Published : 22 Dec 2022, 11:34 PM
পাবনার সাঁথিয়ায় ‘শ্লীলতাহানিতে ব্যর্থ হয়ে’ এক নারীকে অ্যাসিডে ঝলসে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে।
বুধবার রাতে উপজেলার করমজা ইউনিয়নের দত্তপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে বলে ওই নারীর ছেলের করা মামলায় অভিযোগ করা হয়।
মামলার একমাত্র আসামি মো. ইউসুফকে (৫৫) পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। ইউসুফ করমজা ইউনিয়নের সমাসনারী পশ্চিম পাড়া গ্রামের আবু বক্কারের ছেলে।
অ্যাসিডদগ্ধ ওই নারীকে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ওই নারীর ইটের আঘাতে আহত ইউসুফকেও পুলিশ পাহারায় হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
সাঁথিয়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কমল কুমার দেবনাথ জানান, এ ঘটনায় ওই নারীর ছেলে বাদী হয়ে বৃহস্পতিবার দুপুরে অ্যাসিড অপরাধ দমন আইনের ৫ ক ও খ ধারায় থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন।
মামলার নথি থেকে জানা যায়, বড়গ্রাম দত্তপাড়া গ্রামের তালাকপ্রাপ্ত এক নারী পার্শ্ববর্তী সমাসনারী গ্রামের প্রয়াত বক্কারের ছেলে ইউসুফের কাছ থেকে কিছু জমি রাখেন বছর ভিত্তিক চুক্তিতে। এই সুবাদে ইউসুফ এই নারীর বাড়িতে যাতায়াত করতেন।
ইউসুফ বিভিন্ন সময় তাকে কু-প্রস্তাব দিতেন বলে মামলায় অভিযোগ করা হয়।
অভিযোগে বলা হয়, বুধবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে এই নারীর বাড়ি গিয়ে ইউসুফ তাকে কু-প্রস্তাব দেন। তাতে রাজি না হলে তাকে বিয়ে করার কথা বলে শ্লীলতাহানির চেষ্টা করেন।
মামলায় অভিযোগ করা হয়, এ সময় বাধা দিলে পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী হাতে রাখা বোতল থেকে অ্যাসিড তার মুখে ছুড়ে মারেন ইউসুফ। এতে ওই নারীর মুখমণ্ডলসহ শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ ঝলসে যায়।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সাঁথিয়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) কমল কুমার দেবনাথ জানান, ওই সময় ওই নারী নিজেকে রক্ষা করতে উঠানে থাকা একটি আধভাঙা ইট দিয়ে ইউসুফের মাথায় আঘাত করলে তিনিও আহত হন।
খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে ইউসুফকে আটক করে সাঁথিয়া হাসপাতালে ভর্তি করেছে বলে জানান কমল।
অ্যাসিড অপরাধ দমন আইন ২০০২ এর ৫ ধারায় বলা হয়েছে:
৫৷ যদি কোনো ব্যক্তি কোনো এসিড দ্বারা অন্য কোনো ব্যক্তিকে এমনভাবে আহত করেন যাহার ফলে তাহার-
>>> (ক) দৃষ্টিশক্তি বা শ্রবণশক্তি সম্পূর্ণ বা আংশিকভাবে নষ্ট হয় বা মুখমণ্ডল, স্তন বা যৌনাংগ বিকৃত বা নষ্ট হয় তাহা হইলে উক্ত ব্যক্তি মৃত্যুদণ্ডে বা যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডনীয় হইবেন এবং ইহার অতিরিক্ত অনূর্ধ্ব এক লক্ষ টাকার অর্থদণ্ডেও দণ্ডনীয় হইবেন;
>>> (খ) শরীরের অন্য কোনো অংগ, গ্রন্থি বা অংশ বিকৃত বা নষ্ট হয় বা শরীরের কোনো স্থানে আঘাতপ্রাপ্ত হন তাহা হইলে উক্ত ব্যক্তি অনধিক চৌদ্দ বত্সর কিন্তু অন্যুন সাত বত্সরের সশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডনীয় হইবেন এবং ইহার অতিরিক্ত অনূর্ধ্ব পঞ্চাশ হাজার টাকার অর্থদণ্ডেও দণ্ডনীয় হইবেন৷