Published : 08 Oct 2022, 11:35 PM
কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলায় অপহরণের ৩০ ঘণ্টা পর এক কিশোরকে ছেড়ে দিয়েছে ‘রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীরা’।
টেকনাফের বাহারছড়া পুলিশ তদন্তকেন্দ্রের ইনচার্জ পরিদর্শক নুর মোহাম্মদ বলেন, “অপহরণকারীরা শনিবার বিকাল সাড়ে ৪টায় উপজেলার বাহারছড়া ইউনিয়নের বড়ডেইল পাহাড়ি এলাকায় কিশোরকে ছেড়ে দিয়েছে।”
কিশোর আব্দুর রহমান ওরফে আবছার (১৬) বড়ডেইল এলাকার মোহাম্মদ উল্লাহের ছেলে। শুক্রবার সকালে তাকে পাহাড়ের পানের বরজ থেকে অপহরণ করে ‘রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীরা’।
এ সময় পালিয়ে আসতে গিয়ে গুলিবিদ্ধ হন পানচাষি মোহাম্মদ শরীফ (৩০)। তিনি সম্পর্কে আবছারের মামা। শরীফ এখন কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
পুলিশ জানায়, শুক্রবার সকাল ১০টার দিকে বড়ডেইল পাহাড়ি এলাকায় পানের বরজে কাজ করতে যান আবছার ও শরীফ। এ সময় গহীন পাহাড় থেকে একদল ‘রোহিঙ্গা’ অস্ত্রধারী অতর্কিতে তাদের ওপর হামলে পড়ে।
এক পর্যায়ে ‘রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীরা’ কিশোর আবছারকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে। এ সময় শরীফ দৌঁড়ে পালানোর চেষ্টা করলে তাকে লক্ষ্য করে গুলি ছুড়ে অপহরণকারীরা। এতে তিনি গুলিবিদ্ধ হন। পরে কিশোর আবছারকে অপহরণ করে নিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা।
টেকনাফের বাহারছড়া পুলিশ তদন্তকেন্দ্রের ইনচার্জ পরিদর্শক নুর মোহাম্মদ বলেন, ঘটনার পর থেকে অপহৃত কিশোর আবছারকে উদ্ধার এবং জড়িতদের গ্রেপ্তারে পুলিশ অভিযান অব্যাহত রাখে। একপর্যায়ে পুলিশের সদস্যরা গহীন পাহাড়ে দুর্বৃত্তদের সম্ভাব্য গোপন আস্তানা ঘিরে ফেলে।
“এতে গ্রেপ্তার এড়াতে রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীরা কৌশলের আশ্রয় নেয়। একপর্যায়ে শনিবার বিকালে বড়ডেইল পাহাড়ি এলাকায় অপহৃত কিশোরকে ছেড়ে দেয়। পরে আবছার লোকালয়ে এলে স্থানীয়রা উদ্ধার করে বাড়িতে নিয়ে আসে।”
পরিদর্শক নুর মোহাম্মদ আরও জানান, ঘটনায় জড়িতদের চিহ্নিত ও গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত আছে।
আবছারের নিকটাত্মীয় ও বাহারছড়া ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক সদস্য নুরুল ইসলাম বলেন, “আবছারের পরিবার হতদরিদ্র ও সাধারণ মানুষ। তার পরিবারের কেউ মোবাইল ফোন ব্যবহার করেন না।“
“এ কারণে দুর্বৃত্তরা মুক্তিপণ আদায়ের চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়। তারা আব্দুর রহমানের কাছ থেকে কোনো স্বজনদের ফোন নাম্বার পায়নি। ফলে তারা মুক্তিপণ দাবির সুযোগ পায়নি।“
সাবেক এই ইউপি সদস্য আরও বলেন, “মোবাইল ফোন নম্বরের জন্য দুর্বৃত্তরা আব্দুর রহমানের ওপর শারীরিক নির্যাতন চালিয়েছে। এতে সে আহত হয়েছে। তাকে চিকিৎসার জন্য কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে নেওয়া হচ্ছে।”
এর আগে, ২৯ সেপ্টেম্বর পাঁচ জন স্থানীয় বাংলাদেশিকে অপহরণের সময় তিন জন গুলিবিদ্ধ অবস্থায় পালিয়ে আসলেও দুই জনকে অপহরণ করে ‘রোহিঙ্গা’ অস্ত্রধারীরা। পরে অপহৃত দুই জন ‘মুক্তিপণ দিয়ে’ ছাড়া পান।
আরও পড়ুন: