কর্মসূচি ঘোষণা করেন। মফিজুরকে গ্রেপ্তার না করা পর্যন্ত অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন বিক্ষোভকারীরা।
সন্ধ্যায় প্রেস ক্লাবে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলন থেকে নাগরিক কমিটির নেতা আতাউল্লাহ এ ঘটনায় দেওয়া পুলিশ সুপারের বক্তব্য প্রত্যাহার করে ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান জানান।
তিনি দাবি করেন, “বিষয়টি নিয়ে পুলিশ সুপার যে কথা বলছেন তা মিথ্যা। কোনো আত্মীয়ের কাজে আদালতে আমি আসিনি।”
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানার ওসি মো. মোজাফফর হোসেন জানান, আদালত এলাকায় এমনিতেই পুলিশ থাকে। এখানে বিক্ষোভ কিংবা অন্য কিছু করার সুযোগ নেই। বিক্ষোভকারীদের ভেতরে ঢুকতে দেওয়া হয়নি।
মারামারির ঘটনায় অভিযোগ দিলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান ওসি।
রোববার সন্ধ্যায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আইনজীবী সমিতির একজন নেতার কক্ষে একটি সালিশি সভার মধ্যে জাতীয় নাগরিক কমিটির তিন নেতার ওপর হামলার অভিযোগ ওঠে।
হামলায় জাতীয় নাগরিক কমিটির যুগ্ম মুখ্য সংগঠক ও চট্টগ্রাম বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত আতাউল্লাহ, সংগঠনের জেলা সংগঠক জিহান মাহমুদ (৩০) এবং উপজেলা সংগঠক রাসেল মিয়া (৩০) আহত হন।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আইনজীবীর কক্ষে নাগরিক কমিটির ৩ নেতার ওপর হামলার অভিযোগ