Published : 11 Oct 2022, 08:07 PM
সপ্তাহখানেক বন্ধ থাকার পর আবারও মিয়ানমারের অভ্যন্তরে প্রচণ্ড গোলাগুলি ও মর্টার শেলের বিকট শব্দের কারণে কেঁপে উঠছে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার তুমব্রু সীমান্ত; এতে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন এলাকাবাসী।
ঘুমধুম ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য দিল মোহাম্মদ ভুট্টো বলেন, “সোমবার রাত সাড়ে ৩টা থেকে ভারি গোলাগুলি শুরু হয়। থেমে থেমে এই প্রচণ্ড গোলাগুলির শব্দ সকাল ৯টা পর্যন্ত চলে।
“প্রচণ্ড শব্দে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা ঘুমধুম ইউনিয়নের তুমব্রু, বাইশফাঁড়ি, রেজু ও বড়ইতলী এলাকায় বজ্রপাতের মতো বিকট গোলার শব্দে গভীর রাতে অনেকেরই ঘুম ভেঙে যায়।”
তবে টহলে থাকা বিজিবি সদস্যরা তুমব্রু সীমান্তে সর্তক অবস্থানে রয়েছে বলে জানান এই ইউপি সদস্য।
মিয়ানমার বিষয়ক সংবাদ মাধ্যম জানাচ্ছে, বেশ কিছুদিন ধরেই রাখাইনদের সংগঠন আরাকান আর্মির অবস্থান লক্ষ্য করে মিয়ানমার সেনাবাহিনী বোমা বর্ষণ করছে। সেনাবাহিনী ও বিদ্রোহীদের মধ্যে প্রচণ্ড গোলাগুলি হচ্ছে। যার কারণে ঘুমধুম সীমান্ত এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে।
এরই মধ্যে সেখানে স্থলমাইন বিস্ফোরণে একজনের প্রাণ গিয়েছে, অঙ্গহানি ঘটেছে দুজনের। গোলা বিস্ফোরণে প্রাণ হারিয়েছেন সীমান্তে শূন্যরেখায় অবস্থান নেওয়া এক রোহিঙ্গা যুবক।
এ সব ঘটনায় দেশটির রাষ্ট্রদূতকে বেশ কয়েকবার ডেকে কড়া প্রতিবাদ জানায় ঢাকা।
মাঝখানে এক সপ্তাহের মতো সীমান্ত পরিস্থিতি প্রায় শান্ত ছিল। ওপারে কোনো গোলাগুলি বা যুদ্ধবিমান উড়তে দেখেননি এপারের বাসিন্দারা।
মঙ্গলবার বিকালে ইউপি সদস্য দিল মোহাম্মদ ভুট্টো বলেন, তুমব্রু সীমান্তের পূর্বে রয়েছে মিয়ানমারের তুমব্রু মেদাই, ঢেঁকিবুনিয়া এবং টেকনাফের হোয়াইক্যং ইউনিয়নের পূর্বে রয়েছে মিয়ানমারের তোতারদিয়া, নাইসাদং, বালুখালী, মলইরজাগা, কুয়ারবিল, কুয়ানচিবং, নাকপুরা, কুমীরখালী, শীলখালী ও বলিবাজার এলাকা।
“তার মধ্যে মিয়ানমার সেনা বাহিনীর বড় ঘাঁটি আছে তোতারদিয়া, কুমিরখালী ও নাইসাদং ও বলিবাজার এলাকায়। এসব এলাকা থেকে থেমে থেমে গুলি ও মর্টারের গোলার শব্দে নাইক্ষ্যংছড়ির তুমব্রু, বাইশফাঁড়ি, গর্জনবুনিয়া, রেজু, বড়ইতলী ও চাকমাপাড়া এলাকা বারবার কেঁপে উঠে।”
মিয়ানমারের সেনাবাহিনী ও আরাকান আর্মির মধ্যে চলমান সংঘর্ষের মধ্যে এটি ভয়াবহ ঘটনা বলে স্থানীয় এই জনপ্রতিনিধির ধারণা।
স্থানীয় কয়েকজন জনপ্রতিনিধির সঙ্গে কথা বললে তারা জানান, সোমবার মিয়ানমারের নাইসাদং ও কুমিরখালী এলাকায় মিয়ানমারের সেনাবাহিনী ও বিদ্রোহীদের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হয়ে থাকতে পারে। এখান থেকে মিয়ানমারের কুমিরখালী বিজিপির ঘাঁটিতে আগুনের কুণ্ডলি দেখতে পেয়েছেন কেউ কেউ। তবে হতাহতের কোনো খবর পাওয়া যায়নি।
ঘুমধুম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আজিজ জানান, গত ২৮ আগস্ট থেকে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে মর্টার শেল, গোলাগুলির শব্দ আর সীমান্ত ঘেঁষে যুদ্ধ বিমানের আনাগোনা দেখা গেলে সীমান্তবাসী আতঙ্কিত হয়ে পড়ে। মিয়ানমার থেকে ছোড়া মর্টার শেল বাংলাদেশের ভূখণ্ডে এসে বিস্ফোরিত হয়ে হতাহতের ঘটনা ঘটলে সরকারের প্রতি কড়া প্রতিবাদের মুখে তা কিছু দিন বন্ধ ছিল।
এ বিষয়ে জানতে বিজিবি কক্সবাজার ৩৪ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক কর্নেল মেহেদী হোসাইনকে একাধিকবার মোবাইলে কল করা হলেও সংযোগ পাওয়া যায়নি।
আরও পড়ুন: