Published : 29 Apr 2025, 02:27 PM
মাগুরায় আট বছরের শিশু ধর্ষণ ও হত্যা মামলায় তৃতীয় দিনের মত সাক্ষ্য গ্রহণ হয়েছে।
মঙ্গলবার সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত শিশুটির বোন, প্রতিবেশীসহ ১০ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক এম জাহিদ হাসানের আদালতে তাদের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয় বলে জানান রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মনিরুল ইসলাম মুকুল।
এর আগে সকালে কড়া নিরাপত্তার মধ্যে আসামি হিটু শেখ, তার দুই ছেলে সজীব শেখ, রাতুল শেখ এবং স্ত্রী রোকেয়া বেগমকে আদালতে আনা হয়।
বুধবার মাগুরা ও ফরিদপুর হাসপাতালের চিকিৎসকদের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হবে। আগামী সপ্তাহের মধ্যেই এ মামলার সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হবে বলে আশা করছেন আইনজীবী মনিরুল ইসলাম মুকুল।
মনিরুল বলেন, “মঙ্গলবারসহ বিগত তিন কার্য দিবস একটানা সাক্ষ্যগ্রহণ চলেছে। এ নিয়ে মোট ১৬ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়েছে। এ মামলায় মোট ৩৭ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হবে। বুধবার মাগুরা ও ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসকরা সাক্ষ্য দেবেন।”
সাক্ষীরা হলেন- ঢাকা দক্ষিণ বিএনপির সদস্য সচিব রবিউল ইসলাম নয়ন, আছিয়ার বোন হামিদা, সাইফুল শেখ, জবেদা, জোহরা, হিটুর প্রতিবেশী শিহাব শেখ, মদিনাতুল গোরস্থান মাদ্রাসার খাদেম জামাল মোল্লা, মাগুরা সদর থানার পরিচ্ছন্ন কর্মী আসাদুজ্জামান নবীন, মাগুরা সদর থানার এ এস আই এমাদুল হক ও রমজান আলী।
মঙ্গলবার আসামি পক্ষের আইনজীবী স্বাধীনভাবে সাক্ষীদের সাক্ষ্যগ্রহণ করেছেন এবং আদালতে আসামিরা নির্দোষ বলে যুক্তি উপস্থাপন করেন বলে মনিরুল জানান।
এদিকে আসামিরা আদালতে ঢোকার সময় নিজেদের নির্দোষ দাবি করে। প্রধান আসামি হিটু শেখ এ ঘটনার জন্য তার ছেলের স্ত্রী ও আছিয়ার বোনকে দায়ি করে তাকে গ্রেপ্তারের দাবি জানান। ঘটনার সময় তিনিসহ তার দুই ছেলে বাড়িতে ছিলেন না। পেশাগত কাজে বাইরে ছিলেন। আছিয়ার বোন এ সময় একাই বাড়িতে ছিলেন। তিনি সাংবাদিকদের বিষয়টি তদন্ত করে দেখার আহ্বান জানান।
শ্রীপুর উপজেলার আট বছরের শিশুটি ১ মার্চ মাগুরা শহরতলীর নিজনান্দুয়ালী গ্রামে বড় বোনের বাড়ি বেড়াতে আসে। সেখানে সে ৬ মার্চ ধর্ষণের শিকার হয়। প্রথমে তাকে মাগুরা ২৫০ শয্যার হাসপাতাল, পরে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল হয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা পাঠানো হয়।
সবশেষ চিকিৎসারত অবস্থায় ১৩ মার্চ ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) শিশুটি মারা যায়।
এ ঘটনায় শিশুটির মা মাগুরা সদর থানায় মেয়ের শ্বশুর হিটু শেখ, জামাই সজীব শেখ, তার ভাই রাতুল শেখ ও তাদের মা রোকেয়া বেগমের নামে মামলা করেন। পুলিশ চার আসামিকে গ্রেপ্তার করে।
১৩ এপ্রিল আলোচিত এই মামলার অভিযোগপত্র আদালতে দাখিল করেন তদন্ত কর্মকর্তা মো. আলাউদ্দিন। অসামিদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ চার আসামির সাতদিনের রিমান্ড আবেদন করেন। বিচারক প্রধান আসামি হিটু শেখকে ৭ দিন ও অপর তিন আসামির ৫ দিনের রিমান্ড প্রদান করেন। হিটু শেখ ধর্ষণের কথা স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দিও দেন।
আরও পড়ুন:
মাগুরার সেই শিশু ধর্ষণ ও হত্যা মামলায় ৩ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ
মাগুরার সেই শিশু ধর্ষণ-হত্যার বিচার শুরু
মাগুরার শিশু ধর্ষণ-হত্যা: ২৩ এপ্রিল অভিযোগ গঠনের শুনানি
মাগুরার সেই শিশু ধর্ষণ: হিটু শেখের ডিএনএ প্রতিবেদন, 'সব পজিটিভ'
মাগুরার সেই শিশুটির পরিবারে নেই ঈদের আনন্দ
মাগুরার সেই শিশুটির বোনকে আর শ্বশুরবাড়ি পাঠাবে না পরিবার
মাগুরায় শিশুটির বাড়িতে জামায়াতের আমির, পাকা বাড়ি করে দেওয়ার ...
মাগুরায় শিশুটির বাড়িতে বিএনপি নেতারা, দিলেন সহযোগিতার আশ্বাস