Published : 27 Sep 2024, 09:25 PM
নওগাঁর পত্নীতলায় জমি নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে বাগানের আট শতাধিক আমগাছ কেটে ফেলার অভিযোগ উঠেছে।
শুক্রবার দুপুরে নওগাঁর ঐতিহ্যবাহী প্যারিমোহন গ্রন্থাগারে ডাকা এক সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ তোলেন দেওয়ান এন্টারপ্রাইজ নামে একটি ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারী মো. আবুল হোসেন।
আবুল হোসেন (৫০) ঢাকার সাভার জালেম্বর মহল্লার নিরাজ উদ্দীন দেওয়ানের ছেলে।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন।
ব্যবসায়ী আবুল হোসেন বলেন, নওগাঁর পত্নীতলার ব্যবসায়ী আনিছুর মোল্লা তার বন্ধু। তার মাধ্যমে প্রায় একযুগ আগে পত্নীতলার ঘোষপাড়া গ্রামের প্রয়াত গোপেন্দ্রনাথ ঘোষের ছেলে গৌতম ঘোষ ও মেয়ে মিতালী রাণী ঘোষের কাছ থেকে ৬০ লাখ টাকায় পাটিচোরা ইউনিয়নের ছালিগ্রাম মৌজায় ৪ দশমিক ৩২ একর জমি কেনেন তিনি। যার হাল দাগ নম্বর ১০১৮, সাবেক দাগ ৫৩ এবং জেএল নম্বর ২২৬।
তিন বলেন, “একই বছর ওই জমিতে এক হাজার ২০০টি বারি-৪ জাতের আমের চারা রোপণ করে ভোগ দখল করে আসছি। আম গাছগুলো বড় হয়ে কয়েক বছর ধরে ফল দেওয়া শুরু করেছে। প্রতি বছর ওই জমি থেকে প্রায় ১০ লাখ টাকার আম বিক্রি করে সাংসারিক খরচ বহনের পাশাপাশি সন্তানদের ভবিষ্যতের জন্য সঞ্চয় করে আসছি।”
তিনি আরো বলেন, “গত ৫ অগাস্ট দেশের রাষ্ট্র ক্ষমতার পট পরিবর্তনের পর গত ১৫ সেপ্টেম্বর পত্নীতলার পূর্ব পাটিচোরা গ্রামের নাঈম হোসেন, তার দুই ভাই লেমন হোসেন ও ছেলিম হোসেনসহ ২০-২৫ জন ধারালো অস্ত্র দিয়ে বাগানে অনধিকার প্রবেশ করে ৮০০টির বেশি আমগাছ কেটে ফেলেন।
এতে তার প্রায় কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি আবুল হোসেনের।
তার অভিযোগ, এ সময় বর্গাদার আব্দুস সামাদ তাদের বাধা দিলে তাকে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি ও ভয়ভীতি দেখান গাছ কর্তনরকারীরা।
লিখিত বক্তব্যে আবুল হোসেন আরও বলেন, “আমি ঢাকার সাভারে বসবাস করায় এবং ব্যবসায়ীক কাজে ব্যস্ত থাকার সুযোগকে কাজে লাগিয়ে তারা আমার কাছ থেকে অনৈতিকভাবে মোটা অংকের অর্থ হাছিল করার পাঁয়তারা করছে।”
গাছ কর্তনকারীদের বিরুদ্ধে পত্নীতলা থানায় একটি অভিযোগ দেওয়া হয়েছে দাবি করে দ্রুত তদন্ত সাপেক্ষে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা চান আবুল হোসেন।
সংবাদ সম্মেলনে তার ছেলে শফিউল্লাহ দেওয়ান ও ভাতিজা শোভন শাহারিয়ারও ছিলেন।
এ ব্যাপারে নাঈম হোসেন হোসেনের সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, “জমিটি ১৯৯১ সালে আমাদের নামে খারিজ ও পত্তন মূলে আমাদের নামে হোল্ডিং আছে। আমরাই ওই জমির মালিক। ওনাদের জমি ও দাগ আলাদা।
নাঈম বলেন, “বিষয়টি নিয়ে যেহেতু বিবাদ চলছে, আমরাও থানায় বসতে চেয়েছিলাম। কিন্তু ওনি না বসে টালবাহানা করেন। আমরা জমির মালিক, তাই আমরা তো দখল নেব এটাই স্বাভাবিক।”
পত্নীতলা থানার ওসি শাহ মো. এনায়েতুর রহমান বরেন, অনেক দিন আগে আবুল হোসেন নামের এক ব্যবসায়ী থানায় অভিযোগ করেছিলেন, আম বাগানের মালিকানা সমস্যা নিয়ে। তবে কয়েক দিন আগে থানায় এসে তিনি জানান, তার বাগানের গাছ কেটে ফেলা হচ্ছে। পরে পুলিশ পাঠিয়ে গাছকাটা বন্ধ করা হয়েছে।
“যতটুকু জেনেছি, তিনি আদালতের শরণাপন্ন হয়েছেন। এখন আদালত থেকে যে নিদের্শনা আসবে সেই মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে,” বলেন ওসি।