Published : 25 Feb 2025, 05:16 PM
ঢাকা থেকে রাজশাহীগামী ইউনিক রোড রয়েলসের বাসে ডাকাতি ও নারী যাত্রীদের ‘যৌন নিপীড়নের’ মামলায় দুই সহোদরকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। যাদের একজনকে মূল পরিকল্পনাকারী বলছে পুলিশ।
এ ছাড়া তাদের কাছ থেকে লুটের টাকা, মোবাইল ফোন, গহনা, জাতীয় পরিচয়পত্র ও এটিএম কার্ড উদ্ধার করা হয়েছে।
মঙ্গলবার দুপুরে নিজ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনের এসব তথ্য জানিয়েছেন টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার মো. মিজানুর রহমান। তবে চলন্ত বাসে ধর্ষণের কোনও ঘটনা ঘটেনি বলে দাবি করেছেন তিনি।
সোমবার রাতে অভিযান চালিয়ে নেত্রকোণার পূর্বধলা উপজেলার সাধুপাড়া গ্রাম থেকে একজন এবং ঢাকার আশুলিয়া থানার ধানসোনা এলাকা থেকে অপরজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তাররা হলেন- আলমগীর হোসেন এবং রাজীব হোসেন (২১)। তারা মানিকগঞ্জের দৌলতপুর উপজেলার আমতলী গ্রামের খোরশেদ শেখের ছেলে।
সংবাদ সম্মেলনে মিজানুর রহমান বলেন, “বিশেষ ওই নারীর সঙ্গে কথা বলেছে পুলিশের একাধিক টিম। প্রথমে ওই নারী বাসে ধর্ষণের শিকারের কথা বললেও পরে অস্বীকার করেছেন। তবে ধর্ষণের বিষয়ে কেউ অভিযোগ বা তথ্য দিলে তা তদন্ত করে দেখা হবে।”
পুলিশ সুপার বলেন, বাসে ডাকাতির ঘটনায় আগে গ্রেপ্তারদের কাছে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে আলমগীর ও তার ভাই রাজীবকে গ্রেপ্তার হয়েছে।
এ সময় রাজীবের হেফাজতে থাকা ১০টি মোবাইল, যাত্রীদের পাঁচ জোড়া চুরি, তিনটি ব্যাগ, তিনটি জাতীয় পরিচয়পত্র, একটি এটিএম কার্ড, বাসের টিকেট এবং ডাকাতির ঘটনায় ব্যবহৃত দুটি ছুরি উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
এর আগে শনিবার সকালে মো. শহিদুল ইসলাম মুহিত, মো. সবুজ এবং মো. শরিফুজ্জামান শরীফকে গ্রেপ্তার করা হয়।
পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান বলেন, বাসে ডাকাতির মূল পরিকল্পনাকারী আলমগীর হোসেন এবং তার প্রধান সহযোগী শহিদুল ইসলাম।
গত ১৭ ফেব্রুয়ারি রাতে রাজশাহীগামী ‘ইউনিক রয়েল আমরি ট্রাভেলস’ বাসে ডাকাতি ও নারী যাত্রীদের ওপর যৌন নিপীড়নের ঘটনা ঘটে।
বাস যাত্রীদের ভাষ্য, রাত ১১টায় ঢাকার গাবতলী থেকে বাসটি ছাড়ে। রাত সাড়ে ১২টার দিকে বাসটিতে ডাকাতরা অস্ত্রের মুখে যাত্রীদের জিম্মি করে। প্রায় সাড়ে ৩ ঘণ্টা বাসটি বিভিন্ন স্থানে ঘুরিয়ে ডাকাতি ও দুই নারীর শ্লীলতাহানির করে ডাকাতদল।
পরদিন বেলা ১১টার পর বাসটি নাটোরের বড়াইগ্রাম থানায় নিয়ে পুলিশকে বিষয়টি অবহিত করেন যাত্রীরা। এ সময় ডাকাতিতে জড়িত সন্দেহে বাসচালক বাবলু আলী, সুপারভাইজার সুমন ইসলাম ও চালকের সহকারী মাহবুব আলমকে আটক করে ৫৪ ধারায় নাটোর আদালতে পাঠায় পুলিশ। পরে তারা আদালত থেকে জামিনে মুক্তি পান।
ঘটনার তিন দিন পর ২১ ফেব্রুয়ারি টাঙ্গাইলের মির্জাপুর থানায় ওমর আলী নামের এক যাত্রী মামলা করেন। এরপর তদন্তে নামে টাঙ্গাইল জেলা গোয়েন্দা পুলিশ।
মামলার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে শহিদুল ইসলাম মুহিত, সবুজ এবং শরীফুজ্জামান শরীফকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে তিনটি মোবাইল ফোন, একটি ছুরি ও ২৯ হাজার ৩৭০ টাকা উদ্ধার করা হয়।
পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান বলেন, “বিষয়টি নিয়ে আরও তদন্ত ও অভিযান চলমান রয়েছে। পুরো বিষয়টি আমাদের নখদর্পণে চলে এসেছে।”
এ ঘটনায় দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে মির্জাপুর থানার এএসআই আতিকুজ্জামানকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
বাসে ডাকাতি-নিপীড়ন: লুটের মোবাইল দিয়ে গাঁজা কিনেই ধরা
চলন্ত বাসে ডাকাতি-'যৌন নিপীড়ন': গ্রেপ্তার ২ যুবকের 'স্বীকারোক্তি'
বাসে ডাকাতি-নিপীড়ন: লুটের মোবাইল দিয়ে গাঁজা কিনেই ধরা
রাজশাহীগামী বাসে ডাকাতি-যৌন নিপীড়ন: ৩ দিন পর থানায় মামলা
রাজশাহীগামী বাসে ডাকাতি-যৌন নিপীড়ন: সাভারে গ্রেপ্তার ৩