Published : 14 Apr 2016, 01:04 PM
স্নান উৎসব কমিটির আহ্বায়ক দিনেশ চন্দ্র দাশ এ তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, অষ্টমী স্নানের লগ্ন বৃহস্পতিবার সকাল ৭টা ৩০ মিনিট থেকে হলেও পুণ্যার্থীরা স্নান শুরু করেন ভোর ৫টা থেকে। দেশ-বিদেশের প্রায় দুই লাখ পুণ্যার্থীর অংশগ্রহণে উৎসব শেষ হয় সকাল সাড়ে ৯টায়।
এছাড়াও উৎসব উপলক্ষ্যে বৃহস্পতিবার বিকাল থেকে উপজেলার জোড়গাছ বাজার ও শুক্রবার বালাবাড়ীহাটে মেলা অনুষ্ঠিত হবে বলে জানান দিনেশ চন্দ্র ।
সরেজমিনে দেখা যায়, বুধবার সকাল থেকেই দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে হাজার হাজার পুণ্যার্থীরা ভিড় জমান ব্রহ্মপুত্রের পাড়ে। ৩০-৪৫টির মতো ধর্মীয় ও সামাজিক সংগঠন পুণ্যার্থীদের খাবার ও চিকিৎসা সেবা দিয়েছে।
নিরাপত্তার জন্য পুলিশ, র্যাব, আনসার ও ভিডিপির সদস্য মোতায়েন ও নদের অদূরে ৪০/৪৫টি টিউবওয়েল স্থাপন করেছে প্রশাসন।
হিন্দু পুরাণ মতে, জমদগ্নি নামের এক মুনি পিতৃভক্তি পরীক্ষা করার জন্য তার চার ছেলেকে আদেশ করেন তাদের মা রেনুকাকে হত্যা করার জন্য।
অন্যরা এ আদেশ প্রত্যাখান করলেও ছোট ছেলে পরশুরাম কুঠার দিয়ে মাকে দ্বিখণ্ডিত করেন। মাতৃহত্যার শাস্তি হিসেবে কুঠারটি তার হাতেই লেগে থাকে। প্রাণপণ চেষ্টা করেও হাত থেকে ছাড়ানো যায়নি কুঠারটি।
তখন বাবা জমদগ্নি পরশুরামকে তীর্থ ভ্রমণের আদেশ দিয়ে বলেন, যে তীর্থে হাতের কুঠার খসে পড়বে, সে স্থানই হবে পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ তীর্থস্থান।
পুরানে আরও পাওয়া যায়, এরপর পরশুরাম তার হাতের কুঠারকে লাঙ্গল বানিয়ে পর্বতের মধ্য দিয়ে চালাতে থাকেন। সেই লাঙ্গলের ফলায় তৈরি পথ ধরে সৃষ্টি হয় ব্রহ্মপুত্র নদের। ওই পথ ধরে চলতে থাকেন পরশুরাম নিজেও।
এভাবে অনেকদিন পর নারায়ণগঞ্জের বর্তমান স্নানঘাটে এসে লাঙ্গলটি আটকে যায়। হিমালয় থেকে বয়ে আসা ব্রহ্মপুত্রের পানিতে স্নান করে পাপমুক্তি ঘটে পরশুরামের। খসে পড়ে হাতের কুঠার।
পরশুরামের লাঙ্গলের ফলা থেমে যাওয়া বা বন্ধ হওয়া থেকেই এ স্থানের নাম হয় ‘লাঙ্গলবন্ধ’। কালক্রমে তা স্থানীয়দের উচ্চারণ বিবর্তনে হয়ে ওঠে লাঙ্গলবন্দ।
দীর্ঘদিন থেকে নারায়ণগঞ্জ ছাড়াও জামালপুর, কিশোরগঞ্জ ও শেরপুরের বিভিন্ন নদীতে অষ্টমী স্নানোৎসব পালিত হয়ে আসছে।