Published : 29 Mar 2025, 10:14 PM
ঈদের মুখে সড়ক দুর্ঘটনায় একসঙ্গে তিন ছেলেকে হারিয়ে পাগল-প্রায় শিউলি বেগম। স্বামী মো. নাসির খাঁন বাকরুদ্ধ।
দুই বছরের ব্যবধানে চার সন্তানের সবাইকেই হারিয়েছেন পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া উপজেলার বাইশকুরা ইউনিয়নের টিকিকাটা গ্রামের এই দম্পতি।
শনিবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলার রায়হানপুর ইউনিয়নের সোনার বাংলা এলাকায় বাসের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষে মোটরসাইকেল আরোহী নাসিরের তিন ছেলে মারা যায়। তারা হল- মো. নাঈমুজ্জামান শুভ (২২), মো. শান্ত (১৪) ও মো. নাদিম (৮)।
দুই বছরে আগে পানিতে ডুবে মারা যায় নাসির-শিউলি দম্পতির সবার ছোট ছেলে মোহাম্মদ হাসান।
দুপুরের পর একসঙ্গে তিন সন্তানের মরদেহ বাড়িতে পৌঁছে। বাড়ির উঠানে খাটিয়াতে তিনটি মরদেহ পাশাপাশি রাখা হয়। তখন সেখানে এক হৃদয়বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়। পাড়া-প্রতিবেশী আত্মীয়-স্বজনদের অনেকেই এসেছিলেন এই পরিবারকে সান্ত্বনা দিতে। কিন্তু তারা নিজেরাই অঝোরে কাঁদছিলেন।
নাসির ছোটখাট ব্যবসার পাশাপাশি কৃষিকাজও করেন। বড় ছেলে শুভ ঢাকাতেই চাকরি করতেন। পরিবারের সঙ্গে ঈদ করার জন্যই বাড়ি এসেছিলেন। সকালে ঈদের কাপড়চোপড় নিয়ে তিন ভাই মোটরসাইকেলে করে মামাবাড়ি বরগুনার পাথরঘাটায় যাচ্ছিল। পথে বাসচাপায় তিনজনেরই মৃত্যু হয়।
এসব কথা বলেই বিলাপ করছিলেন তাদের মা শিউলি বেগম। বলছিলেন, “আত্মীয় বাড়ি ঈদের জামা পৌঁছে দিতে গিয়ে আর ফিরে আসল না আমার বাবারা। এখন এসেছে সবাই লাশ হয়ে। আমার তো সব শেষ হয়ে গেল।”
বরগুনায় বাস-মোটরসাইকেলের সংঘর্ষে ৩ ভাই নিহত
বাবা নাসির খান জানান, নাঈমুজ্জামান শুভ শুক্রবার ঢাকা থেকে ঈদের ছুটিতে বাড়িতে আসেন। শুভর মামাত ভাই তার বাড়ির জন্য কিছু কেনাকাটা করে দেয়। সেগুলো পৌঁছে দিতে সকালে তিন ছেলে একসঙ্গে মটরসাইকেলে করে যাচ্ছিল।
বুক চাপড়ে তিনি শুধু বলছিলেন, “আমার সব শেষ হয়ে গেল।”
শিউলি বেগমের ভাই বুলু হাওলাদার বলেন, “পরিবারটা নিঃস্ব হয়ে গেছে।”
বরগুনার পাথরঘাটা থানার ওসি মেহেদী হাসান বলেন, “এ ঘটনায় রাজিব পরিবহনের বাসটিকে জব্দ করা হয়েছে। সড়ক পরিবহন আইনে মামলা করা হচ্ছে।”