Published : 13 Feb 2023, 07:23 PM
ফরিদপুরে পুলিশের এক এএসআইয়ের বিরুদ্ধে ধর্ষণের মামলা করেছেন এক নারী, যাকে স্ত্রী বলে দাবি করছেন মামলার আসামি।
সোমবার জেলার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন বিশেষ আদালতের বিচারক মো. হাফিজুর রহমান এই নারীর অভিযোগ মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করতে ভাঙ্গা থানাকে নির্দেশ দিয়েছেন।
পুলিশ জানিয়েছে, আসামি মো. সজল মাহমুদ (৪০) সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই); ফরিদপুরের ভাঙ্গা থানায় কর্মরত থাকা অবস্থায় ১০ দিন আগে তাকে ফরিদপুর পুলিশ লাইনসে বদলি করা হয়েছে।
বাদীর আইনজীবী মানিক মজুমদার জানান, ভাঙ্গা উপজেলা সদরের এই নারী (৩৩) নারী ও শিশু নির্যাতন দমন বিশেষ আদালতে অভিযোগ দিয়েছেন। আদালত বাদীর অভিযোগ আমলে নিয়ে মামলা হিসেবে গ্রহণের জন্য ভাঙ্গা থানার ওসিকে নির্দেশ দিয়েছেন।
মামলার নথি থেকে জানা যায়, বাদী অবিবাহিত। তারা দুই বোন ও এক ভাই। মা ও বাবা মারা গেছেন। ২০০৬ সালে তারা দুই বোন জীবিকার জন্য সৌদি আরব যান। ওই সময় তার ছোট ভাই কিডনি রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। পরে তিনি দেশে এসে স্থায়ীভাবে বাড়িতে বসবাস করে আসছিলেন।
অভিযোগে বলা হয়, গত ২০ অক্টোবর তাদের বাড়িতে চুরি হলে বাদী থানায় জানান। ২৪ অক্টোবর রাতে এএসআই মো. সজল তাদের বাড়ি ঢুকে বিভিন্ন কথাবার্তা বলার এক পর্যায়ে তার সঙ্গে জোর করে শারীরিক সম্পর্ক করেন। এ ঘটনা কাউকে বললে তাকে খুন ও গুম করার হুমকি দেন।
মেয়টির অভিযোগ, পরবর্তীতে তাকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে বেশ কয়েকবার শারীরিক সম্পর্ক করেন; এক পর্যায়ে তিনি গর্ভবতী হয়ে পড়েন। ৩০ জানুয়ারি তাকে ভাঙ্গা বাজারে নিয়ে একটি মেডিকেল সেন্টারে রেখে পালিয়ে যান।
অভিযোগে আরও বলা হয়, গত ৩১ জানুয়ারি বাদী ভাঙ্গা থানায় গিয়ে ওসিকে সব খুলে বলেন। ওসি মোবাইল ফোনে সজলকে ডেকে আনেন। তখন সজল তাকে পুলিশ কোয়ার্টারে নিয়ে কিছু কাগজপত্র ও সাদা কাগজে স্বাক্ষর করতে বলেন।
“স্বাক্ষর করার পর সজল বলে – তুমি আমাকে বিয়ে করেছে এবং তালাক দিয়েছ।”
মামলায় অভিযোগ করা হয়, গত রোববার [১২ ফেব্রুয়ারি] ফরিদপুর জেনারেল হাসপাতালে আলট্রাসনোগ্রাম করে জানতে পারেন তিনি তিন মাসের অন্তঃসত্ত্বা। ওইদনই সন্ধ্যায় ভাঙ্গা মামলা করতে গেলে পুলিশ মামলাটি গ্রহণ না করে আদালতে করার পরামর্শ দেয়।
অভিযোগ প্রসঙ্গে এএসআই সজল মাহমুদ বলেন, ওই নারীর সঙ্গে তার বিয়ে হয়েছে; তার কাছে কাবিননামাও আছে।
তার আগের স্ত্রী আছে এবং বড় স্ত্রীর সম্মতিতে তিনি দ্বিতীয় বিয়ে করেছেন বলে জানিয়ে বলেন, ওই নারীকে তিনি তালাক দেননি। তিনি এখন তার স্ত্রী।
ফরিদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ভাঙ্গা সার্কেল) মো. হেললাউদ্দিন ভুইয়া বলেন বলেন, প্রশাসনিক কারণে এএসআই সজলকে ১০ দিন আগে ফরিদপুর পুলিশ লাইনসে বদলি করা হয়েছে।
আদালতের নির্দেশনা তারা এখনও পাননি; তবে এই জাতীয় একটি মামলা হয়েছে বলে শুনেছেন।
এ মামলাটি ব্লাস্ট পরিচালনা করবে বলে ফরিদপুর বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড ট্রাস্টের [ব্লাস্ট] সমন্বয়কারী শিপ্রা গোস্বামী জানিয়েছেন।