Published : 21 Mar 2025, 03:13 PM
সিলেট নগরীতে ৮৭ কোটি টাকার কাজ হাতিয়ে নেওয়ার জন্য এক ঠিকাদারকে জিম্মি করে মারধর করার অভিযোগে আওয়ামী লীগের এক নেতাসহ পাঁচ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার দুপুরের দিকে নগরীর সুবিদবাজার এলাকার বাসিন্দা মো. শফিকুল ইসলাম বাদী হয়ে কোতোয়ালি মডেল থানায় মামলাটি করেন বলে জানিয়েছেন থানার ওসি মো. জিয়াউল হক।
মামলার আসামিরা হলেন- সুনামগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার বালিজুরী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আজাদ হোসেন, একই থানার আনোয়ারপুর গ্রামের জেনসন দাস (২৬), সিলেট নগরীর আম্বরখানা এলাকার ক্রিসটাল রোজ হোটেলের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা নিশু দাস (৫০), সুনামগঞ্জের জামালগঞ্জ উপজেলার পারভেজ (৫৫) ও সিলেট নগরীর মুন্সিপাড়া এলাকার জয়দেব পার্থ (৫৫)।
এছাড়া অজ্ঞাতনামা আরও চার থেকে পাঁচজনকে আসামি করা হয়েছে।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, গত বছরের এপ্রিলে সুনামগঞ্জ-বিশ্বম্ভরপুর সড়কের উন্নয়নকাজে ৮৭ কোটি ৬০ লাখ টাকার কার্যাদেশ পায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান বদরুল ইকবাল লিমিটেড। সেই কাজ সম্পাদনের দায়িত্ব দেওয়া হয় শফিকুল ইসলামকে।
সে সময় আওয়ামী লীগ নেতা আজাদ হোসাইন দলীয় প্রভাব খাটিয়ে কাজটিতে তাকে অংশীদার করতে চাপ দেন। বাধ্য হয়ে শফিক তাকে অংশীদার করেন।
এর জের ধরে বুধবার দুপুরের দিকে আজাদ মোবাইলে কল করে শফিকুলকে সিলেট নগরীর আম্বরখানা ইলেকট্রিক সাপ্লাই এলাকার ক্রিস্টাল রোজ হোটেলে আসতে বলেন।
সেখানে গেলে আজাদ হোসেন অংশীদারত্ব ছেড়ে দেওয়ার জন্য শফিককে স্ট্যাম্প পেপারে স্বাক্ষর করার জন্য চাপ দেন। এতে শফিক রাজি না হলে তাকে মারধর ও অপহরণের চেষ্টা করা হয়।
এ সময় শফিকুলের চিৎকারে আশপাশের মানুষ ছুটে এসে তাকে উদ্ধার করে। তখন বিবাদীরা শফিকুলকে প্রাণে মারার হুমকি দিয়ে পালিয়ে যায় বলে উল্লেখ করা হয় এজাহারে।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে মামলার প্রধান আসামি আজাদ হোসেনের মোবাইলে যোগাযোগ করলে সেটি বন্ধ পাওয়া যায়।
তবে মামলায় দুই নম্বর আসামি জেনসন দাস বলেন, “সড়কের কাজটি মূলত পেয়েছিলেন মো. বদরুল ইকবাল লিমিটেড। এই প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. বদরুল ইকবালের কাছ থেকে কাজটি আনেন আজাদ হোসেন। কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে, ওই কাজ মো. শফিকুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তি পেয়েছেন বলে মামলায় দাবি করছেন। উনার দাবিটি সম্পূর্ণ ভুয়া।”
মামলার বাদী শফিকুল ইসলাম বলেন, “সুনামগঞ্জ থেকে বিশ্বম্ভরপুর সড়কের রাস্তা, ব্রিজ ও কালভার্ট নির্মাণে প্রায় ৮৭ কোটি টাকার কাজটি আমি মো. বদরুল ইকবালের কাছ থেকে পেয়েছি। বর্তমানে বদরুল ইকবাল সাহেব দেশের বাহিরে রয়েছেন। ওই কাজের অংশীদার হওয়ার জন্যই আজাদ এমনটি করেছেন।”