Published : 20 Sep 2024, 08:49 PM
নোয়াখালীতে দীর্ঘ এক মাসেরও বেশি সময় ধরে স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যা ও জলাবদ্ধতা তৈরি হয়েছে। এ পরিস্থিতিতে অনেক মানুষ এক মাসেরও বেশি সময় ধরে বাড়িঘর ছেড়ে আশ্রয়কেন্দ্রে উঠেছেন। কর্মহীন হয়ে পড়েছেন আরও অনেকে।
বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আশ্রয় নেওয়া এসব মানুষদের সংশ্লিষ্টরা বাড়িঘরে ফিরে যাওয়ার জন্য বার বার তাগিদ দিলেও তারা বলছেন, বাড়ি ফেরার মত ‘অবস্থা নেই’ তাদের।
বেগমগঞ্জ উপজেলার উত্তর একলাশপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গত এক মাসের বেশি সময় ধরে পক্ষাঘাতগ্রস্ত স্বামীকে নিয়ে আশ্রয় নিয়ে আছেন একলাশপুর ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের ৭০ বছর বয়সী আনোয়ারা বেগম।
আনোয়ারা বলেন, “বাড়িঘর সব বন্যার পানিতে ডুবে গেছে। নিরুপায় হয়ে স্বামীকে নিয়ে এখানে আশ্রয় নিয়েছি। এখন থেকে আমাদের বার বার চলে যেতে বলতেছে; কিন্তু আমরা এখন কোথায় যাব? বাড়িঘরে এখনও পানি।”
শুক্রবার জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো. জাহিদ হাসান খান জানান, নোয়াখালীর ৮ উপজেলা, ৭ পৌরসভা ও ৮৭ ইউনিয়নের পানিবন্দি মানুষের সংখ্যা ১১ লাখ, ৫৫ হাজার ৩০০। ২৫৪টি আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান করছেন ২৫ হাজার ৬২৮ জন। এ পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ১১ জনের।
একলাশপুর ইউনিয়নের ফেরদৌসী বেগম (৩৫) বলছিলেন, তিনি গত এক মাস ৫ দিন ধরে ছেলে-মেয়েদের নিয়ে স্কুলের একটি কক্ষে আছেন। ঘরের চৌকি পর্যন্ত পানিতে ডুবে গেছে। বাধ্য হয়ে তিনি একলাশপুর বিদ্যালয়ে আশ্রয় নিয়েছেন।
তিনি বলেন, “এখানে খেয়ে না খেয়ে পড়ে আছি। পানিতে ঘরের সব নষ্ট হয়ে গেছে। এখান থেকে চলে যেতে বলছে। তারপর কোথায় উঠব জানি না।”
আনোয়ারা ও ফেরদৌসীর মতো আরও ৩০টি পরিবার গত একমাস থেকে বাড়িঘর ছেড়ে উত্তর একলাশপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আশ্রয়ে রয়েছেন।
এছাড়া সদর, বেগমগঞ্জ, সেনবাগ, সোনাইমুড়ী, চাটখিল, কবিরহাট ও কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার ২৫৪টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে গত এক মাসেরও বেশি সময় ধরে বন্যা কবলিত এলাকার ২৫ হাজার ৬২৮ জন মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন।
নোয়াখালীর ডিসি খন্দকার ইসতিয়াক আহমেদ বলেন, “নোয়াখালীতে মূলত জলাবদ্ধতা সমস্যা চলছে। পানি আটকে থাকার কারণে এ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলো কাজ করছে।
“বানভাসি কোন মানুষ যাতে খাদ্যাভাবে কষ্ট না পান, সে বিষয়ে সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।”